বাংলাদেশ—ভারতের দ্বৈত নাগরিকত্ব নিয়ে বরিশালের কাপড় ব্যবসায়ী মৃনাল কান্তি সাহার বিরুদ্ধে অঢেল অবৈধ সম্পদের পাহাড় গড়ার বিভিন্ন তথ্য পাওয়া গেছে।তার বিরুদ্ধে রয়েছে বরিশালে কাপড়ের ব্যবসার আড়ালে ভারতে টাকা পাচারের অভিযোগ । মৃনাল কান্তি সাহা ভারতীয় নাগিরক এবং বাংলাদেশী নাগরিক হিসেবে দুটি পরিচয় পত্র ব্যবহার করে। তবে মৃনাল কান্তি সাহা ভারতের নাগিরত্বের কথা অস্বীকার করে বলেন স্রেফ মিথ্যা কথা,আমার ভারতে কিছু নেই।
বরিশাল চক বাজার মালিক সমিতির সেক্রেটারি আব্দুর রহিম বলেন মৃনাল কান্তি সাহা বরিশালে ফ্যাসিস্ট আওয়ামীলীগের হয়ে অর্থযোগান দাতা হিসাবে কাজ করেছেন। অভিযোগ আছে বরিশালে ছাত্র—জনতার ও বিএনপি—জামাতের আন্দোলন দমাতে অর্থের যোগান দাতা হিসাবে ভূমিকা পালন করেছেন।তার খুব দ্রুত নেওয়ার প্রস্তুতি নিব।
ভারতে থাকা নাম প্রকাশে একজন বলেন, মৃনাল কান্তি সাহা বরিশালে চকবাজার কাপড়ের ব্যবসায়ী ভারতের নাগরিকত্ব নিয়ে অবৈধভাবে টাকা ভারতে পাচার করতে থাকে। অবৈধ টাকায় ভারতে গড়ে তোলে আলিশান বাড়ি, বহু জমি জমাসহ বহু সম্পদ।চোরাই পথে কাপড় এনে বিক্রি করার অভিযোগ আছে।
বিশেষ সূত্রে জানাযায় গত বছর বরিশালের নাজির মহল্লায় বিপুল পরিমান ভারতীয় শাড়িসহ ট্রাক জব্দ করে স্থানীয় লোকজন সেই কাপড় ছাড়িয়ে নেওয়ার জন্য মৃনাল সাহা বিপুল পরিমান টাকা দিয়ে ছাড়িয়ে নিয়েছেন।
বরিশাল চকবাজার দোকান মালিকরা জানান মৃনাল সাহা বরিশাল চক বাজারে তিনটি কাপড়ের দোকানের মালিক স্বদেশী,নিউ স্বদেশী ও পালকি নামের তিনটি দোকান রয়েছে। এই দোকানে অবৈধ ভাবে ভারতীয় কাপড় এনে সরকারী রাজস্ব ফাঁকি দিয়ে বিক্রি করে।
মৃনাল কান্তি সাহা বরিশাল চকবাজার মানিদ্র নারায়ন সাহার পুত্র।বরিশালের চকবাজারে কাপড়ের ব্যবসায়ী হয়েও ভারতীয় নাগরিক হলেও বাংলাদেশ বর্তমানে বরিশাল হাটখোলা নিজ বাড়িতে বসবাস করেন।তার বরিশালের লাইন রোডে একটি ফ্লাট রয়েছে।মৃনাল কান্তি সাহা বরিশাল চকবাজার মালিক সমিতির সভাপতিসহ বিভিন্ন সনাতন ধর্মের প্রতিষ্ঠানের সাথে জড়িত।তবে সে ভারতের নাগরিক হয়ে কিভাবে বরিশালের চেম্বার অফ কমার্চের সদস্য হয়েছেন তাতে নানান প্রশ্নের জন্ম দিয়েছে।
মৃনাল কান্তি সাহা ভারতের নাগরিক যাহার একাধিক ডকুমেন্ট প্রতিবেদকের হাতে আছে।ডকুমেন্টে দেখা যায় মৃনাল কান্তি সাহা ভারতের চব্বিশ পরগনা,পশ্চিম কলকাতার বাসিন্দা তার আদার কার্ড নাম্বার ৭৮২৭০০৮০৪১২৮ ও রেশন কার্ড নাম্বার ৭৯৭ এবং ভোটার নাম্বার ২৯০। এবং বাংলাদেশের একটি পাসপোর্ট ব্যবহার করেন যাহার নাম্বার বিডব্লি ০০০৫৯৫৭।
তবে বাংলাদেশের নাগরিকত্ব আইনে ১৯৫১ বলা হয়েছে এই আইনের অধীনে একজন বাংলাদেশী নাগরিক সাধারণত অন্য দেশের নাগরিকত্ব গ্রহন করলে বাংলাদেশের নাগরিকত্ব হারিয়ে ফেলবেন।
মৃনাল কান্তি সাহা বাংলাদেশের নাগরিক থাকা স্বত্বেও তথ্য গোপন করে মিথ্যা ও প্রতারণার আশ্রয় নিয়ে ভারতে নাগরিকত্ব গ্রহণ করেন। মৃনাল কান্তি সাহা ভারতে টাকা পাচার ও বাড়ি ফ্ল্যাট ক্রয়ের জন্য বাংলাদেশে ভারতীয় সিন্ডিকেট ব্যাংকের হিসাব খুলে।
