সুনামগঞ্জ বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়ের অস্থায়ী ছাত্রীনিবাস শান্তিগঞ্জে আওয়ামী লীগের কার্যালয়ে করে দেওয়ায় শিক্ষার্থীরা আতঙ্কে আছেন। এই আতঙ্ক অমূলক নয়। আমরা অস্থায়ী ছাত্রী নিবাস অবিলম্বে জেলা শহরে স্থানান্তর করে শিক্ষার্থীদের শঙ্কা দূর করার দাবি জানাই। নতুবা সেখানে কোনো অঘটন ঘটলে দায় বিশ্ববিদ্যালয়কে নিতে হবে। তিনি বলেন, জেলা সদর তথা শহরে বিভিন্ন স্থাপনা বাদ দিয়ে বিশ্ববিদ্যালয় কর্তৃপক্ষ শান্তিগঞ্জের গ্রাম এলাকার বিভিন্ন বাসাবাড়ি ভাড় করে বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থীদের আবাসন ব্যবস্থা করে দিচ্ছেন। যা একজন বিশ্ববিদ্যালয় শিক্ষার্থীদের জন্য অমানবিক। বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসন সূত্র থেকে আমরা জেনেছি যে, এসব বাসাবাড়ি—স্থাপনা ভাড়া নিতে গিয়ে সরকারের অতিরিক্ত টাকা ব্যয় দেখানো হচ্ছে এবং অর্থেরও নয়—ছয় করা হচ্ছে। বর্তমান ভিসি ও তার প্রশাসন আর্থিক অনিয়মে জড়িত। এ ঘটনার তদন্ত দাবির পাশাপাশি শিক্ষার্থীদের আবাসন অসুবিধা লাঘবে বিশ্ববিদ্যালয় মঞ্জুরি কমিশনের (ইউজিসি) দ্রুত হস্তক্ষেপ কামনা করছি।
‘বৈষম্য ঘোচাতে সুষম উন্নয়নে ঐক্যবদ্ধ হোন, সোচ্চার হোন’ প্রতিপাদ্যকে সামনে রেখে বুধবার দুপুরে শহীদ মুক্তিযোদ্ধা জগৎজ্যোতি পাবলিক লাইব্রেরী মিলনায়তনে সংবাদ সম্মেলনে এসব কথা বলেন সুনামগঞ্জ বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়ের স্থায়ী ক্যাম্পাস জেলা সদরে বাস্তবায়ন আন্দোলনের সদস্য সচিব মুনাজ্জির হোসেন সুজন।
সুনামগঞ্জ বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়ের বর্তমান ভিসি (ভাইস চ্যান্সেলর) ড. মো. নিজাম উদ্দিন কে আমরা বলেছিলাম ফ্যাসিবাদীর সিন্ডিকেট পুরোটা বাতিল করতে উল্লেখ করে তিনি বলেন, নতুন সিন্ডিকেট গঠন করে আমাদের আন্দোলনে সক্রিয় সিনিয়র সিটিজেন তথা বিভিন্ন সেক্টরে মেধাবী ও প্রাজ্ঞজনকে সিন্ডিকেট মেম্বারের তালিকা করে যথাযথ কর্তৃপক্ষ বরাবর পাঠাতে অনুরোধ করেছিলাম আমরা। কিন্তু ভিসি তড়িঘড়ি করে নিজের আজ্ঞাবহদের সিন্ডিকেট মেম্বার করার অপতৎপরতা শুরু করে দিয়েছেন। বিভিন্ন সূত্রে আমরা জানতে পেরেছি, ভিসি ফ্যাসিবাদীদের পরামর্শ নিয়েই এই কাজটি করেছেন।
