প্রিন্ট এর তারিখঃ জুন ১০, ২০২৫, ৭:১৫ এ.এম || প্রকাশের তারিখঃ জুন ৩, ২০২৫, ৪:৫৫ পি.এম
ধামরাইয়ে এক ঘরে মা-সহ দুই ছেলের মরদেহ উদ্ধার

ঢাকার ধামরাইয়ে নিজ বাড়ি থেকে এক নারী ও তার দুই শিশুসন্তানের মরদেহ উদ্ধার করেছে পুলিশ। পুলিশ ঘটনাস্থল থেকে আলামত হিসেবে খাওয়া ভাত ও ডিমভাজি জব্দ করেছে।
সোমবার (২ জুন) বেলা তিনটার দিকে ধামরাই উপজেলার গাংগুটিয়া ইউনিয়নের রক্ষিত গ্রামে এ ঘটনা ঘটে।
নিহতরা হলেন, ওই এলাকার মৃত রাজা মিয়ার স্ত্রী নারগিস আক্তার (৪২) এবং তার দুই ছেলে মো. শামীম (১৭) ও সোলাইমান (৮)। পুলিশ বলছে, প্রাথমিকভাবে বিষক্রিয়াজনিত কারণে তাদের মৃত্যু হয়েছে বলে ধারণা করা হচ্ছে। তবে এটি আত্মহত্যা, না কি হত্যা তা নিশ্চিত হতে ময়নাতদন্তের প্রতিবেদন পর্যন্ত অপেক্ষা করতে হবে। মরদেহে আঘাতের কোনো চিহ্ন পাওয়া যায়নি।
নিহত নারগিসের মেয়ে নাসরিন বেগম আজকের খবরকে জানান, বাড়িতে এসে দেখি সব দরজা জানালা লাগানো। বাইরে থেকে দরজা খুলি। ঘরে ঢুকে দেখি ফ্যান চলছে। মা শুয়ে আছে ভেবে পায়ের কাছে বসি। হাত দিয়ে দেখি পা একদম শক্ত। সাধারণত নরম থাকত। তখন মায়ের শরীরের ওপর থেকে কাঁথা সরিয়ে দেখি, দুই ভাইও পাশেই শুয়ে। মা’কে জড়িয়ে ধরি, দেখি মারা গেছে।
নাসরিন আরো জানান, তিনি শ্বশুরবাড়িতে থাকেন। ঘটনার কিছুই জানেন না বলে কান্নাজড়িত কণ্ঠে বলেন।
নিহতের শ্বশুর জালাল উদ্দিন বলেন, নাতনি ফোন করেও মাকে পাচ্ছিল না। পরে বাড়িতে এসে দরজা খুলে দেখে সবাই মরে পড়ে আছে। তাদের কারও সঙ্গে কোনো ঝগড়া-বিবাদ ছিল না।
তবে নারগিসের মা রাশেদা বেগম ও ছোট বোন কাজলী আক্তার অভিযোগ করেন, বাড়ি ও জায়গাজমি নিয়ে দীর্ঘদিন ধরে বিরোধ চলছিল। নারগিসকে বাড়ি ছাড়া করার হুমকি দেওয়া হচ্ছিল বলেও দাবি তাদের। কাজলী আক্তার বলেন, আমার বইনের শ্বশুর-শাশুড়িই মারছে। তারা আর দুই প্রতিবেশীই একমাত্র শত্রু। শান্তি পায়নি কেউ বাড়ি নিয়ে হুমকি দিত। শেষমেশ এই বাড়ির জন্যই ওদের মেরে ফেলেছে।
ঢাকা জেলা পুলিশের সাভার সার্কেলের অতিরিক্ত পুলিশ সুপার শাহীনুর কবির বলেন, বিকেলে খবর পেয়ে ঘটনাস্থলে যাই। দেখি বিছানায় মা ও দুই ছেলের নিথর দেহ পড়ে আছে। শরীরে কোনো আঘাতের চিহ্ন নেই। ঘরের দরজা ভেতর থেকে লাগানো ছিল। নিহত নারীর মেয়ে বাইরে থেকে দরজা খুলে মরদেহ দেখে।
তিনি বলেন, প্রাথমিকভাবে বিষক্রিয়ায় মৃত্যু হয়েছে বলেই ধারণা করছি। তবে এটা আত্মহত্যা না কি পরিকল্পিত হত্যা, তা এখনই বলা যাচ্ছে না। ময়নাতদন্তের প্রতিবেদন পাওয়ার পর পরিষ্কার হবে।
পুলিশ জানায়, মরদেহগুলো ময়নাতদন্তের জন্য হোসেন শহীদ সোহরাওয়ার্দী মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে পাঠানোর প্রস্তুতি চলছে।
একসঙ্গে মা ও দুই সন্তানের এমন মৃত্যুতে পুরো গ্রামে নেমে এসেছে শোকের ছায়া। খবর ছড়িয়ে পড়লে আশপাশের মানুষ ভিড় করেন নারগিসের বাড়িতে।
স্থানীয় বাসিন্দা আবুল হোসেন বলেন, এটা একেবারেই অস্বাভাবিক ও মর্মান্তিক। ভাবতেই কষ্ট হচ্ছে, কীভাবে একসঙ্গে তিনজন মারা গেল।
আরেক প্রতিবেশী হাসি আক্তার বলেন, প্রথমে শুনি ছেলে পরে ছোট ছেলেও, শেষে শুনি মা—তিনজনই মারা গেছে। জানালা দিয়ে দেখি সবাই বিছানায় শুয়ে আছে। খুব ভালো মানুষ ছিল। এক বছর আগে স্বামী মারা গেছে। কেন এমন হলো, কিছুই বুঝতে পারছি না।
Editor and Publisher : Ariful Islam
Address: Nikunja-2, Road No. 1/A Cemetery Road, Dhaka
Call: 8809639113691
E-mail: Ajkerkhobur@gmail.com
@2025 | Ajker-Khobor.com