প্রিন্ট এর তারিখঃ জুন ২৪, ২০২৫, ৩:০৫ পি.এম || প্রকাশের তারিখঃ এপ্রিল ১৫, ২০২৫, ৯:৩৬ এ.এম
বেগম রোকেয়া বিশ্ববিদ্যালয়ে শিক্ষক-ছাত্রী কথোপকথনের অডিও ফাঁস, তোলপাড় শিক্ষাঙ্গনে

বেগম রোকেয়া বিশ্ববিদ্যালয়, রংপুরের (বেরোবি) রাষ্ট্রবিজ্ঞান বিভাগের বিভাগীয় প্রধান ও পরীক্ষা নিয়ন্ত্রক ড. মো. তানজিউল ইসলাম জীবনের কণ্ঠসদৃশ এক ব্যক্তির সঙ্গে এক নারী শিক্ষার্থীর কথোপকথনের অডিও ক্লিপ সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে ছড়িয়ে পড়ায় বিশ্ববিদ্যালয়জুড়ে সৃষ্টি হয়েছে তোলপাড়। অডিওতে পরীক্ষার ফল পরিবর্তন, নম্বর বাড়ানো এবং ব্যক্তিগত সম্পর্কের ইঙ্গিত উঠে আসায় শিক্ষক-শিক্ষার্থী মহলে ছড়িয়ে পড়েছে ক্ষোভ ও উদ্বেগ। শিক্ষার্থীদের পক্ষ থেকে দ্রুত তদন্ত ও দৃষ্টান্তমূলক ব্যবস্থা গ্রহণের দাবি জানানো হয়েছে। রবিবার (১৩ এপ্রিল) রাতে ‘সাদিয়া সুভা’ নামে একটি ফেসবুক আইডি থেকে তিনটি অডিও ক্লিপ ফেসবুকে ছড়িয়ে পড়ে। একটিতে ছাত্রীকে বলতে শোনা যায়, “আমি একদম চুপচাপ আছি, কারো সঙ্গে আপনার সম্পর্কে খারাপ কিছু বলিনি।” অপরদিকে শিক্ষক কণ্ঠসদৃশ একজন বলছেন, “তুমি চাইছিলা ‘স্যার আমাকে ফার্স্ট করে দেন’, আমি দিতে পারতাম” অন্য একটি অডিওতে ছাত্রী অসুস্থতার কথা জানিয়ে বলেন, “মাঝখানে অসুস্থ হয়ে গিয়েছিলাম, যা কথা ছিল সেটাই হবে।” এর আগে ‘সাদিয়া সুভা’ নামের ফেসবুক আইডি থেকে স্ট্যাটাস দিয়ে শিক্ষক তানজিউল ইসলামের বিরুদ্ধে নারী শিক্ষার্থীদের প্রতি মানসিক ও শারীরিক নির্যাতনের অভিযোগ তোলা হয়। অভিযোগে বলা হয়, শিক্ষক তানজিউল ছাত্রীদের নম্বর বাড়িয়ে দেওয়ার আশ্বাস ও বিভিন্ন প্রলোভনের মাধ্যমে কুপ্রস্তাব দিয়ে থাকেন। এতে আরও উল্লেখ করা হয়, তার বিরুদ্ধে মুখ খুলতে সাহস পান না অনেক শিক্ষার্থী কারণ তিনি নম্বর কমিয়ে দেওয়ার হুমকি দেন। অভিযোগকারীর স্ট্যাটাসে মন্তব্য করে শিক্ষার্থী সাজিয়া করিম লেখেন, “ঘাড়ত্যাড়া টিচার মানা যায় কিন্তু চরিত্রহীন না।” শিক্ষার্থী জাহিরুল ইসলাম বলেন, “রক্ষকই যদি হয় ভক্ষক তাহলে কিছু বলার অপেক্ষা রাখে না। দ্রুত তদন্ত কমিটি গঠন করে ব্যবস্থা নেওয়ার দাবি জানাচ্ছি।” অন্যদিকে, অডিও ক্লিপে যাকে ছাত্রী হিসেবে সন্দেহ করা হচ্ছে সেই আফসানা নূর বর্ষা তার ব্যক্তিগত ফেসবুক স্ট্যাটাসে অভিযোগ অস্বীকার করে বলেন, “গুজবে আমরা আজকাল অনেক বিশ্বাস করি। আমি গ্রামিণফোন সেন্টারে জব করতাম সেটা শিক্ষকের পরামর্শেই। আমার অনার্সে রেজাল্ট ৩.২০ এবং মাস্টার্সে ৩.৫৬। এটা কি এমন কিছু যাতে আমি বিশ্ববিদ্যালয়ের কোনো উঁচু পদে চলে গেছি? একজন শিক্ষক যদি রেজাল্ট নির্ধারণ করতেন তাহলে বাকিদের রেজাল্ট কেমন হলো?” তিনি আরও বলেন, “যদি কেউ প্রমাণ করতে পারেন যা বলা হচ্ছে সত্য, আমি সব শাস্তি মাথা পেতে নেব। কিন্তু যারা মিথ্যা অপপ্রচার চালাচ্ছে তাদের শাস্তি আল্লাহ দেবেন।” অভিযুক্ত শিক্ষক ড. তানজিউল ইসলাম জীবন এ ঘটনায় রংপুরের তাজহাট থানায় সাধারণ ডায়েরি (জিডি) করেছেন। তিনি অভিযোগে উল্লেখ করেন, ‘সাদিয়া সুভা’ নামের একটি ভুয়া ফেসবুক আইডি থেকে তার বিরুদ্ধে কুরুচিপূর্ণ ও মিথ্যা তথ্য ছড়ানো হয়েছে। তিনি দাবি করেন, “এটি একটি ষড়যন্ত্র। আমার কণ্ঠ এআই প্রযুক্তি ব্যবহার করে বানানো হতে পারে।” বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য অধ্যাপক ড. মো. শওকত আলী বলেন, “যিনি অডিও ভাইরাল করেছেন তাকে অনুরোধ করবো লিখিত অভিযোগ দিতে। অভিযোগ পেলে তদন্ত কমিটি গঠন করে যথাযথ ব্যবস্থা নেওয়া হবে।” এ ঘটনার পরিপ্রেক্ষিতে বিশ্ববিদ্যালয়ের নীতিনৈতিকতা, শিক্ষক-ছাত্রী সম্পর্ক এবং প্রশাসনিক স্বচ্ছতা নিয়ে প্রশ্ন তুলছেন শিক্ষক ও শিক্ষার্থীরা। বিশ্ববিদ্যালয়ের পরিবেশ রক্ষায় দ্রুত ও নিরপেক্ষ তদন্ত এবং কঠোর ব্যবস্থা গ্রহণের দাবি জানিয়েছেন শিক্ষার্থীরা।
Editor and Publisher : Ariful Islam
Address: Nikunja-2, Road No. 1/A Cemetery Road, Dhaka
Call: 8809639113691
E-mail: Ajkerkhobur@gmail.com
@2025 | Ajker-Khobor.com