প্রিন্ট এর তারিখঃ জুন ২৪, ২০২৫, ২:৫৬ পি.এম || প্রকাশের তারিখঃ এপ্রিল ১৫, ২০২৫, ৯:৩৮ এ.এম
নিকলীর ইয়াবা সম্রাট আবু বাক্কার ধ্বংস করছে যুবসমাজ

কিশোরগঞ্জ জেলার হাওর অধ্যাসিত নিকলী উপজেলা। শিক্ষা বা মানবসম্পদের বিবেচনায় অন্যান্য উপজেলা থেকে অনেক পিছিয়ে আছে এই উপজেলা। বর্তমান বিপ্লবী সরকার শিক্ষা এবং মানবসম্পদে দেশের যুবসমাজ কে রুপান্তর করতে নানা উদ্যোগ নিয়েছেন। যার মাধ্যমে দেশের যুবসমাজ দক্ষ মানবসম্পদে উন্নতি হবে। কিন্তু নিকলীতে ইয়াবার মতো ভয়ানক মাদকের ছড়াছড়ি থাকায় সহজেই যুবসমাজ ইয়াবায় আসক্ত হয়ে যাচ্ছে।যার ফলে নিকলীর যুবসমাজ জনসম্পদে রুপান্তর হওয়ার পরিবর্তে দেশের বোঝায় পরিনত হচ্ছে। যুব সমাজকে রক্ষায় কুখ্যাত ইয়াবা সম্রাট, মাদক ব্যবসায়ী, আগ্নেয়াস্ত্রধারী, সন্ত্রাসী, ডাকাত আবুবাক্কার(৫২) গ্রেফতারের দাবীতে গত ১২/০৪/২০২৫ তারিখে এলাকার কয়েকশত সচেতন নাগরিকের স্বাক্ষরিত অভিযোগ র্যা পিড এ্যাকশন ব্যাটালিয়ন- ১৪, সি পি সি -২, কিশোরগঞ্জ ক্যাম্প ও পুলিশ সুপার, কিশোরগঞ্জ বরাবরে দাখিল করা হয় । নিকলী ও তার আশেপাশের এলাকার যুবসমাজ ধ্বংস হয়ে যাচ্ছে একজন ইয়াবা সম্রাট আবু বাক্কারের জন্য। জানা যায় ইয়াবা সম্রাট আবু বাক্কার (৫২)নিকলী সদর উপজেলার পশ্চিম কুর্শা গ্রামের মৃত আব্দুল কাদিরের ছেলে। আবু বাক্কার দীর্ঘ প্রায় ২০ বছর ধরে ইয়াবাসহ অন্যান্য মাদক ব্যবসা করে আসছে। তিনি নিকলী,বাজিতপুর ও করিমগঞ্জ উপজেলায় মাদকের সাম্রাজ্য গড়ে তুলেছে। আবু বাক্কার নিকলী উপজেলার আওয়ামী লীগের সভাপতি ও নিকলী উপজেলা যুবলীগের সভাপতির ঘনিষ্ঠ জন। তাদের প্রশাসনিক সহযোগিতায় বাক্কার তার মাদক সাম্রাজ্য প্রতিষ্ঠা করেছেন। কিন্তু ৫ই আগস্ট পরবর্তীতে নতুন কিছু প্রভাবশালী ব্যক্তির সহযোগিতায় এখনো বীরদর্পে চালিয়ে যাচ্ছে তার ইয়াবা ব্যবসা।
এব্যাপারে বিস্তারিত জানতে তার এলাকায় গেলে দেখা যায় ইয়াবা বাক্কার নামে ছোট বড় সবাই তাকে চিনে এবং কুর্শার ইয়াবা বাক্কার নামে নিকলী,বাজিতপুর ও করিমগঞ্জ উপজেলায় সে পরিচিত। নিকলীতে ইয়াবা এতোটাই সহজলভ্য যে ছোট-বড় সবাই তার কাজ থেকে যেকোনো সময় ইয়াবা কিনতে পারে এমনকি তার অধিকাংশ ক্রেতাই স্কুল-কলেজের শিক্ষার্থী। এবং অনেকেই মাদকাসক্ত হয়ে পড়াশোনা ছেড়ে দিয়ে মাদকের টাকার যোগান দিতে চুরি-ডাকাতির মতো অপরাধে জড়িয়ে যাচ্ছে। যার সত্যতা মিলে কুর্শাগ্রামের মুক্তার উদ্দিনের বয়ানে। মুক্তার উদ্দিন বলেন, আমার মাত্র একটা ছেলে সন্তান। তারে খুব আশা নিয়ে কলেজে ভর্তি করিয়ে ছিলাম। খুব মেধাবী ছিলো, এসএসসিতে খুব ভালো রেজাল্টও করেছিলো।