প্রিন্ট এর তারিখঃ সেপ্টেম্বর ২৮, ২০২৫, ৫:৩৩ এ.এম || প্রকাশের তারিখঃ সেপ্টেম্বর ২৭, ২০২৫, ১২:২৩ পি.এম
ফেরিতে জুয়া খেলার নামে যাত্রীদের কাছ থেকে টাকা হাতিয়ে নিচ্ছে সংঘবদ্ধ জুয়ারি চক্র

এক সময় দক্ষিণ পশ্চিম বাংলার প্রবেশ দ্বার খ্যত দোলতদিয়া পাটুরিয়া নৌরুট। দেশের এই গুরুত্বপূর্ণ দৌলতদিয়া-পাটুরিয়া নৌরুটের ফেরি পারাপার, ফেরিগুলোতে তিন তাস নামক জুয়া খেলার নামে যাত্রীদের লক্ষ লক্ষ টাকা হাতিয়ে নেয়ার অভিযোগ পাওয়া গেছে।
দৌলতদিয়া-পাটুরিয়া নৌরুটের উভয় পাড়ে নৌ-পুলিশ থাকলেও জুয়ারিদের প্রতিরোধে তেমন কার্যকর পদক্ষেপ নেই বলে স্হানীয়দের অভিযোগ। ফেরি কতৃপক্ষও এ বিষয়ে উদাসীন।
প্রত্যক্ষদর্শী ঢাকা হতে কুষ্টিয়াগামী এক পরিবহনের যাত্রী জানান, তারা শুক্রবার রাত সারে ৯ টার দিকে বীরশ্রেষ্ঠ জাহাঙ্গীর নামের ফেরিযোগে পাটুরিয়া ঘাট হতে দৌলতদিয়া ঘাটের উদ্দেশ্যে যাচ্ছিলেন। কিছু দুর যাওয়ার পর দেখলাম একদল লোক ট্রলারযোগে এসে ফেরিতে উঠে পড়ল। এরপর এক কোনায় আলো জ্বালিয়ে নিজেরাই জুয়া খেলা শুরু করল। তাদের দেখে উৎসুক যাত্রীরা এগিয়ে গেলে তাদেরকে উদ্বুদ্ধ করে খেলায় অংশ নেয়ায়। কিন্তু তাদের সাথে খেলে কেউ কোন টাকা জিততে পারে নাই। মাঝ বয়সী এক লোককে দেখলাম অনেকটা জোর করে বসিয়ে তার কাছ থেকে এক হাজার টাকা হাতিয়ে নিল। এভাবে মাত্র ৩০/৩৫ মিনিট খেলে অন্তত ১০-১২ জনের কাছ থেকে ২০ হাজার টাকার মতো হাতিয়ে নিল। এরপর ফেরি দৌলতদিয়া ঘাটের কাছাকাছি আসলে তারা ফেরিতে বেঁধে রাখা তাদের ট্রলারে উঠে চলে যায়। আমাদের কাছে কিংবা ফেরিতে কোন হটলাইন নাম্বার না থাকায় বিষয়টি পুলিশ বা অন্য কোন কতৃপক্ষকে জানাতে পারিনি।
এ রুটে চলাচলকারী কয়েকজন যাত্রী জানান, এ রুটে চলাচলকারী প্রতিটি ফেরিতে এভাবে প্রতিনিয়ত জুয়া খেলা চলে। প্রতি রাতে জুয়ারিরা সাধারণ যাত্রীদের কাছ থেকে লাখ লাখ টাকা হাতিয়ে নেয়। পরে জুয়ার টাকা বিভিন্ন পর্যায়ে ভাগ হয় বলে শোনা যায়। উভয় পাড়ে নৌ-পুলিশ থাকলেও তারা কার্যকর ভুমিকা রাখে না। ফেরি কতৃপক্ষকেও জুয়ারীদের বিরুদ্ধে তেমন প্রতিরোধ মূলক ব্যবস্থা নেয় না। জুয়ারিরা সশস্ত্র অবস্থায় থাকে। কোন বেগতিক অবস্থা দেখতে তারা অস্ত্র চালাতে পিছপা হয়না। ইতোপূর্বে তাদের হামলায় অনেক যাত্রী আহত হওয়ার ঘটনা রয়েছে এখানে।
ফেরি কতৃপক্ষরা সাংবাদিকদের বলেন,
ফেরি বীরশ্রেষ্ঠ জাহাঙ্গীর এর মাস্টার সিরাজুল ইসলাম জানান, ইদানীং আবারো জুয়ারিদের উপদ্রব সৃষ্টি হয়েছে। আমরা ফেরির তিনতলা হতে ফেরি পরিচালনার কাজে ব্যস্ত থাকি। নিচে কি হচ্ছে তা দায়িত্বশীররা কেউ না জানালে আমরা জানতে পারি না। শুক্রবার রাতের ঘটনা তিনি জানেন না বলে জানান।
বিআইডব্লিউটিসি'র সহকারী মহা- ব্যবস্হপক (বানিজ্য) মোহাম্মদ সালাউদ্দিন বলেন, ফেরিতে জুয়ারিদের উপদ্রব একটা মারাত্মক সমস্যা। জুয়ারিদের বিষয়ে কোন তথ্য পেলে আমি সঙ্গে সঙ্গে নৌ-পুলিশকে অবহিত করি। কিন্তু সেই তথ্যটাই ঠিকমতো কেউ জানায় না বলেন।
বিআইডব্লিউটিসি'র নিরাপত্তা কর্মকর্তা (আরিচা)তোফাজ্জল হোসেন জানান, ফেরিতে নিরাপত্তার জন্য উভয় পাড়ের জেলা পুলিশ ও নৌ-পুলিশকে পত্র দিয়ে সহায়তা চাওয়া হয়েছে। তবে তাৎক্ষণিক ব্যবস্থা গ্রহণে তাদের ভুমিকা সম্পর্কে তিনি কোন সদুত্তর দিতে পারেন নি।দৌলতদিয়া নৌ-পুলিশ ফাঁড়ির ইনচার্জ ত্রিনাথ সাহা জানান, জুয়ারিদের প্রতিহত করতে আমরা নদীতে নিয়মিত নৌ-টহল দিয়ে থাকি। তবে যখন জুয়া খেলা হয় তখন যদি সুনির্দিষ্ট তথ্য দিয়ে আমাদেরকে কেউ সহায়তা করে তাহলে তাদের ব্যবস্থা গ্রহণ করতে সুবিধা হয়।কিন্তু এ ধরনের তথ্য সহায়তা সহসা কেউ করতে চায় না।
Editor and Publisher : Ariful Islam
Address: Nikunja-2, Road No. 1/A Cemetery Road, Dhaka
Call: 8809639113691
E-mail: Ajkerkhobur@gmail.com
@2025 | Ajker-Khobor.com