প্রিন্ট এর তারিখঃ মে ১২, ২০২৫, ৯:৩৮ পি.এম || প্রকাশের তারিখঃ মে ১২, ২০২৫, ৫:৩৪ এ.এম
মথুরাপুর দেউল ইতিহাসের ছায়ায় প্রাচীন ঐতিহ্যের নীরব সাক্ষী
মথুরাপুর দেউল বাংলাদেশের ফরিদপুর জেলার মধুখালী উপজেলার গাজনা ইউনিয়নের মথুরাপুর গ্রামে অবস্থিত একটি ঐতিহাসিক ও প্রত্নতাত্ত্বিক নিদর্শন। ষোড়শ বা সপ্তদশ শতাব্দীতে নির্মিত এই দেউলটি বারো কোণবিশিষ্ট এবং প্রায় ২৪.৩৮৪মিটার (প্রায় ৮০ ফুট) উচ্চতা বিশিষ্ট। এটি বাংলাদেশের একমাত্র রেখা প্রকৃতির দেউল হিসেবে পরিচিত।
স্থাপত্য ও নকশা
মথুরাপুর দেউলটি বারো কোণবিশিষ্ট একটি মঠ, যার গঠন উপাদান চুন-সুরকির মিশ্রণ। দেউলের দেয়ালে টেরাকোটার জ্যামিতিক ও শৈল্পিক নকশা রয়েছে, যেখানে রামায়ণ, কৃষ্ণলীলা, গায়ক, নৃত্যশিল্পী, হনুমান এবং যুদ্ধের দৃশ্যের চিত্র খচিত রয়েছে। দেউলের বাইরের দেয়ালটি লম্বালম্বিভাবে সজ্জিত, যা আলোছায়ার সংমিশ্রণে এক দৃষ্টিনন্দন অনুভূতির সৃষ্টি করে। পুরো স্থাপনা জুড়ে টেরাকোটার জ্যামিতিক ও বাহারি চিত্রাঙ্কন রয়েছে। রামায়ণ কৃষ্ণলীলার মতো হিন্দু পৌরাণিক কাহিনির চিত্র, গায়ক, নৃত্যকলা এবং যুদ্ধচিত্রও এই দেউলের গায়ে খচিত। তবে দেউলটির কোথাও কোনো লেখা পাওয়া যায়নি। বাংলার ইতিহাসে এর নির্মাণশৈলী অনন্য। এটি প্রত্নতত্ত্ব অধিদপ্তর ও গণপ্রজাতন্ত্রী বাংলাদেশ সরকারের সুরক্ষিত সম্পদ।
দর্শনীয় বৈশিষ্ট্য
বারো কোণবিশিষ্ট গঠন: উপর থেকে দেখলে এটি তারার মতো দেখা যায়।
উচ্চতা ও নির্মাণ উপাদান: প্রায় ৮০ ফুট উচ্চতা বিশিষ্ট এবং চুন-সুরকির মিশ্রণে নির্মিত।
প্রবেশপথ: দুইটি প্রবেশপথ রয়েছে, একটি দক্ষিণ মুখী এবং অন্যটি পশ্চিম মুখী।
ঐতিহাসিক পটভূমি
কথিত আছে, সংগ্রাম সিং নামক বাংলার এক সেনাপতি এটি নির্মাণ করেছিলেন। ১৬৩৬ সালে ভূষণার বিখ্যাত জমিদার সত্রাজিতের মৃত্যুর পর সংগ্রাম সিংকে এলাকার রাজস্ব আদায়ের দায়িত্ব দেওয়া হয় এবং তৎকালীন শাসকের ছত্রছায়ায় তিনি বেশ ক্ষমতাবান হয়ে ওঠেন। এলাকার রীতি অনুসারে তিনি কাপাস্তি গ্রামের এক বৈদ্য পরিবারের মেয়েকে বিয়ে করেন এবং মথুরাপুর গ্রামে বসবাস শুরু করেন।মথুরাপুর দেউল ফরিদপুর জেলার মধুখালী উপজেলার মথুরাপুর গ্রামে অবস্থিত একটি ঐতিহাসিক ও প্রত্নতাত্ত্বিক স্থাপনা। ১৬শ শতাব্দীতে নির্মিত এই দেউলটি বাংলাদেশের অন্যতম গুরুত্বপূর্ণ স্থাপত্য নিদর্শন হিসেবে বিবেচিত।
স্থাপত্য ও শিল্পকর্ম
মথুরাপুর দেউলটি বারোকনাকৃতির এবং প্রায় ৮০ ফুট উঁচু। এটি মাটির তৈরি হলেও এর গায়ে রয়েছে অসংখ্য টেরাকোটা শিল্পকর্ম, যার মধ্যে রয়েছে দেবদেবীর মূর্তি, রামায়ণ ও কৃষ্ণলীলা, নৃত্যরত পুরুষ ও নারীর ভাস্কর্য, হানুমান, ঘোড়া, পাখি ইত্যাদি। এই শিল্পকর্মগুলো দেউলের চারপাশে ছড়িয়ে ছিটিয়ে রয়েছে, যা স্থানটিকে আরও আকর্ষণীয় করে তোলে।
দর্শনীয় স্থান ও পরিবেশ
মথুরাপুর দেউলটি চাঁদনা নদীর তীরে অবস্থিত এবং মধুখালী বাজার থেকে প্রায় ২ কিলোমিটার দূরে। এটি একটি শান্ত ও সবুজ পরিবেশে অবস্থিত, যা দর্শনার্থীদের জন্য একটি মনোরম অভিজ্ঞতা প্রদান করে। দেউলের আশেপাশে রয়েছে বিভিন্ন ছোট খাল ও গাছপালা, যা স্থানটিকে আরও সুন্দর ও আকর্ষণীয় করে তোলে।
অবস্থান ও যাতায়াত
মথুরাপুর দেউলটি ফরিদপুর জেলার মধুখালী উপজেলার গাজনা ইউনিয়নে অবস্থিত। ঢাকা-খুলনা মহাসড়কের মধুখালী বাজার থেকে মধুখালী-রাজবাড়ী ফিডার সড়কের দেড় কিলোমিটার উত্তরে দেউলটি অবস্থিত। দেউলের পশ্চিমে রয়েছে চন্দনা নদী।
Editor and Publisher : Ariful Islam
Address: Nikunja-2, Road No. 1/A Cemetery Road, Dhaka
Call: 8809639113691
E-mail: Ajkerkhobur@gmail.com
@2025 | Ajker-Khobor.com