কিন্তু বাক্কারের ইয়াবার পাল্লায় পরে আমার সন্তানের জীবন শেষ হয়ে গেছে।পড়াশোনা ছাইড়া দিছে অনেক আগে,কোনো কাজ করে না। আমাদের কাছে কিছু দিন পর পরই টাকা চাইতো না দিলে অত্যাচার চালাতো আমাদের উপর। পরিবর্তে মাদকের অর্থ যোগান দিতে জঘন্য অপরাধে জরিয়ে পরে।এখন তার বাবা আমি এমন পরিচয় দিতে লজ্জিত হয়। অনুসন্ধানে জানা যায়, আবু বাক্কার কয়েকবার ইয়াবা ও অস্ত্র নিয়ে ধরা খেয়েছিলো র্যা বের কাছে। কিন্তু আওয়ামী নেতাদের সহযোগিতায় প্রতিবারই ছাড়া পেয়ে যেতো। তার ক্যারিয়ারে ডাকাতির জন্য জেলে যাওয়ার রেকর্ড আছে। অনুসন্ধানে আরও জানা যায়, নিকলী উপজেলা সাবেক যুবলীগ নেতা জহিরুল ইসলাম ও তার ছোট ভাই নিকলী উপজেলা ছাত্রলীগ সভাপতি ইমরুল হাসানের অর্থনৈতিক সহযোগিতা এবং প্রশাসনিক নিরাপত্তায় বাক্কার প্রথমে তার নিজ এলাকা কুর্শাগ্রামে ইয়াবা ব্যবসা শুরু করে। পরবর্তীতে আরও কিছু আওয়ামিলীগের প্রভাবশালী নেতাদের যোগসাজশে নিকলী, বাজিতপুর ও করিমঞ্জে তার মরণঘাতী ইয়াবা সাম্রাজ্য গড়ে তুলেন। অনুসন্ধানে জহিরুল ও তার ভাই ইমরুল বাক্কারের ব্যবসায়ীক পার্টনারের তথ্য উঠে আসে। এলাকাবাসী বলেন, আমরা কয়েকবার সামাজিক ভাবে বাক্কারের বাড়িতে অভিযান চালাতে গেলে জহিরুল ও তার ভাই ইমরুল এসে আমাদের বাধা প্রদান করে। তারা এলাকায় প্রভাবশালী হওয়ায় আমরা ব্যর্থ হয়ে ফিরে এসেছি। কুর্শা গ্রামের একজন বলেন, আবু বাক্কারের এক সময় কিছুই ছিলো না,কিন্তু সে এখন কোটিপতি। জিরো থেকে হিরো হয়েছে ইয়াবা বিক্রি করে। তার কারণে নিকলীর তরুণ সমাজ ধ্বংস হয়ে যাচ্ছে। আরেকজন বলেন, নিকলী উপজেলা আওয়ামী লীগের প্রভাবশালী কিছু নেতার আত্নীয় হওয়ায় আবু বাক্কার প্রশাসনিক ঝামেলা এড়িয়ে নির্বিঘ্নে নিকলীতে ইয়াবা বিক্রি করেছে এবং ইয়াবা সাম্রাজ্য প্রতিষ্ঠিত করেছে। আমরা চাই প্রশাসন আবু বাক্কার কে অতি দ্রুত গ্রেফতার করে এলাকা কে ইয়াবা মুক্ত করুক। এলাকায় শান্তি ফিরে আসুক। যুবসমাজ সুশিক্ষিত হয়ে দক্ষ মানবসম্পদে পরিনত হয়ে দেশের কল্যাণে কাজ করুক।
Editor and Publisher : Ariful Islam
Address: Nikunja-2, Road No. 1/A Cemetery Road, Dhaka
Call: 8809639113691
E-mail: Ajkerkhobur@gmail.com
@2025 | Ajker-Khobor.com