বিভিন্ন ধরণের অনিয়ম, আর্থিক কেলেঙ্কারি ও বিদ্যালয় পরিচালনায় ব্যর্থতার অভিযোগে মাগুরা জেলার শ্রীপুর উপজেলার ঐতিহ্যবাহী নাকোল রাইচরণ মাধ্যমিক বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক আবদুল মান্নানকে সাময়িক বরখাস্ত করা হয়েছে।
একই সাথে বিদ্যালয়ের সহকারী প্রধান শিক্ষক মুনীর হোসেনকে ভারপ্রাপ্ত প্রধান শিক্ষক হিসেবে দায়িত্ব দেওয়া হয়েছে।
রবিবার (৩ আগস্ট ২০২৫) বিদ্যালয় পরিচালনা পর্ষদের সাধারণসভার সিদ্ধান্ত মোতাবেক প্রধান শিক্ষক শেখ আবদুল মান্নানকে সাময়িকভাবে বরখাস্ত করা হয়েছে বলে নাকোল রাইচরণ মাধ্যমিক বিদ্যালয়ের পরিচালনা পরিষদ সূত্রে জানা গেছে।
বিদ্যালয়ের অভ্যন্তরীণ অডিট কমিটির রিপোর্টের ভিত্তিতে বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক শেখ আবদুল মান্নানের বিরুদ্ধে আর্থিক অনিয়ম, ব্যাংকে টাকা জমা না দিয়ে নগদ অর্থ হাতে রেখে ইচ্ছামত খরচ করা, অর্থ আত্মসাৎ ও তছরুপ করা, শিক্ষার্থীদের বৃত্তির টাকা না দিয়ে খরচ করা, নিয়ম-নীতি লঙ্ঘন, বিদ্যালয় পরিচালনায় সম্পূর্ণরূপে ব্যর্থতা, দায়িত্ব অবহেলার অভিযোগ উত্থাপিত হয়। যার কারণে তাকে কারণ দর্শানোর নোটিশ দেওয়া হয় কিন্তু তিনি তার সন্তোষজনক জবাব দিতে ব্যর্থ হওয়ায় বিদ্যালয় পরিচালনা পরিষদের সিদ্ধান্ত মোতাবেক শেখ আবদুল মান্নানকে প্রধান শিক্ষকের পদ থেকে সাময়িকভাবে বরখাস্ত করে বিদ্যালয়ের সহকারী প্রধান শিক্ষক মুনীর হোসেনকে ভারপ্রাপ্ত প্রধান শিক্ষকের দায়িত্ব দেয়া হয়েছে।
এ বিষয়ে নাকোল রাইচরণ মাধ্যমিক বিদ্যালয়ের পরিচালনা পরিষদের এতহক কমিটির সভাপতি মির্জা ওয়ালিদ হোসাইন ঘটনার সত্যতা স্বীকার করে জানান, বিদ্যালয় পরিচালনা পরিষদের সিদ্ধান্ত মোতাবেক শেখ আবদুল মান্নানকে সাময়িক বরখাস্ত করা হয়েছে। পাশাপাশি স্থায়ীভাবে কেনো বহিস্কার করা হবে না এ মর্মে ১৫ কার্যদিবসের মধ্যে জবাব প্রদানের বিষয়ে তাকে লিখিতভাবে অবগত করা হয়েছে।
উল্লেখিত সময়ের মধ্যে সন্তোষজনক জবাব দিতে ব্যর্থ হলে এবং এ বিষয়ে গঠিত তদন্ত কমিটি কর্তৃক দোষী প্রমাণিত হলে তাকে প্রধান শিক্ষকের পদ থেকে স্থায়ীভাবে বরখাস্ত করার ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে। এছাড়া আগামী তিন দিনের মধ্যে বিদ্যালয়ের যাবতীয় কাগজপত্র, আয়-ব্যয়ের হিসাব ও অন্যান্য তথ্যাদি ভারপ্রাপ্ত প্রধান শিক্ষককে বুঝিয়ে দেওয়ার জন্য নির্দেশ প্রদান করা হয়েছে বলেও তিনি জানান।
উল্লেখ, ২০২৪ সালের ৭ ফেব্রুয়ারি বিদ্যালয়ের প্রাক্তন প্রধান শিক্ষক রফিকুল আলা অবসরে যাওয়ার পর ভারপ্রাপ্ত প্রধান শিক্ষক হিসেবে দায়িত্ব দেওয়া হয় বিদ্যালয়ের সহকারি প্রধান শিক্ষক মুনীর হোসেনকে। কিন্তু তৎকালিন সভাপতি শ্রীপুর উপজেলা আওয়ামী লীগ সাধারণ সম্পাদক হুমাউনুর রশিদ মুহিত কোনো প্রকার কারণ দর্শানো নোটিশ ছাড়াই মুনীর হোসেনকে সাময়িকভাবে বরখাস্ত করে অনিয়মতান্ত্রিকভাবে সুবর্ণা জামান নামে একজন সহকারী শিক্ষককে দায়িত্ব দেন। শুধু তাই নয় একই তারিখে নিয়োগ বোর্ড গঠন করে শেখ আবদুল মান্নানকে প্রধান শিক্ষকের দায়িত্ব দেয়া হয়।
এদিকে ৮ এপ্রিল প্রধান শিক্ষকের দায়িত্ব গ্রহণের পর থেকেই শেখ আবদুল মান্নান নানা অনিয়ম দূর্ণীতিতে জড়িয়ে পড়েন বলে অভিযোগ ওঠে। নিয়োগের প্রথম ১০ মাসেই তিনি বিদ্যালয় ফাণ্ডের ২৪ লক্ষ ২৪ হাজার ৪৮৩ টাকা ব্যাংকে জমা না করে বিভিন্ন ধরণের কাল্পনিক ভাউচারের মাধ্যমে স্কুল ফান্ডের টাকা তসরুপসহ বিভিন্ন অভিযোগে তাকে কারণ দর্শানো নোটিশ দেয়া হয়।
Editor and Publisher : Ariful Islam
Address: Nikunja-2, Road No. 1/A Cemetery Road, Dhaka
Call: 8809639113691
E-mail: Ajkerkhobur@gmail.com
@2025 | Ajker-Khobor.com