নোয়াখালীর সোনাইমুড়ি উপজেলার অন্যতম ব্যস্ত সড়ক কলেজ রোড থেকে সাবেক মেয়র নুরুল হক ডিপি’র বাড়ি পর্যন্ত প্রায় এক কিলোমিটার রাস্তা বর্তমানে কাদা-পানি আর গর্তের রাজ্যে পরিণত হয়েছে। দীর্ঘদিনের অব্যবস্থাপনা ও সংস্কারের অভাবে রাস্তাটি এখন প্রায় চলাচলের অযোগ্য হয়ে পড়েছে।

এই সড়ক দিয়ে প্রতিদিন যাতায়াত করে প্রায় লক্ষাধিক মানুষ। এর মধ্যে অন্তত ৫ হাজার শিক্ষার্থী জীবনের ঝুঁকি নিয়ে যাতায়াত করছে। সড়কটির আশেপাশে রয়েছে সোনাইমুড়ি আইডিয়াল মাদ্রাসা, লাইফ শাইন স্কুল, সোনাইমুড়ি সরকারি কলেজ সহ একাধিক শিক্ষা প্রতিষ্ঠান। সকাল-বিকেল শিক্ষার্থীদের পদচারণায় এই রাস্তাটি মুখর থাকে। কিন্তু এখন বৃষ্টির পানি আর কাদার কারণে তাদের স্কুলে পৌঁছানো এক প্রকার যুদ্ধের সমান হয়ে দাঁড়িয়েছে।

রাস্তাটির করুণ চিত্রে দেখা যায়, বহু স্থানে ইট-বালু উঠে গিয়ে বড় বড় গর্ত তৈরি হয়েছে। সামান্য বৃষ্টি হলেই সেই গর্তগুলোতে জমে থাকে হাটু পরিমাণ পানি। কোথায় গর্ত আর কোথায় সমতল, সেটাও বোঝা যায় না। এতে ছোট সিএনজি, অটোরিকশা, মোটরসাইকেল প্রায়শই কাদায় আটকে পড়ে। এমনকি অনেক যাত্রী কাদা মাড়িয়ে হেঁটেই গন্তব্যে যেতে বাধ্য হন।

সবচেয়ে বিপদে পড়ছেন রোগীবাহী অ্যাম্বুলেন্স ও ফায়ার সার্ভিসের গাড়ি চালকরা। সড়কটি দিয়ে জরুরি ভিত্তিতে গাড়ি চালানো অত্যন্ত কঠিন। স্থানীয় এক বাসিন্দা জানান,

> “আমার মা অসুস্থ হয়ে পড়লে তাকে হাসপাতালে নিতে প্রায় আধা ঘণ্টা এই রাস্তার কাদা পেরোতেই লেগে যায়। যদি একটু দেরি হতো, বড় দুর্ঘটনাও ঘটতে পারতো।”

অন্যদিকে ব্যবসায়ীরাও ক্ষতিগ্রস্ত। কারণ বাজারের মালামাল নিয়ে এই রাস্তা দিয়ে সঠিক সময়ে দোকানে পৌঁছানো সম্ভব হয় না। এতে করে তাদের আর্থিক ক্ষতিও হচ্ছে।

এলাকাবাসীরা ক্ষোভ প্রকাশ করে বলেন,

> “আমরা বারবার জনপ্রতিনিধিদের বলেছি, ইউএনও অফিসে লিখিত অভিযোগও করেছি। তবুও এই রাস্তা সংস্কারের জন্য কোনো কার্যকর উদ্যোগ নেওয়া হচ্ছে না। কাদা-গর্তের মধ্যেই আমাদের সন্তানদের স্কুলে পাঠাতে হচ্ছে। অথচ আমাদের টাকায়ই রাস্তার ট্যাক্স দেয়া হয়।”

স্থানীয়রা জানান,

> এই রাস্তা দিয়ে প্রতিদিন আমিরাবাদ, মরিগঞ্জ, দেওটি, নান্দিয়াপাড়া, শিমুলিয়া, পাপুয়া, ভানুয়াই সহ বিস্তীর্ণ এলাকার মানুষ চলাচল করেন। তাই এটি শুধুমাত্র একটি গ্রামের রাস্তা নয়, বরং পুরো অঞ্চলের যোগাযোগের লাইফলাইন।

তাদের দাবি, অবিলম্বে এই গুরুত্বপূর্ণ সড়কটি পূর্ণাঙ্গভাবে পাকা করা হোক। যাতে শিক্ষার্থী, রোগী ও সাধারণ মানুষ স্বস্তিতে চলাফেরা করতে পারে।

 প্রশাসনের প্রতি আবেদন:

স্থানীয় জনগণ এবং অভিভাবকরা সোনাইমুড়ি উপজেলা প্রশাসন, এলজিইডি এবং স্থানীয় জনপ্রতিনিধিদের কাছে জোর দাবি জানিয়েছেন, এই গুরুত্বপূর্ণ রাস্তাটি দ্রুত সংস্কার ও পাকাকরণ কাজ শুরু করা হোক। যাতে আর কোনো রোগী বা শিক্ষার্থী কাদার কারণে ঝুঁকিতে না পড়ে, কিংবা ফায়ার সার্ভিসের মতো জরুরি গাড়ি বাঁধায় না পড়ে।