তবে ভারতের ক্ষেত্রে দ্বৈত নাগরিকত্ব নিয়ে রয়েছে কঠোর নিষেধাজ্ঞা ভারতের পরঃরুবহংযরঢ় ধপঃ ১৯৫৫ অনুসারে একজন ভারতীয় নাগরিক অন্য দেশের নাগরিকত্ব গ্রহন করে বা তথ্য গোপন করে ভারতের নাগরিক হন তাহলে স্বয়ংক্রিয়ভাবে ভারতের নাগরিকত্ব হারিয়ে ফেলবেন। তবে তথ্য গোপন করে যদি ভারতের নাগরিকত্ব নেন তাহলে ১৯৫৫ সিটিজেন ধারা ১০ বলা হয়েছে ভারতের নাগরিকত্ব বাতিল করে সেই ব্যক্তিকে নাগরিক নয় বলে ঘোষণা করতে পারে।
ভারতের নাগরিকত্বের বিষয়ে জানতে চাইলে মৃনাল কান্তি সাহা বলেন আমাকে আমার নিজস্ব লোকজন আমার পিছনে লেগেছে ভারতে আমার কোন কিছু নেই।স্রেফ মিথ্যা কথা।
ভারতের নাগরিত্ব নিয়ে বরিশাল বাংলাদেশ সুপ্রিম কোর্টের বিজ্ঞ সিনিয়ার আইনজিবি ও বিএনপি রাজনৈতিক ব্যক্তিত্ব এডভোকেট নাজিমউদ্দিন পান্না বলেন এক সাথে বাংলাদেশের দ্বৈত নাগরিকত্ব থাকতে পারবে তবে বাংলাদেশ প্রজাতন্ত্রের কোন কর্মচারি ও নির্বাচনে অংশগ্রহণ করতে পারবে না।তবে ভারতের আইন অনুযায়ী তথ্য গোপন করে কেউ যদি ভারতের নাগরিকত্ব হন বা অন্য দেশের নাগরিকত্ব নেন তার বিরুদ্ধে ভারতে মামলা করতে হবে।
ভারতের নাগরিত্ব নিয়ে বরিশাল চিফ জুডিশিয়াল কোর্টের পিপি হাফিজ আহাম্মেদ বাবলু বলেন একসাথে বাংলাদেশ ও ভারতের নাগরিক থাকতে পারবে না।তাকে যে কোন এক দেশের নাগরিক হতে হবে।
ভারতের নাগরিত্বের বিষয়ে বরিশাল সিটি কর্পোরেশনের সাবেক ৯নং ওয়ার্ডের কাউন্সিলর মোঃ হুমায়ন কবির লিংকু বলেন আমার জানা ছিল না সে যে ভারতের নাগরিত্ব নিয়ে বরিশালে বসবাস করে।তবে বরিশালের চকবাজারের অনেক ব্যবসায়ীই ভারতের নাগরিক।সে আমার ওয়ার্ডে ব্যবসা করে তবে সে ৮নং ওয়ার্ডের বাসিন্দা।তার হাটখোলা বাসা আছে সেখানে থাকে।
ভারতের নাগরিকত্বের বিষয়ে বরিশাল সিটি কর্পোরেশনের ৮নং ওয়ার্ডের সাবেক কাউন্সিলর রাসিক হাওলাদার বলেন সে আমার ওয়ার্ডের বাসিন্দা তবে সে ভারতের নাগরিক তা এখন জানলাম।তবে ভারতের নাগরিকত্ব নিয়ে কিভাবে বরিশালে ব্যবসা করে তা আমার বোধ গাম্য নয়।
ভারতের নাগরিকত্বের বিষয়ে জানতে চাইলে বরিশাল চেম্বার অব কমার্সের সাবেক সভাপতি ও বরিশাল চকবাজার মালিক সমিতি সেক্রেটারি আব্দুর রহিম বলেন দ্বৈত নাগরিকত্ব নিয়ে কেউ গুরুত্বপূর্ন পদে থাকতে পারবে না।তার বিরুদ্ধে দ্বৈত নাগরিকত্বের প্রমানিত হলে তার বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেওয়া হবে।
মৃনাল কান্তি সাহা বিষয়ে জানতে চাইলে বরিশাল মহানগর বিএনপির সদস্য সচিব জিয়া উদ্দিন সিকদার বলেন মৃনাল কান্তি সাহা আওয়ামী লীগের দোসোর হয়ে কাজ করেছেন।সে দ্বৈত নাগরিকত্বের আড়ালে দেশ থেকে অনেক টাকা পাচার করেছে।সে জুলাইয়ের গণ—অভ্যুত্থানের আওয়ামী লীগের অর্থের যোগান দাতা ছিলেন।সে এক সাথে দুই দেশের নাগরিক থাকতে পারে না।তার বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেওয়া হবে।
Editor and Publisher : Ariful Islam
Address: Nikunja-2, Road No. 1/A Cemetery Road, Dhaka
Call: 8809639113691
E-mail: Ajkerkhobur@gmail.com
@2025 | Ajker-Khobor.com