'শিশু জাতির ভবিষ্যৎ'- এই বাক্যটি শুধু একটি প্রবাদ নয়, বরং সমাজ উন্নয়ন ও অগ্রগতির মূল চাবিকাঠি। যেহেতু প্রাথমিক বিদ্যালয়ে পড়ুয়াদের শতভাগ শিশু- তাই তাদের মন একেবারে কাঁচা মাটির মতো। এই বয়সে মেধা, মনন ও নৈতিকতার ভিত্তি গড়ে ওঠে। প্রাথমিক পর্যায়ে প্রাপ্ত শিক্ষা জীবন গঠনে অপরিহার্য। শিশুদের শিক্ষায় আগ্রহ সৃষ্টি ও কর্মরত শিক্ষকবৃন্দদের দক্ষতা বৃদ্ধির লক্ষ্য ও উদ্দেশ্যে ইশ্বরগঞ্জ উপজেলার ১০৭নং দিঘালিয়া সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয় ভ্যানুতে নিকটবর্তী বিদ্যালয়সমূহের ২৫জন শিক্ষকদের নিয়ে সাব ক্লাস্টার প্রশিক্ষণ অনুষ্ঠিত।

উক্ত প্রশিক্ষণের প্রধান প্রশিক্ষক উপজেলা প্রাথমিক শিক্ষা অফিসার জনাব এ.কে.এম মুসলেম উদ্দিন এবং অংশগ্রহণকারী শিক্ষকবৃন্দের মধ্যে সহায়ক প্রধান প্রশিক্ষক নাজমুন আরাসহ উপস্থিত সকলেই পরিচয় পর্ব পদানের মাধ্যমে মূল কর্মশালাটি শুরু হয়। উল্লেখ্য যে, প্রধান প্রশিক্ষককে ফুল দিয়ে শুভেচ্ছা একে অপরের মধ্যে পরিচয় বিনিময় হয়।

কোন পদ্ধতি উপর বেশি গুরুত্বারোপ দিয়ে প্রশিক্ষণটি পরিচালিত হচ্ছে -এমনটা জানতে চাইলে তখন অংশগ্রহণকারী একজন বলেন, মন্টেসরি, উদ্যান ও রেজিও এমিলিয়া পদ্ধতিসমূহের মধ্যে 'প্লে বেজড লার্নিং'- এর উপর বেশি ফোকাস দেয়া হয়। রায়বাজার স.প্রা.বি. কর্মরত প্রশিক্ষণার্থী জনাব জহিরুল ইসলাম কোবাদ বলেন, সহকর্মীদের মধ্যে অভিজ্ঞতা বিনিময়ের মাধ্যমে প্রাপ্তজ্ঞান প্রয়োগ করা হলে শিখন-শেখানো প্রক্রিয়াটা বেশি কার্যকর হয়।

প্রশিক্ষণরত অপর একজন প্রশিক্ষণার্থী বলেন, সাব-ক্লাস্টার কর্মশালা হলো অন্তর্ভুক্তিমূলক একটি ব্যবস্থা যা শিক্ষকদের যেমন পেশাগত উন্নয়ন সাধন হয় তেমনি কর্মরত শিক্ষকবৃন্দের মধ্যে আন্ত:সম্পর্ক বৃদ্ধির কার্যকর আয়োজন হয় সৃষ্টি। তিনি আরো বলেন, এ ধরনের প্রশিক্ষণ মানবসম্পদ উন্নয়নে সহায়ক।

নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক একজন শিক্ষক বলেন, সুষ্ঠু সমাজব্যবস্থা গড়ে তোলার জন্য শিক্ষা খাতে পুঁজি বিনিয়োগের চেয়ে উৎকৃষ্ট বিনিয়োগ আর কিছু হতে পারে না। যার প্রতিফলনে মৌলিক অধিকার শিক্ষাকে আরো কার্যকররূপে রূপায়িত করতে সাব-ক্লাস্টার প্রশিক্ষণ প্রাথমিক শিক্ষা প্রসারে গুরুত্বপূর্ণ ভুমিকা পালন করে। কর্মশালার পাশাপাশি প্রাথমিক শিক্ষার মানোন্নয়ন ও আধুনিকীকরণে বিভিন্ন বাস্তবমুখী ও কার্যকর পদক্ষেপ গ্রহণ করা সমীচীন বলে দাবি করছেন বিদ্যালয় সংলগ্ন বাসিন্দা জনাব, রেজাউল করিম রানা। একই সুরে কথা বলেন অপর একজন অভিভাবক জনাব, জহিরুল উদ্দিন জহির (সহকারী সুপার, সরাতী হোসাইনিয়া দাখিল মাদ্রাসা)

১০৭নং দিঘালিয়া সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয় প্রধান শিক্ষিকা জনাব নাজুন আরা তার বিদ্যালয়ের পশ্চিম পাশে কোন প্রাচীর না থাকায় খেলাধুলা কার্যক্রম পরিচালনায় সমস্যার মুখোমুখি হোন বলে দাবি করেন। কারণ বিদ্যালয় মাঠঘেষা পশ্চিম পাশে একটি সংযোগ সড়ক রয়েছে। "অনবরত যান-বাহন চলাচল করার ফলে বিদ্যালয় মাঠে শিক্ষার্থীরা খেলাধুলা করতে পারে না।" কথাগুলো বলেছিলো- স্থানীয় পঞ্চম শ্রেনির এক শিক্ষার্থী।

উক্ত বিষয়ে দায়িত্বশীলদের দৃষ্টি আকর্ষণ করা হলে, উক্ত সমস্যাটি নোট করা আছে এবং আশু সমাধান হয়ে যাবে বলে আশাবাদ ব্যক্ত করেন।