চট্টগ্রামের সীতাকুণ্ড উপজেলার সৈয়দপুর ইউনিয়নের পূর্ব সৈয়দপুর গ্রামের দুটি গুরুত্বপূর্ণ সড়কের বেহাল দশায় প্রতিদিন চরম দুর্ভোগ পোহাচ্ছেন সাধারণ মানুষ, বিশেষ করে স্কুলগামী শিক্ষার্থীরা।প্রথমটি মিরেরহাট টু হামিদউল্লাহ হাট সড়কের মিরেরহাট থেকে পূর্ব সৈয়দপুর সর্দারবাড়ী অংশ এবং দ্বিতীয়টি মালু ভূঁইয়া সড়ক থেকে কালাচাঁদ সড়ক হয়ে পূর্ব সৈয়দপুর সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয় সংযোগকারী সড়ক। দীর্ঘদিন ধরে অবহেলায় পড়ে থাকা প্রায় দেড় কিলোমিটার দৈর্ঘ্যের এই সড়কদ্বয় এখন সম্পূর্ণরূপে চলাচলের অনুপযোগী হয়ে পড়েছে।মিরেরহাট–সর্দারবাড়ী সড়কের অধিকাংশ অংশজুড়ে বড় বড় গর্ত, উঠে যাওয়া পিচ ও ইট-বালুর খোয়া এবং জমে থাকা বৃষ্টির পানি। বর্ষা মৌসুমে কোথাও কোথাও হাঁটুসমান কাদা-পানি জমে থাকে। রিকশা-অটোরিকশা আটকে পড়ে, আর পথচারীদের অনেক সময় জুতা খুলে, কাপড় ভিজিয়ে চলাচল করতে হয়।অন্যদিকে, পূর্ব সৈয়দপুর সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের সংযোগ সড়কটি সম্পূর্ণ কাঁচা হওয়ায় বর্ষায় কোমলমতি শিক্ষার্থীরা কর্দমাক্ত ও ভেজা অবস্থায় স্কুলে যেতে বাধ্য হচ্ছে। স্থানীয়দের মতে, সড়কটি ইটসলিং বা সিসি ঢালাই করা এখন জরুরি হয়ে উঠেছে।স্থানীয় বাসিন্দা সিরাজুল ইসলাম বলেন, “প্রথম সড়কটি পূর্ব সৈয়দপুরবাসীর চলাচলের একমাত্র ভরসা। কিন্তু বেহাল দশার কারণে এটি এখন চরম দুর্ভোগে পরিণত হয়েছে। দ্বিতীয়টি স্কুল সড়ক, যেখানে প্রতিদিন প্রায় শতাধিক শিক্ষার্থী চলাচল করে। দ্রুত সংস্কারের প্রয়োজন।”জাফরনগর অপর্ণা চরর্ণা উচ্চ বিদ্যালয়ের সিনিয়র শিক্ষক বাবু বিভাষ চক্রবর্ত্তী বলেন, “বর্ষায় পরিস্থিতি আরও ভয়াবহ হয়ে উঠবে। তখন শিক্ষার্থীদের স্কুলে যাতায়াত হবে চরম ঝুঁকিপূর্ণ, যা তাদের শিক্ষাজীবনে নেতিবাচক প্রভাব ফেলবে।”পূর্ব সৈয়দপুর সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের সহকারী শিক্ষক ভূধোর দাশ বলেন, “শিশুরা প্রতিদিন কাদা-ময়লার মধ্য দিয়ে স্কুলে আসে। এতে তারা শারীরিকভাবে ক্ষতিগ্রস্ত হচ্ছে, পড়াশোনায়ও মনোযোগ কমছে।”জাফরনগর অপর্ণা চরর্ণা উচ্চ বিদ্যালয়ের অষ্টম শ্রেণির শিক্ষার্থী জুনায়েদ মাহমুদ বলেন, “একটু বৃষ্টি হলেই রাস্তাটি চলাচলের অনুপযোগী হয়ে পড়ে। কাদা-পানিতে ভিজে স্কুলে যেতে হয়। সামনে বর্ষায় আমাদের হেঁটে স্কুলে যাওয়া খুবই কষ্টকর হয়ে উঠবে। তাই রাস্তাটি দ্রুত সংস্কারের জন্য কর্তৃপক্ষের দৃষ্টি কামনা করছি।”মিরেরহাট বাজারের একাধিক ব্যবসায়ী জানান, রাস্তাটির দুরবস্থার কারণে অনেকেই বাজারে আসতে চায় না। ফলে বেচাকেনা কমে গেছে এবং ক্ষতিগ্রস্ত হচ্ছেন তারা।এ বিষয়ে সৈয়দপুর ইউনিয়ন বিএনপির সভাপতি কাজী এনামুল বারী বলেন, “আমি বিষয়টি নিয়ে ইউএনও সাহেবের সঙ্গে কথা বলেছি। তিনি নিজে এসে রাস্তাগুলো পরিদর্শন করেছেন। মিরেরহাট টু হামিদউল্লাহ হাট সড়কটি এলজিইডির অধীনে এবং পূর্ব সৈয়দপুর স্কুল সড়কটি ইউনিয়ন পরিষদের আওতায়। ইউএনও সাহেব উভয় দপ্তরের সঙ্গে যোগাযোগ করে দ্রুত সংস্কারের আশ্বাস দিয়েছেন।”সচেতন এলাকাবাসীর আশঙ্কা, অবিলম্বে সংস্কার ও নির্মাণ কার্যক্রম শুরু না হলে বর্ষায় এই দুটি সড়ক সম্পূর্ণভাবে অচল হয়ে পড়বে। তারা সীতাকুণ্ড উপজেলা প্রশাসন, এলজিইডি এবং স্থানীয় রাজনৈতিক প্রতিনিধিদের জরুরি হস্তক্ষেপ কামনা করেছেন।
Editor and Publisher : Ariful Islam
Address: Nikunja-2, Road No. 1/A Cemetery Road, Dhaka
Call: 8809639113691
E-mail: Ajkerkhobur@gmail.com
@2025 | Ajker-Khobor.com