প্রিন্ট এর তারিখঃ অগাস্ট ৫, ২০২৫, ৭:৩৯ পি.এম || প্রকাশের তারিখঃ অগাস্ট ৫, ২০২৫, ৬:৪৭ এ.এম
সড়ক অর্ধসমাপ্ত, কাজ ফেলে ‘গায়েব’ ঠিকাদার, দুর্ভোগে মতলববাসী

চাঁদপুরের মতলব উত্তর উপজেলায় শ্রীরায়েরচর-ছেংগারচর সড়ক উন্নয়ন প্রকল্পে কাজের অগ্রগতি থমকে গেছে। ২৬ কোটি টাকার এই প্রকল্পে নির্ধারিত সময় পার হলেও এখনও প্রায় এক চতুর্থাংশ কাজ অসমাপ্ত। ৫ আগস্টের-২৪ পর থেকে নির্মাণ কাজ পুরোপুরি বন্ধ রয়েছে। স্থানীয়রা অভিযোগ করছেন, ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠান 'তমা কনস্ট্রাকশন এন্ড কোম্পানি লিমিটেড ও এম. এ. জাহের লিমিটেড (জেবি)' কাজ ফেলে লোকজনসহ গা-ঢাকা দিয়েছে। ফলে জনগুরুত্বপূর্ণ এই সড়ক এখন গর্ত, ধুলাবালি ও কর্দমাক্ত দুর্ভোগের প্রতীক হয়ে দাঁড়িয়েছে।
সরেজমিনে দেখা যায়, রাস্তায় সৃষ্টি হয়েছে অসংখ্য গর্ত। বৃষ্টির সময় পুরো সড়ক কাদায় ঢেকে যায়, আর শুকনো দিনে ধুলোর ঝড় ওঠে। স্কুলপড়ুয়া শিক্ষার্থী থেকে শুরু করে রোগী, শ্রমজীবী মানুষ এবং চালক সবাই চরম দুর্ভোগে।
এই সড়কটি শুধু মতলববাসীর নয়, বরং চাঁদপুর, লক্ষ্মীপুর, নোয়াখালী, ফেনী ও চট্টগ্রাম অভিমুখে যোগাযোগের জন্য গুরুত্বপূর্ণ এই মহাসড়ক। শুরুতে এর মাধ্যমে ঢাকা-চট্টগ্রাম মহাসড়কের সঙ্গে আরও সংযোগ বাড়ানোর প্রত্যাশা থাকলেও বাস্তবে কাজ আটকে পড়ায় সব স্বপ্ন এখন প্রশ্নবিদ্ধ।
অটোরিকশা চালক ইসমাইল হোসেন বলেন, এই রাস্তায় ধুলায় চোখে কিছু দেখা যায় না। আবার বৃষ্টি হলে কাদায় আটকে যায় গাড়ি। কখনো পিছলে পড়ে দুর্ঘটনাও ঘটে।
দেওয়ানজীকান্দির বাসিন্দা রোগী দিপালী আক্তার বলেন, হাসপাতালে যেতে গিয়ে ঝাঁকুনিতে আমার বাচ্চা ভয় পেয়ে চিৎকার করে। গর্ভবতী নারীদের জন্য এ রাস্তায় চলাফেরা করা খুব বিপজ্জনক।
স্থানীয়রা বলছেন, কাজ শুরুতেই ধীরগতির কারণে আশানুরূপ উন্নয়ন হয়নি। এখন তো কাজ পুরোপুরি বন্ধ। অবিলম্বে ঠিকাদারের চুক্তি বাতিল করে নতুন ঠিকাদার নিয়োগ দিয়ে সড়কটি শেষ না করলে দুর্ভোগ আরও বাড়বে।
উপজেলা স্বাস্থ্য ও পরিবার পরিকল্পনা কর্মকর্তা ডা. মাহবুবুর রহমান জানান, এটাই একমাত্র রাস্তা উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে আসার জন্য। এমন রাস্তায় রোগীরা মারাত্মক সমস্যায় পড়ছেন।
সড়ক ও জনপথ বিভাগ (সওজ) সূত্রে জানা গেছে, শ্রীরায়েরচর থেকে ছেংগারচর পর্যন্ত সড়কের মোট দৈর্ঘ্য ১০.৫ কিলোমিটার। এর মধ্যে মাত্র ৫.২ কিলোমিটার কার্পেটিং শেষ হয়েছে। বাকি ৪.৮ কিলোমিটারে কাজের কোনো অগ্রগতি নেই। নির্মাণ সামগ্রী ফেলে রাখলেও কোনো শ্রমিক বা প্রকৌশলীর দেখা নেই ১ বছর ধরে।
চাঁদপুর সওজ বিভাগের উপ-সহকারী প্রকৌশলী মোস্তাফিজুর রহমান জানান, ঠিকাদার এবং তার কোনো প্রতিনিধিকে খুঁজে পাওয়া যাচ্ছে না। আড়াই মাস আগে কাজ বাতিলের প্রস্তাবনা পাঠিয়েছি। ইতোমধ্যে যে কাজ হয়েছে, তাও আংশিক ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে।উপ-বিভাগীয় প্রকৌশলী আনোয়ার হোসেনও বলেন, উর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষ চুক্তি বাতিল করলে নতুন করে টেন্ডারের মাধ্যমে কাজ শুরু করতে পারব।
উপজেলা নির্বাহী অফিসার (ইউএনও) মাহমুদা কুলসুম মনি বলেন, এটি একটি গুরুত্বপূর্ণ সড়ক। উপজেলা পরিষদ ও উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্স এই সড়কের সঙ্গে সংযুক্ত। আমি বিষয়টি নিয়ে সংশ্লিষ্ট দপ্তরের সঙ্গে কথা বলেছি। জনস্বার্থে দ্রুত নির্মাণকাজ শেষ করা প্রয়োজন।
Editor and Publisher : Ariful Islam
Address: Nikunja-2, Road No. 1/A Cemetery Road, Dhaka
Call: 8809639113691
E-mail: Ajkerkhobur@gmail.com
@2025 | Ajker-Khobor.com