প্রিন্ট এর তারিখঃ জুন ২৬, ২০২৫, ৪:৪৯ এ.এম || প্রকাশের তারিখঃ এপ্রিল ২১, ২০২৫, ৫:৫৩ এ.এম
চট্টগ্রাম বন্দরের নিউমুরিং কনন্টেইনার টার্মিনাল (এনসিটি) বিদেশি প্রতিষ্ঠানকে ছেড়ে না দেয়ার দাবী- জামায়াত

বাংলাদেশ জামায়াতে ইসলামী চট্টগ্রাম মহানগরীর পক্ষ থেকে চট্টগ্রাম বন্দরের নিউমুরিং কনন্টেইনার টার্মিনাল বিদেশি কোম্পানির নিকট ছেড়ে দেয়ার প্রতিবাদে এবং বন্দরের নিজস্ব ব্যবস্থাপনায় পরিচালনার দাবিতে এক সংবাদ সম্মেলনের আয়োজন করে। রবিবার (২০ এপ্রিল) সকাল ১১টায় চট্টগ্রাম প্রেস ক্লাবের এস রহমান হলে অনুষ্ঠিত সংবাদ সম্মেলনে লিখিত বক্তব্য পেশ করেন বাংলাদেশ জামায়াতে ইসলামীর কেন্দ্রীয় কর্মপরিষদ সদস্য, সংসদীয় দলের সাবেক হুইপ, সাবেক এমপি ও চট্টগ্রাম মহানগরী আমীর আলহাজ¦ শাহজাহান চৌধুরী।
বন্দর কর্তৃপক্ষের নিজস্ব অর্থায়নে প্রায় ২ হাজার কোটি টাকা ব্যয়ে ২০০১ সালে নিউমুরিং কন্টেইনার টার্মিনাল (এনসিটি) নির্মাণ কাজ শুরু করে। এতে ১ হাজার মিটার দীর্ঘ বার্থ রয়েছে যেখানে একই সাথে পাঁচটি জাহাজের মালামাল উঠানামার কাজ করতে পারে এবং ব্যাকআপ ফ্যাসিলিটিজ হিসাবে রয়েছে ২৬ হেক্টর জায়গার উপর উন্নত প্রযুক্তি সম্বলিত ইয়ার্ড। বর্তমানে বাংলাদেশের সর্ববৃহৎ কন্টেইনার টার্মিনাল হিসেবে এনসিটি টার্মিনাল বিশ্বব্যাপী পরিচিতি লাভ করেছে। এছাড়া, বর্তমানে চট্টগ্রাম বন্দরের মূল আয় আসে এই এনসিটি টার্মিনাল হতে। গত অর্থবছরে (২০২৩-২০২৪) এনসিটি থেকে আয় হয়েছে ১ হাজার ৩৬৭ কোটি টাকা। সর্বোচ্চ আয়ের পাশাপাশি রেকর্ড সংখ্যক কন্টেইনার হ্যাল্ডলিং হয়েছে যা পূর্বের বছরের তুলনায় ৭.৩৭% বেশি। চট্টগ্রাম বন্দরের মোট হ্যাল্ডলিংয়ের ৫৫% এনসিটি টার্মিনালে হয়। যা দেশের অর্থনীতির মূল চালিকাশক্তি হিসাবে অন্যতম ভ‚মিকা পালন করছে। চট্টগ্রাম বন্দরের এই নিউমুরিং কন্টেইনার টার্মিনাল (এনসিটি) চালু হওয়ার পর এই টার্মিনালকে আধুনিক টার্মিনালে রূপান্তরিত করার জন্য চট্টগ্রাম বন্দর নিজস্ব অর্থায়নে প্রায় ২ হাজার কোটি টাকা ব্যয়ে অত্যাধুনিক ও উন্নতমানের নতুন যন্ত্রপাতি ক্রয় করে। যার বর্তমান বাজারমূল্য ৫ হাজার কোটি টাকা। বর্তমানে এই টার্মিনালে কোনো প্রকার বিনিয়োগের প্রয়োজন নেই এবং টার্মিনালটি স্বয়ংসম্পূর্ণ। এই টার্মিনালের মাধ্যেমে চট্টগ্রাম বন্দর বিশাল রাজস্ব আয় করছে।
আমরা জেনেছি, এনসিটি টার্মিনালের ধারণ ক্ষমতা ১.১ মিলিয়ন টিইইউএস। বর্তমানে চট্টগ্রাম বন্দরের শ্রমিক কর্মচারীদের অক্লান্ত পরিশ্রম ও দক্ষতার ফলে এই টার্মিনালে ধারণ ক্ষমতার চেয়ে বেশি কন্টেইনার হ্যান্ডলিং করা হচ্ছে। বর্তমানে বন্দরের এই টার্মিনালে বিভিন্ন শ্রেণি পেশার ৪০০০-৫০০০ দক্ষ কর্মকর্তা ও দক্ষ শ্রমিক-কর্মচারী (২৪ ঘণ্টা ঢ ৭ দিন) কাজ করে এবং তার সাথে রয়েছে শত শত স্টেকহোল্ডার ও তাদের কর্মচারীবৃন্দ। এদের প্রত্যেকের সাথে এক একটি পরিবার জড়িত।
তিনি বলেন
