রাজবাড়ী জেলার, পাংশা সাব-রেজিস্ট্রি অফিসের দলিল লেখকদের দক্ষতা বৃদ্ধি, শুদ্ধাচার চর্চা, সুশাসন ও জবাবদিহিতা জোরদারকরনের জন্য একদিনের অভ্যান্তরীন প্রশিক্ষণ প্রদান করেছেন, সাব-রেজিস্ট্রার মোহাম্মদ মোমেন মিয়া।
বৃহস্পতিবার (২৯ মে) পাংশা সাব-রেজিস্ট্রি অফিস চত্বরে দিন ব্যাপি এই প্রশিক্ষণ কর্মশালায়, সকাল থেকে সন্ধ্যা পযর্ন্ত অবিরাম ঝড়ো বৃষ্টি ও বৈরী আবহাওয়া উপেক্ষা করে সাব-রেজিস্ট্রার নিজেই প্রশিক্ষণ কর্মশালা পরিচালনা ও প্রশিক্ষণ প্রদান করেছেন।
প্রশিক্ষণে অংশ নেওয়া, পাংশা সাব-রেজিস্ট্রি অফিসের সনদ প্রাপ্ত সকল দলিল লেখকদের উদ্দেশ্যে সাব-রেজিস্ট্রার বলেন, মানুষের কষ্টার্জিত অর্থ দিয়ে যে জমি ক্রয় করেন, সেটা বংশ পরমপরায় নির্বিঘ্নে ভোগদখলের জন্য রেজিস্ট্রি করতে, একজন দলিল লেখকের শরনাপন্ন হন। একজন দলিল লেখক হিসেবে আপনাদের দায়িত্ব হচ্ছে, ঐ জমির সমস্ত কাগজপত্র পর্যবেক্ষণ করে নির্ভুলভাবে দলিল লিখে সঠিক বাজার মূল্য নির্ধারণ করে স্ট্যাম্প ফি এবং রেজিস্ট্রেশন ফি সহ যাবতীয় সকল সরকারি ফিসের টাকা সোনালী ব্যাংকে জমাদান পুর্বক পে-অডারের কপি দলিলের সাথে সংযুক্ত করে, সাব-রেজিস্ট্রারের এজলাসে দাখিল করা। একজন দলিল লেখক হিসেবে আপনাদের অবশ্যই এসব কার্য অত্যান্ত দায়িত্বশীলতার সাথে সম্পন্ন করতে হবে, যাতে কোনো প্রকার অতিরিক্ত অর্থ আদায় বা জন হয়রানির অভিযোগ না ওঠে। সাব-রেজিস্ট্রার আরও বলেন, কোনো কাগজপত্র বুঝতে অসুবিধা হলে আপনারা অবশ্যই আমার কাছে পরামর্শ নিতে পারবেন।
দলিল লেখকদের উদ্দেশ্যে তিনি বলেন, আপনাদের পেশাগত দায়িত্ব পালনে আরও বেশী সতর্ক এবং দায়িত্বশীল হতে হবে, কারন দলিল লেখকরা কখনই জবাবদিহির উদ্ধে নয়। জবাবদিহিতার উপর জোর দিয়ে তিনি বলেন, একটি রেজিস্ট্রিকৃত দলিল সংক্রান্ত যেকোন জটিলতায় আপনাদেরকে অবশ্যই সর্বাদালতে জবাবদিহি করতে হবে। দীর্ঘদিন ধরেই ভুমি রেজিস্ট্রেশন বিভাগে অফিসার সংকট থাকায়, একজন অফিসার একাধিক অফিসে দায়িত্ব পালন করার কারনে, অফিসগুলোতে ভিড় জমে যায়। দলিল লেখকগণ একটি দলিল দীর্ঘসময় ধরে লিখে থাকেন। অথচ জন দুর্ভোগ এড়াতে একজন সাব-রেজিস্ট্রার'কে মাত্র কয়েক মিনিটে সেই দলিলের রেজিস্ট্রেশন কার্য সম্পন্ন করতে হয়। এটা খুবই দুঃখজনক ও ঝুঁকিপূর্ণ আখ্যা দিয়ে তিনি এ খাতের অফিসার স্বল্পতা দুর করার জন্য, সরকার সহ সংশ্লিষ্ট কতৃপক্ষের হস্তক্ষেপ কামনা করেন।
