প্রিন্ট এর তারিখঃ জুন ২২, ২০২৫, ৩:৩৯ এ.এম || প্রকাশের তারিখঃ জুন ২১, ২০২৫, ১০:৩৭ এ.এম
ফাতেমা হত্যার বিচার দাবিতে মানববন্ধন ও সংবাদ সম্মেলন

চট্টগ্রামের সীতাকুণ্ডে আগুনে দগ্ধ হয়ে ফাতেমা আক্তারের মৃত্যুকে ঘিরে এলাকায় শোক ও ক্ষোভের ছায়া নেমে এসেছে। প্রতিবাদে ফুঁসে উঠেছে এলাকাবাসী। তারা ফাতেমার স্বামী মুসলিম উদ্দিন ও তার মায়ের বিরুদ্ধে হত্যার অভিযোগ তুলে দ্রুত গ্রেপ্তার ও দৃষ্টান্তমূলক শাস্তির দাবি জানিয়েছে।
শনিবার সকাল ১১টায় সীতাকুণ্ড থানার সামনে মানববন্ধন এবং পরে সাড়ে ১১টায় প্রেসক্লাবে আয়োজিত সংবাদ সম্মেলনে এলাকাবাসী লিখিত বক্তব্যে জানান, ১০ বছর আগে ফাতেমার বিয়ে হয় উত্তর বগাচতরের মুসলিম উদ্দিনের সঙ্গে। বিয়ের পর থেকেই নিরবচ্ছিন্নভাবে স্বামী ও শাশুড়ির দ্বারা শারীরিক, মানসিক ও সামাজিক নির্যাতনের শিকার হয়ে আসছিলেন ফাতেমা।
সংবাদ সম্মেলনে বলা হয়, গত ১৪ জুন পারিবারিক কলহের জেরে স্বামী মুসলিম উদ্দিন আবারও তাকে বেধড়ক মারধর করে। পরে তাকে গৃহবন্দী করে আগুন ধরিয়ে দেওয়া হয় বলে স্থানীয়দের অভিযোগ। আশপাশের লোকজন ফাতেমার চিৎকার শুনে ছুটে এসে অর্ধেক শরীর দগ্ধ অবস্থায় তাকে উদ্ধার করেন। পাঁচদিন পর ১৮ জুন চট্টগ্রাম মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে চিকিৎসাধীন অবস্থায় ফাতেমার মৃত্যু হয়।
এলাকাবাসীর দাবি, ঘটনার সময় মুসলিম উদ্দিন গ্যাস সিলিন্ডার বিস্ফোরণের কথা বললেও পরবর্তীতে নিজের বক্তব্য পরিবর্তন করে স্ত্রী আত্মহননের চেষ্টা করেছে বলে দাবি করেন। তবে স্থানীয়দের ভাষ্য, ঘটনাস্থলে গ্যাস সিলিন্ডার বিস্ফোরণের কোনো আলামত পাওয়া যায়নি।
মৃত ফাতেমার বড় ছেলে তার বাবার বিরুদ্ধে মারধরের তথ্য দিয়েছে—যার ভিডিও প্রমাণ স্থানীয়দের কাছে রয়েছে। এছাড়া এলাকাবাসীর দাবি, মুসলিম উদ্দিন গোপনে দ্বিতীয় বিবাহ করায় ফাতেমাকে ‘দুনিয়া থেকে সরানোর’ ষড়যন্ত্রে লিপ্ত ছিল।
সংবাদ সম্মেলনে আরও অভিযোগ করা হয়, ফাতেমার পরিবার থানায় মামলা করতে গেলেও পুলিশ মামলা নেয়নি। ঘটনার ৭২ ঘণ্টা পার হলেও পুলিশ কোনো কার্যকর পদক্ষেপ নেয়নি, ফলে মুসলিম উদ্দিন আত্মগোপনে চলে গেছে। এমনকি স্ত্রীকে দাফনেও অংশ নেননি তিনি।
এলাকাবাসী এবং ছাত্র সমন্বয়কেরা পাঁচ দফা দাবি উত্থাপন করেছেন:
১. আগামী ২৪ ঘণ্টার মধ্যে মামলা গ্রহণ করতে হবে, অন্যথায় বৃহত্তর আন্দোলন ঘোষণা করা হবে।
২. অভিযুক্ত মুসলিম উদ্দিনকে দ্রুত গ্রেপ্তার করতে হবে।
৩. ঘটনাটির পূর্ণাঙ্গ তদন্ত করে দোষীদের দৃষ্টান্তমূলক শাস্তি নিশ্চিত করতে হবে।
৪. ফাতেমার পরিবারকে আইনি ও মানসিক সহায়তা দিতে হবে।
৫. নারী নির্যাতন প্রতিরোধে প্রশাসন, আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনী ও সামাজিক সংগঠনগুলোর কার্যকর ভূমিকা নিশ্চিত করতে হবে।
এলাকাবাসী বলেন, এই মৃত্যু নিছক একটি পারিবারিক দুর্ঘটনা নয়; এটি সমাজ ও রাষ্ট্রের ব্যর্থতার প্রতিচ্ছবি। সাংবাদিকদের উদ্দেশ্যে বলেন, “আপনারা জাতির বিবেক। আপনারা লিখুন—আমরা ফাতেমা হত্যার বিচার চাই। নারী নির্যাতকের সর্বোচ্চ শাস্তি চাই। যাতে ভবিষ্যতে কেউ এমন অপরাধ করার সাহস না পায়।”
Editor and Publisher : Ariful Islam
Address: Nikunja-2, Road No. 1/A Cemetery Road, Dhaka
Call: 8809639113691
E-mail: Ajkerkhobur@gmail.com
@2025 | Ajker-Khobor.com