ময়মনসিংহের গৌরীপুর উপজেলার শাহগঞ্জ বাজারে জলাতঙ্কে আক্রান্ত ষাঁড় গরু গোপনে জবাই করে এক মাংস ব্যবসায়ীর কাছে বিক্রি করে দেন মালিক। পরে ওই মাংস ব্যবসায়ী ৭৮০ টাকা কেজি দরে গ্রাহকের কাছে বিক্রি করছিলেন। এমন অভিযোগে বুধবার (২৩ জুলাই) দুপুরে উপজেলা সহকারি কমিশনার (ভূমি) ও নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেট সুনন্দা সরকার প্রমার নেতৃত্বে ভ্রাম্যমান আদালত পরিচালনা করে দোকনটি সিলগালা করে দেয়া হয়।
অভিযুক্ত মাংস ব্যবসায়ীর নাম রানা আহমেদ কদ্দুস। জলাতঙ্ক আক্রান্ত গরুর মালিক সোলায়মান। তার বাড়ি উপজেলার বোকাইনগর ইউনিয়নের ইয়ারপুর গ্রামে।
স্থানীয়সূত্রে জানা গেছে, উপজেলার বোকাইনগর ইউনিয়নের ইয়ারপুর গ্রামের বাসিন্দা সোলায়মান নিজ বাড়িতেই শাহীওয়াল জাতের একটি ষাঁড় গরু লালন-পালন করছিলেন। সম্প্রতি গরুটি অসুস্থ হলে তিনি উপজেলা প্রাণিসম্পদ ও ভেটেরিনারী হাসপাতালের শরণাপন্ন হন। উপজেলা প্রাণিসম্পদ কর্মকর্তা ডা. শিহাব উদ্দিন গরুটির চিকিৎসার জন্য ইয়ারপুর গ্রামে তার বাড়িতে যান। অসুস্থ গরুটির শরীরিক লক্ষণ দেখে প্রাণিসম্পদ কর্মকর্তা গরুর মালিককে জানান গরুটি জলাতঙ্ক রোগে আক্রান্ত হয়েছে। তাৎক্ষণিকভাবে গরুর মালিককে টিকা দিয়ে গরুটিকে আলাদা রাখার পরামর্শ দেন। সেইসাথে গরুটি বিক্রি বা জবাই না করার জন্যও নিষেধ করেন।
উপজেলা প্রাণিসম্পদ কর্মকর্তার নিষেধ অমান্য করে গত মঙ্গলবার রাতে সোলায়মান গোপনে গরুটি উপজেলার অচিন্তপুর ইউনিয়নের শাহগঞ্জ বাজারের বিসমিল্লাহ মাংসের দোকানের মালিক রানা আহমেদ কদ্দুসের কাছে বিক্রি করে দেন। তিনি ৭৮০টাকা কেজি দরে মাংস বিক্রি করলে বিষয়টি জানাজানি হয়। খবর পেয়ে উপজেলা প্রশাসনের ভ্রাম্যমাণ আদালত বুধবার দুপুরে অভিযানে যায়। অভিযানের সময় মাংস বিক্রেতা রানা আহমেদ কদ্দুস পালিয়ে যান। পরে ভ্রাম্যমান আদালতের নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেট ও সহকারি কমিশনার (ভূমি) সুনন্দা সরকার প্রমা দোকানটি সিলগালা করে দেয়।
এ বিষয়ে গরুর মালিক সোলায়মান বলেন, “আমার গরু বাতাইছে (বাত রোগে) আক্রান্ত ছিল। আমি পাইকারের কাছে বিক্রি করে দিয়েছি।”
অন্যদিকে, মাংস ব্যবসায়ী রানা আহমেদ কদ্দুস বলেন, “গরুটি জলাতঙ্কে আক্রান্ত ছিল সেটা আমি জানতাম না। মালিক বলেছে গরুটি তিনদিন ধরে খায় না। আমি ২৫ হাজার টাকায় গরুটি কিনেছি। স্থানীয় চেয়ারম্যান সাহেব গরুর মাংস বিক্রি করতে নিষেধ করায় আমি মাংস বিক্রি বন্ধ করি। আমি বিশিউড়া বাজারে গরু কিনতে এসেছি। দোকান থেকে পালিয়ে গেছি এই কথা সত্য নয়।”
উপজেলা প্রাণিসম্পদ কর্মকর্তা ডা. শিহাব উদ্দিন বলেন, “আমি গরুর মালিককে গরুটি জবাই বা বিক্রি করতে নিষেধ করেছিলাম। পরে শুনি গরুটি জবাই করে বিক্রি করে দিয়েছেন। মাংসের দোকানে ভ্রাম্যমান আদালত পরিচালনা করে দোকান সিলগালা করা হয়েছে। আমাদের আসার খবর পয়ে মাংস বিক্রেতা পালিয়ে যান। বিক্রিত গরুর মাংস জনসাধারণকে না খেতে প্রশাসনের পক্ষ থেকে প্রচারণা চালানো হয়েছে। দুজন গ্রাহক ক্রয়কৃত মাংস ফেরত দিয়ে গেছেন। এই বিষয়ে আইনানুগ ব্যবস্থা নেয়ার প্রস্তুতি চলছে।”
নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেট সুনন্দা সরকার প্রমা বলেন, “অসুস্থ গরুর মাংস বিক্রির অভিযোগে আমরা অভিযান চালিয়ে দোকান সিলগালা করেছি। অভিযানের সময় দোকান মালিক পালিয়ে যাওয়া তাকে পাওয়া যায়নি। বিষয়টি নিয়ে উপজেলা প্রাণিসম্পদ কর্মকর্তাকে নিয়মিত মামলা দায়েরের নির্দেশ দেওয়া হয়েছে।”
Editor and Publisher : Ariful Islam
Address: Nikunja-2, Road No. 1/A Cemetery Road, Dhaka
Call: 8809639113691
E-mail: Ajkerkhobur@gmail.com
@2025 | Ajker-Khobor.com