চারপাশে ইট-পাথরের দেয়াল, মাথার ওপর বহুতল ভবন, আর মাঝখানে একটুকরো মাঠ, ঠিক সেখানেই এক সন্ধ্যায় যেন ফুটে উঠেছিল হাজারো স্বপ্নের আলো। স্থান - গাজীপুরের কোনাবাড়ি আমবাগ পশ্চিম পাড়া। আয়োজন - স্থানীয় ব্যবসায়ী কল্যাণ সমিতি। আর উপলক্ষ - মিনি ফুটবল টুর্নামেন্টের জমজমাট ফাইনাল ম্যাচ।
গত ২৫ জুলাই আয়োজিত এই ম্যাচে মুখোমুখি হয় জামালপুর ফুটবল একাদশ বনাম গাজীপুর ফুটবল একাদশ। ছোট মাঠ, প্রতি দলে মাত্র পাঁচজন করে খেলোয়াড়, কিন্তু উত্তেজনা ছিল গগনচুম্বী।
খেলার নির্ধারিত সময় ছিল ৬০ মিনিট। প্রথমার্ধের ৩০ মিনিটেই গাজীপুর একাদশ প্রথম গোল করে এগিয়ে যায়। বিরতির পর আরও হাড্ডাহাড্ডি লড়াই, এবং শেষ মুহূর্তে আবারও এক গোল করে জয় নিশ্চিত করে গাজীপুর। ফলাফল গাজীপুর ২ - জামালপুর ০।পুরো মাঠজুড়ে তখন উৎসবের আমেজ। চারপাশের বাড়ির বারান্দা, জানালা, এমনকি গলিপথে দাঁড়িয়ে থাকা মানুষের উল্লাসে কেঁপে উঠেছিল এই শান্ত পাড়া।
বিজয়ী দল পায় একটি ৩২ ইঞ্চি স্মার্ট LED টিভি, আর রানার্সআপ জামালপুর দলকে দেওয়া হয় এক বিশাল ৩২ ইঞ্চির টফি - রসিকতা হলেও ভালোবাসা আর সম্মানের দৃষ্টান্ত হয়ে থাকবে এটি। প্রতিটি খেলোয়াড়ের গলায় পরিয়ে দেওয়া হয় মেডেল। মাঠ তখন এক আবেগঘন প্রাপ্তির চিত্রপটে পরিণত হয়।
এই আয়োজনে প্রধান অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন
বেলায়েত হোসেন বুলাল - বিশিষ্ট ঝুট ব্যবসায়ী, সমাজসেবক এবং বগারচর ইউনিয়ন বিএনপির সিনিয়র সহ-সভাপতি।
তার বক্তব্যে উঠে আসে এক জরুরি সামাজিক বার্তা।
তিনি অভিভাবকদের উদ্দেশ্যে বলেন, অপ্রাপ্তবয়স্ক সন্তানের হাতে স্মার্টফোন তুলে না দিয়ে, তাদের মাঠমুখী করতে হবে। মাঠে খেললে মন ভালো থাকে, শরীরও ভালো থাকে। এছাড়াও তিনি তরুণদের মাদক থেকে দূরে থাকার আহ্বান জানান, মাদক নয়, মাঠ হোক তাদের আশ্রয়। খেলাধুলাই পারে তরুণদের গড়ে তুলতে।
যে মাঠটিকে হয়তো কেউ গোনায় ধরতো না, সেটাই হয়ে উঠেছিল জীবনের একটা বড় মঞ্চ। জামালপুর ও গাজীপুর দুই জেলার মানুষের অংশগ্রহণ ও সমর্থন দেখিয়ে দিল খেলাধুলা পারে দূরত্ব কমাতে, হৃদয় কাছাকাছি আনতে।