প্রিন্ট এর তারিখঃ মে ১৪, ২০২৫, ১১:৩৭ এ.এম || প্রকাশের তারিখঃ মে ১৩, ২০২৫, ৯:১২ পি.এম
কালিগঞ্জে প্রশাসনের নাকের ডগায় অবৈধ বালু উত্তোলন পরিবেশ বিপর্যয়ের সম্ভাবনা

কালিগঞ্জের ১২ টি ইউনিয়নের বিভিন্ন স্পটে প্রশাসনের নাকের ডগায় পাইপ বসিয়ে ড্রেজার মেশিন দিয়ে অবাধে বালু উত্তোলন করছে একটি মহল। দীর্ঘদিন মাটির নীচ থেকে বালি তোলার ফলে যে কোন সময় ভুমি ধ্বসে যাবে এমন অভিযোগ স্থানীয়দের। সরকারী তরফে দুই একটি মোবাইল কোর্ট পরিচালিত হলেও তার অন্তরালে কর্মকর্তাদের বিরুদ্ধে স্থানীয়দের বিস্তর অভিযোগ। একই জায়গায় মোবাইল কোর্ট পরিচালনার পর পুনরায় বালি উত্তোলন কিভাবে সম্ভব জানতে চায় তারা।
কালিগঞ্জে কোন সরকারী বালু মহল না থাকলেও প্রশাসনের নামে বেনামে ১০-১২ টি পয়েন্ট থেকে দিনরাত অবৈধভাবে বালি উত্তোলনের শীর্ষে ভাড়াশিমলা ইউনিয়ন। ইছামতি নদীর পূর্ব পারে অন্তত ৬টি স্থানে পাইপ বসিয়ে নিয়মিত বালি উত্তোলন করা হচ্ছে এখানে। বিগত ৫ মাসে ৫/৬ টি স্থানে মোবাইল কোর্ট পরিচালিত হলেও তার কোন প্রভাব পড়েনি কালিগঞ্জে।
গত ১৩ ফেব্রুয়ারী ২০২৫ দুপুর ১২ টা হতে ২ টা পর্যন্ত সাতক্ষীরার কালিগঞ্জ উপজেলার ভাড়া শিমলা ইউনিয়নের কামদেবপুর এবং নলতা ইউনিয়নের বিল কাজলা গ্রামে ঘেরে পৃথক দুটি অভিযান পরিচালনা করেন সহকারি কমিশনার (ভূমি) ও ভ্রাম্যমান আদালতের নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেট অমিত কুমার বিশ্বাস। ভাড়াসিমলা ইউনিয়নের সুলতানপুর গ্রামের আব্দুল কুদ্দুসের স্ত্রী আসমা খাতুন এবং নলতা ইউনিয়নের ইন্দ্রনগর গ্রামের বালু ব্যবসায়ী বাবলু দীর্ঘদিন ধরে ড্রেজার মেশিন দিয়ে অবৈধভাবে বালু উত্তোলন করার অভিযোগে মোবাইল কোর্টে জরিমানা করলেও তারা বালু উত্তোলন বন্ধ করেনি। বর্তমানে বাগবাটি গ্রামের জিয়াউর, খোকন মেম্বর ও লালন এই বালি উত্তোলন চালিয়ে যাচ্ছে। বার বার অভিযোগ করলেও উপজেলা সহকারি কমিশনার (ভূমি) ও ভ্রাম্যমান আদালতের নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেট অমিত কুমার বিশ্বাস অজ্ঞাত কারনে নীরব ভুমিকা পালন করছে।
ভাড়াশিমলা ইউনিয়ন পরিষদের প্যানেল চেয়ারম্যান নিজাম উদ্দিন বলেন আমাদের এলাকায় ৩-৪টি স্থানে ঘেরের মধ্যে থেকে বালি উত্তোলন করা হচ্ছে। জুনের আগে কিছু সরকারী কাজ শেষ করার জন্য। এসময় তাকে আবার প্রশ্ন করা হয় দীর্ঘদিন ধরে বালু তোলার ফলে লেয়ার ফেল করে ইছামতির শুইলপুর ভাঙ্গনের সাথে কামদেবপুর খাদ্য গুদাম বা বসন্তপুর খাদ্য গুদাম পর্যন্ত ভুমি ধ্বসে ইছামতি নদীর ভাঙ্গনের সাথে মিশে যাবে নাতো? প্রশ্নটি উড়িয়ে দেননি। তিনি বলেন ভুমি ধ্বসে যেতে পারে। অসম্ভব কিছু নয়। দীর্ঘদিন ধরে হাজার হাজার ফুট বালি তোলা হচ্ছে ধ্বসে গেলে কিছু করার থাকবে কিনা। একদিকে ইছামতির শুইলপুর অংশে ভাঙ্গন আছে অন্যদিকে ভুমিধ্বস হলে ৫/৬ টি গ্রাম তলিয়ে যাবে।
শুইলপুর গ্রামের সৈয়দ আলীর বছর বয়স ৯৯ বছর। তিনি ইছামতি নদীর গড়াপেটার অনেকবার দেখেছেন। তিনি বলেন বালি কেটে নেওয়ার কারনে এখানে ভাঙ্গন নিয়মিত ব্যাপার। আমি আমার বয়স ভর দেখে আসছি। এখনও ভাঙ্গন হচ্ছে।
মোবাইল কোর্ট পরিচালনার পরে পুনরায় একই জায়গায় অবৈধ বালি উত্তোলন করা হচ্ছে তাহলে মোবাইল কোর্ট প্রশ্নবিদ্ধ হচ্ছে কিনা? এমন প্রশ্নের উত্তরে কালিগঞ্জ উপজেলা সহকারী কমিশনার (ভুমি) অমিত কুমার বিশ্বাস বলেন আবার যদি বালি তোলে তবে আমরা ব্যবস্থা নেব। কালিগঞ্জে সরকার অনুমোদিত বালুমহল নেই।
বিষয়টি নিয়ে সাতক্ষীরা জেলা পরিবেশ অধিদপ্তরের সহকারী পরিচালক সরদার শরীফুল ইসলামের কাছে জানতে চাইলে তিনি বলেন, বিষয়টি আমি অবহিত নই। তবে আমি খোঁজ নিয়ে দেখছি। অভিযোগ সঠিক হলে অবশ্যই পদক্ষেপ নেব।
Editor and Publisher : Ariful Islam
Address: Nikunja-2, Road No. 1/A Cemetery Road, Dhaka
Call: 8809639113691
E-mail: Ajkerkhobur@gmail.com
@2025 | Ajker-Khobor.com