প্রিন্ট এর তারিখঃ জুন ১৮, ২০২৫, ৩:৫৮ এ.এম || প্রকাশের তারিখঃ মার্চ ১৮, ২০২৫, ৯:৩৮ এ.এম
দীর্ঘ প্রতীক্ষার পর অবশেষে যমুনা নদীর ওপর নির্মিত দেশের দীর্ঘতম রেল সেতুর উদ্বোধন

রাজধানী ঢাকার সঙ্গে উত্তর-পশ্চিমাঞ্চলের যোগাযোগ ব্যবস্থায় নতুন সম্ভাবনার দ্বার খোলার প্রত্যয় নিয়ে চালু হলো দেশের বৃহত্তম রেলওয়ে সেতু “যমুনা রেলসেতু”। আনুষ্ঠানিক উদ্বোধনের পর উত্তাল যমুনার বুক দিয়ে ১২০ কিলোমিটার গতিতে চলবে ট্রেন। মঙ্গলবার (১৮ মার্চ) দুপুর ১২টার দিকে টাঙ্গাইলের ভুয়াপুর ইব্রাহিমবাদ স্টেশন থেকে স্পেশাল ট্রেন পশ্চিম পার সিরাজগঞ্জের সয়দাবাদ স্টেশনে পারাপারের মধ্য দিয়ে সেতুটির আনুষ্ঠানিক উদ্বোধন করা হয়। এ সেতুটি উদ্বোধনের মাধ্যমে রাজধানী ঢাকার সঙ্গে উত্তর-পশ্চিমাঞ্চলের যোগাযোগ ব্যবস্থায় নতুন সম্ভাবনার দ্বার উন্মোচিত হলো। উদ্বোধনী ট্রেনটি ১২০ কিলোমিটার গতিতে সেতু পার হয়। ৪.৮ কিলোমিটার মূল সেতু পার হতে ৩ মিনিট ২১ সেকেন্ড সময় লাগে। এর আগে সকাল সাড়ে ১০টায় ইব্রাহিমাবাদ রেল স্টেশনে চত্বরে উদ্বোধনী অনুষ্ঠানের আয়োজন করা হয়। এতে প্রধান অতিথি হিসেবে বক্তব্য দেন রেলপথ মন্ত্রণালয়ের সচিব মো. ফাহিমুল ইসলাম। বাংলাদেশ রেলওয়ের মহাপরিচালক মো. আফজাল হোসেনের সভাপতিত্বে বিশেষ অতিথি হিসেবে বক্তব্য দেন ঢাকায় নিযুক্ত জাপানি রাষ্ট্রদূত সাইদা শিনিচি এবং জাপানের বৈদেশিক উন্নয়ন সংস্থা জাইকার দক্ষিণ এশিয়া বিষয়ক মহা-পরিচালক ইতো তেরুয়ুকি। স্বাগত বক্তব্য রাখেন প্রকল্প পরিচালক আল ফাত্তাহ মাসুদুর রহমান। উদ্বোধনী অনুষ্ঠানে বাংলাদেশ রেলওয়ের ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তা, জাইকার কর্মকর্তা এবং সিরাজগঞ্জ ও টাঙ্গাইল জেলার জেলা প্রশাসক, পুলিশ সুপারসহ ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তারা উপস্থিত ছিলেন। উদ্বোধন শেষে ১২ টা ২০ মিনিটে যমুনা সেতুর পশ্চিম পাড়ে সয়দাবাদ রেলওয়ে স্টেশনে সাংবাদিক সন্মেলনে বক্তব্য রাখেন, বক্তব্য দেন রেলপথ মন্ত্রণালয়ের সচিব মো. ফাহিমুল ইসলাম। যমুনা রেলসেতু কর্তৃপক্ষ জানায়, জাপান ও বাংলাদেশ সরকারের যৌথ অর্থায়নে ৪.৮ কিলোমিটার দৈর্ঘ্যের এ প্রকল্পটির ব্যয় ১৬ হাজার ৭৮০ কোটি ৯৬ লাখ টাকা। এর মধ্যে ২৭ দশমিক ৬০ শতাংশ অর্থায়ন এসেছে দেশীয় উৎস থেকে এবং ৭২ দশমিক ৪০ শতাংশ ঋণ দিয়েছে জাপান ইন্টারন্যাশনাল কো-অপারেশন এজেন্সি-জাইকা। জাপানি ৫টি ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠান প্রকল্পটি বাস্তবায়ন করে। জাপান, ভিয়েতনাম, নেপাল, অস্ট্রেলিয়া, ফিলিপাইন ও বাংলাদেশের ৭ হাজারেরও বেশি কর্মীর টানা ৪ বছরের পরিশ্রমে সেতুটির নির্মাণকাজ শেষ হয়। সেতুটিতে ৫০টি পিলার, প্রতি দুই পিলারের মাঝে একটি করে মোট ৪৯টি স্প্যান রয়েছে। মূল সেতুর দৈর্ঘ্য ৪.৮ কিলোমিটার হলেও দুদিকে ৭ দশমিক ৬৬৭ কিলোমিটার রেলওয়ে অ্যাপ্রোচ এমব্যাংকমেন্ট এবং লুপ, সাইডিংসহ মোট ৩০ দশমিক ৭৩ কিলোমিটার রেললাইন স্থাপন করা হয়েছে। যমুনা রেলসেতু প্রকল্পের প্রধান প্রকৌশলী তানভীরুল ইসলাম বলেন, সমান্তরাল ডুয়েল গেজ ডাবল ট্র্যাকের এ সেতুর প্রতিটি স্প্যানের ওপর জাপানিদের অত্যাধুনিক প্রযুক্তির রেললাইন বসানো হয়েছে। এর ফলে সেতুর ওপর দিয়ে ঘণ্টায় ১২০ কিলোমিটার বেগে ট্রেন চলাচল করতে পারবে। তিনি বলেন, নির্মিত এই সেতুটি ঢাকার সঙ্গে উত্তর-পশ্চিমাঞ্চলের রেল যোগাযোগে নতুন দিগন্ত সূচনা করবে। ঢাকার সঙ্গে রাজশাহী, রংপুর ও খুলনা অঞ্চলের রেল যোগাযোগে বর্তমান যে বিড়ম্বনা রয়েছে সেটা আর থাকবে না। সেতুটি দিয়ে প্রতিদিন অন্তত ৮৮টি যাত্রীবাহী ও মালবাহী ট্রেন চলাচল করবে। কমে যাবে পরিবহন খরচও। সেই সঙ্গে মহাসড়কের ওপর চাপও অনেকটা কমে আসবে। উত্তরবঙ্গ থেকে বিভিন্ন পণ্য সহজেই ঢাকাসহ সারাদেশ রপ্তানি করা সম্ভব হবে।
Editor and Publisher : Ariful Islam
Address: Nikunja-2, Road No. 1/A Cemetery Road, Dhaka
Call: 8809639113691
E-mail: Ajkerkhobur@gmail.com
@2025 | Ajker-Khobor.com