দলিল লেখকদের সতর্ক করে দিয়ে সাব-রেজিস্ট্রার বলেন, রেজিস্ট্রেশন কার্য সম্পন্ন করতে, অফিসে কোনো প্রকার অর্থের লেনদেন হয় না। কেউ কখনও কারো সাথে কোনো প্রকার অর্থের লেনদেন করবেন না।
এক প্রশ্নের জবাবে একাধিক দলিল লেখক এই প্রতিবেদক'কে জানান, বতর্মান সাব-রেজিস্ট্রার স্যার অত্যান্ত সৎ, অভিজ্ঞ এবং একজন মানবিক অফিসার।
তিনি দলিল লেখক এবং সেবা গ্রহিতাদের সাথে সব সময়ই অত্যান্ত বিনয়ী এবং ভদ্র ব্যাবহার করে সেবা প্রদান করে থাকেন। স্যারের ব্যাবহারে সেবাগ্রহিতা এবং আমরা অত্যান্ত সন্তুষ্ট । সংশ্লিষ্ট দপ্তরের প্রতি আমাদের দাবী, স্যার যেনো অবসরের আগের দিন পযর্ন্ত পাংশা অফিসেই কর্মরত থাকেন।
পাংশা সাব-রেজিস্ট্রি অফিসের দলিল লেখক, পাট্টা ইউনিয়ন পরিষদের মেম্বার ও পাংশা উপজেলা প্রেসক্লাবের সাংগঠনিক সম্পাদক অতুল সরকার জানান, আমি যখন অর্থের অভাবে পড়ালেখা বন্ধ করে জীবনের হাল ছেড়ে দিয়ে বেকার হয়ে ২০০৪ সালে ঢাকায় চলে যাই, তখন বর্তমান সাব-রেজিস্ট্রার মোহাম্মদ মোমেন মিয়া স্যার, আই জি আর (মহাপরিদর্শক নিবন্ধন) অফিসে চাকুরীরত ছিলেন। আমি আমার এক দলিল লেখক আত্মীয়'র মাধ্যমে স্যারের কাছে আমার বেকারত্বের কথা জানালে,স্যার, আমার প্রতি অত্যান্ত মানবিক হয়ে, বিনা খরচে আমাকে দলিল লেখক সনদ পাওয়ার সহযোগিতা করে আমাকে পিতৃতুল্য উপকার করেন। মহান সৃষ্টিকর্তার কৃপায় এবং স্যারের দয়ায় আমি বতর্মানে পিতা মাতা এবং পরিবারের মুখে দুবেলা খাবার তুলে দিতে পারছি। স্যারের এই ঋন আমার পরিবার এবং আমি কোনোদিন শোধ করতে পারবো না। মহান সৃষ্টিকর্তার কাছে এই মহান মানুষটির সুস্থতা এবং দীর্ঘায়ু কামনা করি।
পাংশা সাব-রেজিস্ট্রি অফিসে কর্মরত মহিলা নকল নবীশ নীলিমা রানী সরকার সহ, সকল শ্রেনীর কর্মকর্তা এবং কর্মচারীগণ জানান, অফিসার হিসেবে বতর্মান সাব-রেজিস্ট্রার আব্দুল মোমেন মিয়া স্যার একজন পরিস্কার,পরিছন্ন, সৎ এবং অভিজ্ঞতা সম্পন্ন মানবিক অফিসার। এরকম অফিসার বাংলাদেশের সব সাব-রেজিস্ট্রি অফিসে থাকলে জনগনের ভোগান্তি দুর হয়ে ভুমি রেজিস্ট্রেশন প্রক্রিয়ায় স্বচ্ছতা এবং জবাবদিহিতা নিশ্চিত হবে।
Editor and Publisher : Ariful Islam
Address: Nikunja-2, Road No. 1/A Cemetery Road, Dhaka
Call: 8809639113691
E-mail: Ajkerkhobur@gmail.com
@2025 | Ajker-Khobor.com