প্রিন্ট এর তারিখঃ জুলাই ৫, ২০২৫, ৭:২১ পি.এম || প্রকাশের তারিখঃ জুলাই ৫, ২০২৫, ৬:০৭ এ.এম
রাজিবপুরে ইউপি চেয়ারম্যানের বিরুদ্ধে প্রকল্পের টাকা জালিয়াতির অভিযোগ, তদন্তে মিললো অনিয়মের প্রমাণ

কুড়িগ্রামের রাজিবপুরে সরকারি অর্থ আত্মসাতের ঘটনায় ফের আলোচনায় উঠে এসেছেন সদর ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান মিরন মোহাম্মাদ ইলিয়াস। তার বিরুদ্ধে প্রকল্প সভাপতি পরিবর্তন করে জাল স্বাক্ষরের মাধ্যমে সরকারি বরাদ্দ উত্তোলনের গুরুতর অভিযোগ উঠেছে। উপজেলা প্রশাসনের সরেজমিন তদন্তেও মিলেছে অনিয়মের প্রাথমিক সত্যতা।
সূত্র জানায়, রাজিবপুর সদর ইউনিয়নের ৪১ নম্বর প্রকল্প হিসেবে তালিকাভুক্ত "বালিয়ামারী মন্ডলপাড়া দারুল আরকাম ইবতেদায়ী মাদ্রাসার সংস্কার ও উন্নয়ন" কাজের জন্য উপজেলা নির্বাহী অফিসারের দপ্তর থেকে ১ লক্ষ ১৩ হাজার টাকা বরাদ্দ দেওয়া হয়। নিয়ম অনুযায়ী, প্রকল্পের সভাপতি হিসেবে দায়িত্ব দেওয়া হয় মাদ্রাসাটির প্রধান শিক্ষককে।
কিন্তু অভিযোগ রয়েছে, প্রকৃত সভাপতিকে না জানিয়ে চেয়ারম্যান মিরন মোহাম্মাদ ইলিয়াস একতরফাভাবে প্রকল্পের সভাপতির পদে অন্য প্রকল্পের আতাউর রহমান নামের একজনকে বসিয়ে দেন এবং তার নাম-স্বাক্ষর জাল করে প্রথম কিস্তির ৫৬ হাজার ৫০০ টাকা নিজের নিয়ন্ত্রণাধীন একাউন্টে উত্তোলন করেন। আশ্চর্যের বিষয়, বানানো সভাপতি আতাউর রহমান নিজেই জানিয়েছেন, তিনি এ বিষয়ে কিছুই জানতেন না।
ঘটনার পর ১ জুলাই মঙ্গলবার উপজেলা নির্বাহী অফিসার (ইউএনও) ফজলে এলাহীর কাছে বিষয়টি লিখিত ও মৌখিকভাবে অবগত করা হয়। ইউএনও বিষয়টির গুরুত্ব অনুধাবন করে দ্রুত উপজেলা প্রকল্প বাস্তবায়ন কর্মকর্তাকে সঙ্গে নিয়ে ঘটনাস্থল পরিদর্শনে যান এবং সংশ্লিষ্ট প্রকল্প ও কাগজপত্র যাচাই করে অভিযোগের প্রাথমিক সত্যতা পান।
এ বিষয়ে ইউএনও ফজলে এলাহী সাংবাদিকদের বলেন,
"অভিযোগ পাওয়ার পরপরই আমরা সরেজমিনে যাই এবং প্রকল্পের সভাপতির পরিবর্তন, জাল স্বাক্ষরের মাধ্যমে অর্থ উত্তোলনের বিষয়টি নিশ্চিত হই। শুধু এই প্রকল্পই নয়, চেয়ারম্যানের সংশ্লিষ্টতায় আরও ৮-১০টি প্রকল্পে একই ধরনের অনিয়ম ও আত্মসাতের তথ্য পাওয়া গেছে। আমরা বিস্তারিত তদন্ত করছি এবং আইনগত ব্যবস্থা নেওয়া হবে।"
এদিকে, এ ঘটনায় স্থানীয় একজন সমাজকর্মী ও এলাকাবাসীর পক্ষে এস. এম. রাফসানুর রোমাঞ্চ নামে এক ব্যক্তি রাজিবপুর ইউপি চেয়ারম্যান মিরন মোহাম্মাদ ইলিয়াসকে প্রধান অভিযুক্ত করে কুড়িগ্রাম জেলা প্রশাসকের বরাবর একটি লিখিত অভিযোগ দায়ের করেছেন।
অভিযোগপত্রে তিনি উল্লেখ করেন,
“একজন জনপ্রতিনিধির কাছ থেকে জনগণ সেবার আশা করে। কিন্তু চেয়ারম্যান মিরন ইলিয়াস বারবার ক্ষমতার অপব্যবহার করে ব্যক্তিস্বার্থে সরকারি অর্থ আত্মসাৎ করছেন। আমরা জেলা প্রশাসনের কাছে এর সুষ্ঠু তদন্ত ও দৃষ্টান্তমূলক শাস্তির দাবি জানাচ্ছি।”এদিকে ইউনিয়নের সাধারণ মানুষ ও অভিভাবকমহলে বিষয়টি নিয়ে তীব্র ক্ষোভ ও হতাশা বিরাজ করছে। অনেকেই মনে করছেন, এই দুর্নীতি চক্র ভেঙে দৃষ্টান্ত স্থাপন না করলে স্থানীয় সরকার ব্যবস্থার ওপর জনগণের আস্থা আরও কমে যাবে।
উল্লেখ্য, এর আগেও চেয়ারম্যান মিরন মোহাম্মাদ ইলিয়াসের বিরুদ্ধে বিভিন্ন প্রকল্পে স্বজনপ্রীতি, অনিয়ম এবং সরকারি তহবিলের অপব্যবহারের অভিযোগ উঠেছিল, যা এবার প্রশাসনের তদন্তে আনুষ্ঠানিকভাবে প্রমাণিত হলো।
সচেতনমহলের দাবি, এই ঘটনায় সুষ্ঠু বিচার ও দ্রুত ব্যবস্থা নেওয়া হলে অন্য জনপ্রতিনিধিরাও দায়িত্বশীল হতে বাধ্য হবেন, আর এতে স্থানীয় সরকার ব্যবস্থায় স্বচ্ছতা ও জবাবদিহিতা প্রতিষ্ঠা পাবে।
Editor and Publisher : Ariful Islam
Address: Nikunja-2, Road No. 1/A Cemetery Road, Dhaka
Call: 8809639113691
E-mail: Ajkerkhobur@gmail.com
@2025 | Ajker-Khobor.com