ভিসি ড. মো. নিজাম উদ্দিন জেলাবাসীর যৌক্তিক আন্দোলনের একজন বিরোধী লোক উল্লেখ করে মুনাজ্জির হোসেন সুজন বলেন, তাকে নিরপেক্ষ ভাববার অবকাশ নেই। ফ্যাসিবাদের দোসর ভিসিকে প্রত্যাহার করতে হবে। সিলেটের কৃতিসন্তানদের মধ্য থেকে নতুন ভিসি নিয়োগ করতে হবে। ফ্যাসিবাদী সময়ে গঠন করা বিশ্ববিদ্যালয় সিন্ডিকেট বাতিল ঘোষণা করে সুনামগঞ্জের শিক্ষাবিদ, বিদ্যুৎসাহী, সুধীজন থেকে সিন্ডিকেট সদস্য করতে হবে। জেলার স্থায়ী বাসিন্দাদের মধ্য থেকে যোগ্যতার ভিত্তিতে কর্মকর্তা ও তৃতীয় এবং চতুর্থ শ্রেণির কর্মচারী নিয়োগে অগ্রাধিকার দিতে হবে। এছাড়াও ডিঙি নৌকার আদলে উদ্ভট বিশ্ববিদ্যালয় লোগো বাতিল করে সুনামগঞ্জের ঐতিহ্য ও শিক্ষার তাৎপর্যপূর্ণ নতুন লোগো করতে হবে।
আন্দোলনের চূড়ান্ত ধাপ শুরু করার মধ্যেই নানা মেরুকরণ তৈরির চেষ্টা করছে ক্ষমতাচ্যুত ফ্যাসিবাদী চক্র উল্লেখ করে তিনি বলেন, এরা নানা রকম মুখোশের আড়ালে তৎপর ছিল। এদের একটি অংশের মুখোশ উন্মেচিত হয়েছে। বাকিদেরও খোলস খসে পড়বে। আব্জ আমরা আমাদের আন্দোলনের মুখপত্র হিসেবে প্রথম একটি লিফলেট প্রচার করব। জেলার প্রতিটি উপজেলা কমিটির মাধ্যমে প্রত্যন্ত এলাকায় এই লিফলেট বিলি করা হবে। এতে সম্পৃক্ত রাখার চেষ্টা করা হবে শিক্ষার্থী ও তরুণদের। গণমাধ্যম ও সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে নিরবচ্ছিন্ন প্রচারণাও একই সঙ্গে চলবে। আজ আমরা সুনির্দিষ্ট করে কিছু দাবি পেশ করব, বিশ্ববিদ্যালয়ের স্থায়ী ক্যাম্পাস জেলা সদর তথা জেলা শহরের সুবিধার নাগরিক অধিকার প্রতিষ্ঠায় দাবিও প্রকাশ করব।
এটা কোনো আঞ্চলিক আন্দোলন নয় উল্লেখ করে তিনি বলেন, এটা সুনামগঞ্জ জেলা সদর তথা জেলা শহর সমগ্র জেলাবাসীর আন্দোলন। অতীতে সর্বদলীয় রাজনীতির ঐকতান হিসেবে আমরা ঐতিহ্য রক্ষার পরম্পরায় একাত্ম হয়েছি। এসময় বিশ্ববিদ্যালয় কেন্দ্রিক একটি বিদ্যুৎসাহী সমাজ শহরের সুবিধায় গড়ে ওঠার প্রত্যাশার সঙ্গে সুনামগঞ্জ জেলার উন্নয়ন একমুখী করার ষড়যন্ত্রের বিরুদ্ধে সকলকে সোচ্চার হওয়ার আহবান জানানো হয়।
সংবাদ সম্মেলনে উপস্থিত ছিলেন বিশ্ববিদ্যালয় স্থায়ী ক্যাম্পাস বাস্তবায়ন আন্দোলনের যুগ্ম আহ্বায়ক ও জেলা আইনজীবী সমিতির সাবেক সভাপতি অ্যাড. রবিউল লেইস রোকেস, বিশ্ববিদ্যালয় স্থায়ী ক্যাম্পাস বাস্তবায়ন আন্দোলনের যুগ্ম আহ্বায়ক অবসরপ্রাপ্ত অধ্যক্ষ সৈয়দ মুহিবুল ইসলাম, শিক্ষাবিদ পরিমল কান্তি দে প্রমুখ।
Editor and Publisher : Ariful Islam
Address: Nikunja-2, Road No. 1/A Cemetery Road, Dhaka
Call: 8809639113691
E-mail: Ajkerkhobur@gmail.com
@2025 | Ajker-Khobor.com