বর্তমানে এই চালু টার্মিনাল নিয়ে গভীর ষড়যন্ত্র চলছে। আপনারা জানেন, বিগত স্বৈরাচারী শেখ হাসিনা সরকারের বেসরকারি শিল্প ও বিনিয়োগ উপদেষ্টা সালমান এফ রহমানের কু-নজর পড়ে এই চালুকৃত ও রাজস্ব খাতের মূল চালিকাশক্তি এনসিটি টার্মিনালের উপর। দেশের অন্যতম অর্থ পাচারকারী ও শেখ পরিবারের প্রধান অর্থ যোগানদাতা সালমান এফ রহমান ব্যাংকসহ দেশের লাভজনক সকল প্রতিষ্ঠান ধ্বংস করে সর্বশেষ এনসিটি টার্মিনাল বিদেশিদের হাতে তুলে দেয়ার জন্য জোরালো পদক্ষেপ গ্রহণ করে। যেই পদ্ধতিতে চট্টগ্রাম বন্দরের নিজস্ব অর্থায়নে তৈরিকৃত পতেঙ্গা কন্টেইনার টার্মিনাল দিয়ে দেয়া হয়েছে, সেই একই পদ্ধতিতে এনসিটি টার্মিনালও বিদেশিদের হাতে তুলে দেওয়ার গভীর চক্রান্ত চলছে। যদি ২০২৪ সালের জুলাই-আগস্টে ছাত্র-জনতার গণঅভ‚ত্থান না হতো, তাহলে এতদিনে এই এনসিটি টার্মিনালটি বিদেশিদের হাতে চলে যেত। কিন্তু ফ্যাসিস্ট সরকার পালিয়ে গেলেও সরকারের বিভিন্ন স্থানে ঘাপটি মেরে থাকা ফ্যাসিস্ট সরকারের লোকজন, বর্তমান সরকারকে বিভ্রান্তিমূলক বিভিন্ন তথ্য দিয়ে দেশের রাজস্ব খাত শেষ করার জন্য এবং দেশের সার্বভৌমত্বের উপর আঘাত হানার জন্য এনসিটি টার্মিনালকে বিদেশি প্রতিষ্ঠানকে হস্তান্তর করার জন্য প্রচেষ্টা চালিয়ে যাচ্ছেন। ফ্যাসিস্ট সরকারের অর্থনৈতিক উপদেষ্টা সালমান এফ রহমানের ঘনিষ্ট কিছু লোকজন সরকারের বিভিন্ন স্থানে লুকিয়ে থাকা ফ্যাসিস্ট সরকারের এজেন্ডা শেখ পরিবারের অর্থ যোগান দেওয়া অব্যাহত রাখার এবং বর্তমান সরকার ও ছাত্র-জনতার রক্তের বিনিময়ে অর্জিত স্বাধীনতা ধুলিসাৎ করার জন্য চট্টগ্রাম বন্দর নিয়ে যড়যন্ত্রে লিপ্ত রয়েছেন।
এ সময় আরো উপস্থিত ছিলেন কেন্দ্রীয় মজলিসে শূরা সদস্য, চট্টগ্রাম মহানগরী নায়েবে আমীর ও পরিবেশবিদ মুহাম্মদ নজরুল ইসলাম, চট্টগ্রাম মহানগরী সেক্রেটারি অধ্যক্ষ মুহাম্মদ নুরুল আমিন, নগর এসিস্ট্যান্ট সেক্রেটারি ও কেন্দ্রীয় মজলিসে শূরা সদস্য অধ্যক্ষ মাওলানা খাইরুল বাশার, এসিস্ট্যান্ট সেক্রেটারি মোহাম্মদ উল্লাহ, ফয়সাল মুহাম্মদ ইউনুছ ও মোরশেদুল ইসলাম চৌধুরী, সাংগঠনিক সম্পাদক ও সাবেক কাউন্সিলর এবং চট্টগ্রাম-১০ সংসদীয় আসনের জামায়াত মনোনীত প্রার্থী অধ্যক্ষ শামসুজ্জামান হেলালী, নগর জামায়াতের সাংগঠনিক সম্পাদক ও চট্টগ্রাম-৯ সংসদীয় আসনের জামায়াত মনোনীত প্রার্থী ডা. এ কে এম ফজলুল হক, চট্টগ্রাম-১১ সংসদীয় আসনের জামায়াত মনোনীত প্রার্থী ও সাবেক কাউন্সিলর মোহাম্মদ শফিউল আলম, চট্টগ্রাম প্রেস ক্লাবের সদস্য সচিব জাহেদুল করিম কচি, শ্রমিক কল্যাণ ফেডারেশন চট্টগ্রাম মহানগরী সভাপতি এস এম লুৎফর রহমান, শ্রমিক কল্যাণ ফেডারেশন চট্টগ্রাম মহানগরী সাধারণ সম্পাদক আবু তালেব, নগর জামায়াতের কর্মপরিষদ সদস্য হামেদ হাসান ইলাহী, আমির হোসাইন, বন্দর থানা আমির মাহমুদুল আলম, চকবাজার থানার নায়েবে আমির আবদুল হান্নান, কোতোয়ালী থানা সেক্রেটারি মোস্তাক আহমদ, বন্দর ইসলামী শ্রমিক সংঘের সেক্রেটারি মোহাম্মদ ইয়াছিন, শ্রমিক নেতা আদনান প্রমুখ
Editor and Publisher : Ariful Islam
Address: Nikunja-2, Road No. 1/A Cemetery Road, Dhaka
Call: 8809639113691
E-mail: Ajkerkhobur@gmail.com
@2025 | Ajker-Khobor.com