প্রিন্ট এর তারিখঃ জুলাই ৬, ২০২৫, ৪:৩০ পি.এম || প্রকাশের তারিখঃ জুলাই ৫, ২০২৫, ৫:১০ এ.এম
মেঘনার আতঙ্ক জনি: এক সময়ের মাদক কারবারি, এখন বালু খেকো সিন্ডিকেটের প্রধান অস্ত্রধারী

চাঁদপুরের মতলব উত্তর ও দক্ষিণ উপজেলায় মেঘনা নদীর তীরবর্তী এলাকায় ‘আতঙ্ক’ হিসেবে পরিচিত এক নাম—মো. জয়নাল আহমেদ জনি। এক সময়ে মাদক ব্যবসার মধ্য দিয়ে অপরাধ জগতে যাত্রা শুরু করলেও এখন সে রীতিমতো বালু সিন্ডিকেটের প্রধান ‘মাঠ সেনাপতি’। বালুমহাল দখল, নদীপথে চাঁদাবাজি, অবৈধ বালু উত্তোলন, নদী দখল—এমন কোনো অপকর্ম নেই যেখানে তার সরাসরি নেতৃত্ব নেই।
জয়নালের বিরুদ্ধে বিশেষ ক্ষমতা আইন, মাদকদ্রব্য নিয়ন্ত্রণ আইন দণ্ডবিধি অনুযায়ী অগ্নিসংযোগ, ভাঙচুর ও হুমকি সহ একাধিক মামলা রয়েছে তার বিরুদ্ধে। বিভিন্ন সময়ে মধ্যে কয়েকটি মামলায় সে ইতোমধ্যে গ্রেফতারও হয়েছে।
বিশেষ করে, ২০১৮ সাল থেকে ২০২৩ সাল পর্যন্ত সময়কালেই তার বিরুদ্ধে একাধিক মামলা রুজু হয় চাঁদপুরের মতলব উত্তর ও দক্ষিণ থানায়। এজাহারভুক্ত এসব মামলায় অভিযোগ রয়েছে—মাদক পাচার, আগুন লাগানো, হুমকি, চাঁদাবাজি ও বেআইনি সংগঠনের নেতৃত্বদান।
বর্তমানে জনি আলোচনার কেন্দ্রে এসেছে মূলত বালু খেকো কিবরিয়া মিয়াজির প্রধান সেনাপতি হিসেবে। মতলব উত্তর-মতলব দক্ষিণ থেকে শুরু করে হাইমচর ও আশপাশের মেঘনা নদীতে অবৈধভাবে বালু উত্তোলন ও নদীপথের নিয়ন্ত্রণ নেয়ার চেষ্টা করে যাচ্ছে এই সিন্ডিকেট। অভিযোগ রয়েছে, প্রতিদিন লক্ষ লক্ষ টাকার বালু অবৈধভাবে নদী থেকে উত্তোলন করে বিক্রি করা হচ্ছে, যার বড় অংশের দেখভাল করে জনি বাহিনী।
নদী পথে চলাচলকারী নৌযান মালিকদের অভিযোগ, নির্দিষ্ট পরিমাণ চাঁদা না দিলে জনির নির্দেশে তাদের নৌযানে হামলা, জিম্মি ও পণ্য লুটপাট পর্যন্ত করা হয়। এলাকার সাধারণ মানুষও তাদের ‘আতঙ্ক’ বলেই চেনে।
আইনের চোখ ফাঁকি দিয়ে বহাল তবিয়তে জনি, প্রশ্ন উঠছে—একাধিক মামলার আসামি, পরোয়ানাভুক্ত আসামি হওয়া সত্ত্বেও জনি কিভাবে প্রকাশ্যে ঘুরে বেড়ায়? কিভাবে সে বালু ব্যবসার মতো বিশাল নেটওয়ার্ক পরিচালনা করে?
স্থানীয়দের ভাষ্য, “জনি এখন শুধু অপরাধী না, সে নিজের বাহিনী গঠন করেছে, যেখানে অস্ত্রধারী যুবকেরা নদীপথে নজরদারির কাজ করে। নদী রক্ষা, পরিবেশ সংরক্ষণ ও আইনশৃঙ্খলার প্রশ্নে প্রশাসনের ভূমিকা নিয়েও উঠছে গুরুতর প্রশ্ন।
চাঁদপুরের মেঘনা এখন আর শুধু নদী নয়—একটি অপরাধ সাম্রাজ্যের রক্তক্ষয়ী উপত্যকা, যার অন্যতম নিয়ন্ত্রক জয়নাল আহমেদ জনি। প্রশাসনের নীরবতা আর জনির ঔদ্ধত্য মিলে এক ভয়ঙ্কর পরিস্থিতি তৈরি করেছে নদীপথে। এখন সময় এসেছে—এই 'বালু দস্যু' ও 'মেঘনার আতঙ্ক' জনির বিরুদ্ধে কঠোর আইনগত ব্যবস্থা নেয়ার।
মতলব উত্তর থানার অফিসার ইনচার্জ (ওসি) মো রবিউল হক জানান, ইতিমধ্যে অভিযানে আমরা বেশ কয়েকজন ডাকাত গ্রেপ্তার করেছি। জনি আমাদের নজরদারিতে রয়েছে। তাকে গ্রেপ্তারের জন্য প্রক্রিয়া চলছে।
Editor and Publisher : Ariful Islam
Address: Nikunja-2, Road No. 1/A Cemetery Road, Dhaka
Call: 8809639113691
E-mail: Ajkerkhobur@gmail.com
@2025 | Ajker-Khobor.com