প্রিন্ট এর তারিখঃ জুন ১৯, ২০২৫, ১০:২৬ পি.এম || প্রকাশের তারিখঃ জুন ১৯, ২০২৫, ৫:৫০ এ.এম
রাজিবপুরে সরকারি ও ব্যক্তি মালিকানার জমি নিয়ে দীর্ঘদিনের বিরোধের অবসান

কুড়িগ্রামের রাজিবপুর উপজেলায় সরকারি জমি ও ব্যক্তি মালিকানার জমি নিয়ে দীর্ঘদিন ধরে চলা জটিলতার অবসান ঘটেছে কাগজপত্র যাচাই–বাছাইয়ের মাধ্যমে। উপজেলার সদর ইউনিয়নের বাসিন্দা অছিয়ত জামান নামের এক ব্যক্তির মালিকানা দাবি করা ১ একর ১৩ শতক জমি নিয়ে উপজেলা প্রশাসনের সঙ্গে তার দীর্ঘ দিন ধরে বিরোধ চলছিল। অবশেষে ১৮ জুন (বুধবার) সকাল ১০টায় উপজেলা পরিষদ হলরুমে অনুষ্ঠিত কাগজপত্র যাচাই-বাছাই সভায় প্রকৃত মালিকানা ও জমির অবস্থান স্পষ্ট হয়।
প্রশাসনের তথ্য অনুযায়ী, অছিয়ত জামাল তার পৈতৃক সূত্রে ১ একর ১৩ শতক জমির বৈধ মালিক এবং তিনি দীর্ঘদিন ধরে সে জমি ভোগ দখল করছিলেন। তবে অভিযোগ ওঠে, তিনি জমির প্রকৃত অবস্থান অনুযায়ী ভোগ দখল না করে, প্রভাবশালী মহলের সহযোগিতায় উপজেলা সদরের কেন্দ্রস্থলে পাকা রাস্তার পাশে সুবিধা জনক একটি স্থানে জমি মেপে নেন এবং সেখানে মাটি ভরাট করে একটি বহুতল মার্কেট নির্মাণ শুরু করেন।
জানা যায়, ওই সময়ের সরকারের সাবেক প্রাথমিক ও গণশিক্ষা প্রতিমন্ত্রী জাকির হোসেন, স্থানীয় কিছু প্রশাসনিক কর্মকর্তা ও ক্ষমতাসীন দলের কয়েকজন নেতা–কর্মীর সহযোগিতায় অছিয়ত জামাল অনিয়ম তান্ত্রিকভাবে সেই জমি বুঝে নেন। বিষয়টি অনেক দিন চেপে থাকলেও বর্তমান সরকারের দায়িত্ব নেওয়ার পর প্রশাসনের পক্ষ থেকে রাজিবপুরের সরকারি জমি উদ্ধারে অভিযান শুরু করা হয়।
এরই ধারাবাহিকতায় ১৬ জুন উপজেলা নির্বাহী অফিসার ও নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেট ফজলে এলাহীর নেতৃত্বে উচ্ছেদ অভিযান পরিচালিত হয়। উচ্ছেদ চলাকালে অছিয়ত জামাল ও তার লোকজন বাধা প্রদান করেন এবং দাবি করেন, তারা বৈধভাবে জমিটি পেয়েছেন এবং প্রয়োজনীয় কাগজপত্র রয়েছে তাদের কাছে। পরিস্থিতি বিবেচনায় নিয়ে ইউএনও ফজলে এলাহী তাৎক্ষণিকভাবে উচ্ছেদ অভিযান স্থগিত করেন এবং কাগজপত্র যাচাইয়ের জন্য ১৮ জুন নির্ধারণ করেন।
১৮ জুন অনুষ্ঠিত উক্ত বৈঠকে উভয় পক্ষের কাগজপত্র যাচাই–বাছাই শেষে দেখা যায়, অছিয়ত জামালের মালিকানাধীন ১ একর ১৩ শতক জমি সত্যিই বৈধ এবং সেটি দৈর্ঘ্য অক্ষের একটি প্লটে অবস্থিত। তবে বাস্তবে তিনি যে জায়গাটি দখলে রেখেছেন, তা তার মূল জমির অবস্থানের সঙ্গে পুরোপুরি মেলে না। বরং সাবেক সরকারের আমলে সুবিধাজনক অবস্থান দিয়ে তাকে সেই জমি বুঝিয়ে দেওয়া হয়। ফলে সেখানে মার্কেট নির্মাণের সিদ্ধান্ত তিনি গ্রহণ করেন এবং ইতিমধ্যে বহু টাকা ব্যয়ে মাটি ভরাটসহ নির্মাণ কার্যক্রম চালিয়ে আসছিলেন।
উপজেলা প্রশাসনের পক্ষ থেকে সভায় সিদ্ধান্ত হয়, অছিয়ত জামালকে তার প্রকৃত জমির অবস্থান অনুযায়ী দখল বুঝিয়ে দেওয়া হবে। অছিয়ত জামাল প্রশাসনের কাছে জোর দাবি জানিয়েছেন, তিনি যে বিপুল অর্থ খরচ করে জায়গা ভরাট করেছেন—তা যেন অপচয় না হয় এবং যথাযথভাবে সেটি সরিয়ে নেওয়ার সুযোগ দেওয়া হয়।
উপজেলা নির্বাহী অফিসার ফজলে এলাহী বলেন, “সরকারি জমির উপর কোনো ধরনের অবৈধ দখল বরদাশত করা হবে না। তবে যার বৈধ কাগজপত্র আছে, তাকে সম্পূর্ণ সহযোগিতা করা হবে। আজকের যাচাই–বাছাই সভায় আমরা একটি সমাধানে পৌঁছাতে পেরেছি, যা আইনি দিক ও ন্যায়ের ভিত্তিতে গৃহীত হয়েছে।”
স্থানীয় জনগণের মাঝে প্রশাসনের এই স্বচ্ছ ও নিরপেক্ষ উদ্যোগ প্রশংসিত হয়েছে। তারা আশা প্রকাশ করেছেন, ভবিষ্যতে সরকারি জমি নিয়ে এ ধরনের জটিলতা এড়াতে প্রশাসন আরও সক্রিয় ভূমিকা পালন করবে
Editor and Publisher : Ariful Islam
Address: Nikunja-2, Road No. 1/A Cemetery Road, Dhaka
Call: 8809639113691
E-mail: Ajkerkhobur@gmail.com
@2025 | Ajker-Khobor.com