বাংলাদেশ-ভারত সীমান্তে ক্রমাগত পুশইনের মাধ্যমে দেশের অভ্যন্তরে বিশৃঙ্খলা তৈরির চেষ্টা চালানো হচ্ছে বলে অভিযোগ করেছেন বিএনপির মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর। শুক্রবার (২০ জুন) রাতে ঠাকুরগাঁও শহরের কালিবাড়িস্থ নিজ বাসভবনে আয়োজিত এক নৈশভোজ অনুষ্ঠানে জেলার আলেম-ওলামাদের সঙ্গে মতবিনিময়কালে তিনি এ মন্তব্য করেন।

মির্জা ফখরুল বলেন, “আমাদের সামনে এখন একটি কঠিন সমস্যা দেখা দিয়েছে। ভারত সীমান্ত দিয়ে প্রতিনিয়ত পুশইন করছে—জনগণকে জোর করে বাংলাদেশে ঢুকিয়ে দিচ্ছে। এর পেছনে উদ্দেশ্য একটাই—দেশে বিশৃঙ্খলা সৃষ্টি করে বাংলাদেশ সরকারকে চাপে রাখা।”

তিনি দাবি করেন, এতদিন এই ধরনের ঘটনা ঘটেনি, কিন্তু বর্তমান রাজনৈতিক পটপরিবর্তনের প্রেক্ষিতে ভারত এ ধরনের কার্যক্রম শুরু করেছে। তাঁর ভাষায়, “যেহেতু আওয়ামী সরকার উৎখাত হয়েছে এবং শেখ হাসিনা ভারতে আশ্রয় নিয়েছেন, তাই তারা এসব নতুনভাবে শুরু করেছে।”

আলোচনায় মির্জা ফখরুল আওয়ামী লীগের শাসনামলে মাদ্রাসার ছাত্রদের নিয়ে 'জঙ্গি নাটক' সাজিয়ে হত্যার অভিযোগ তোলেন। তিনি বলেন, “র‌্যাবের মাধ্যমে পরিকল্পিতভাবে কিছু এতিম ছেলেকে জঙ্গি বানিয়ে তাদের হাতে লিফলেট তুলে দিয়ে হত্যা করা হয়েছে। আওয়ামী সরকার এ ধরনের হাজারো ঘটনা ঘটিয়েছে।”

তিনি আরও বলেন, “ছাত্র-জনতার অভ্যুত্থানের সময় যেভাবে আওয়ামী লীগ গুলি চালিয়ে মানুষ হত্যা করেছে, তেমন আরেকটি বড় হত্যাকাণ্ড তারা ঘটিয়েছিল ২০১৩ সালে শাপলা চত্বরে হেফাজতে ইসলামের ওপর। সেদিন রাতের আঁধারে মেশিনগান দিয়ে নির্বিচারে গুলি চালানো হয়েছিল।”

মির্জা ফখরুল বক্তব্যে সাম্প্রতিক রাজনৈতিক উত্তাপ এবং জনগণের আন্দোলন প্রসঙ্গেও কথা বলেন। তিনি বলেন, “অভ্যুত্থানের সময় যারা বুকের তাজা রক্ত দিয়েছে, তাদের রক্তের বিনিময়েই আমরা আজকের এই অবস্থানে এসেছি। আল্লাহ আমাদের একটি সুযোগ দিয়েছেন।”

তিনি দাবি করেন, বিএনপির ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান তারেক রহমান ও নোবেলজয়ী অর্থনীতিবিদ প্রফেসর ড. মুহাম্মদ ইউনূসের মধ্যে লন্ডনে একটি গুরুত্বপূর্ণ বৈঠক হয়েছে, যেখানে সম্ভাব্য নির্বাচনের সময় হিসেবে আগামী বছরের ফেব্রুয়ারি মাস নিয়ে আলোচনা হয়েছে।

“নির্বাচনের মাধ্যমে আমরা আমাদের প্রকৃত নেতাকে বেছে নেওয়ার সুযোগ পাবো,”—বলেন তিনি।

অনুষ্ঠানে আরও উপস্থিত ছিলেন ঠাকুরগাঁও জেলা বিএনপির সাধারণ সম্পাদক ও সাবেক পৌর মেয়র মির্জা ফয়সল আমিন, পৌর বিএনপির সাধারণ সম্পাদক শরিফুল ইসলাম শরীফসহ জেলার বিভিন্ন উপজেলার আলেম-ওলামারা।