০৬:২১ অপরাহ্ন, শনিবার, ১০ মে ২০২৫, ২৭ বৈশাখ ১৪৩২ বঙ্গাব্দ

ইতিহাস আর ঐতিহ্যের সমারোহে ঘেরা কবি নজরুল সরকারি কলেজ

কবি নজরুল সরকারি কলেজ, ১৮৭৪ সালে প্রতিষ্ঠিত বাংলাদেশের অন্যতম প্রাচীন ও ঐতিহ্যবাহী কলেজ। লাল ইটের এই ঐতিহ্যবাহী কলেজটি ১.২ হেক্টর (৩ একর) যায়গা নিয়ে পুরান ঢাকার লক্ষ্মিবাজারে অবস্থিত। কারো কারো কাছে এটা দ্বিতীয় কার্জন হল নামেও পরিচিত।  ১৮৭৪ সাল থেকে এই প্রতিষ্ঠানটির যাত্রা শুরু করেন হাজী মুহাম্মদ মহসিন।  প্রথমে ঢাকা মোহসীনিয়া মাদ্রাসা নামে পরিচালিত হয়। কালের বিবর্তনে অনেক কিছুরই পরিবর্তন ঘটে, পর্যায়ক্রমে ১৯৭২ সালে কবি নজরুল সরকারি কলেজ নামে অধিক পরিচিতি লাভ করে।  কলেজটিতে ১৯৯২ সাল থেকে বিশ্ববিদ্যালয়ের কার্যক্রম জাতীয় বিশ্ববিদ্যালয় এর অধীনে হলেও ১৬ই ফেব্রুয়ারী ২০১৭ সাল থেকে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের অধিভুক্ত হয় ঐতিহ্যবাহী এই কলেজটি। ১৯৭৯ সালে প্রথমে কলেজটিতে বিজ্ঞান, মানবিক ও ব্যাবসায় শিক্ষা শাখার স্নাতক পর্যায়ের শিক্ষা চালু হয়।  ১৯৮৫ সালে ইসলামিক স্টাডিজ বিষয়ে প্রথম স্নাতক (সম্মান) কোর্স চালু হয়। ১৯৯৩ সালে জাতীয় বিশ্ববিদ্যালয়ের অধীনে আরবি, ইসলামিক স্টাডিজ ও ব্যবস্থাপনা বিষয়ে প্রথম পর্ব মাস্টার্স কোর্স চালু হয়।  এরপর ২০০৪ সালে বাংলা,  অর্থনীতি, রসায়ন, গণিত, প্রাণিবিদ্যা, দর্শন, রাষ্ট্রবিজ্ঞান,  ইতিহাস, ইসলামের ইতিহাস ও সংস্কৃতি, উদ্ভিদবিদ্যা, ভূগল ও পদার্থবিজ্ঞানসহ মোট ১২ টি বিষয়ে অনার্স কোর্স চালু হয়। এরপরে ২০০৬ সালে বাংলায়  প্রথম পর্ব স্নাতকোত্তর কোর্স চালু হয়। বর্তমানে এখানে মোট ২৪ টি বিষয়ে অনার্স, ৫ টি বিষয়ে প্রথম পর্ব মাস্টার্স এবং ৪ টি বিষয়ে শেষপর্ব মাস্টার্স কোর্স চালু আছে।
 ঐতিহ্যবাহী এই কলেজটিতে বর্তমানে বেশ কয়েকটি ক্লাব রয়েছে,  এই ক্লাবগুলো বিভিন্ন অনুষ্ঠান আয়োজন ও কার্যক্রম গ্রহণের মাধ্যমে কলেজের শিক্ষার্থীদের উৎসাহ প্রদানে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রেখে যাচ্ছে। আর এই ক্লাবগুলোর মধ্যে উল্লেখযোগ্য ক্লাবগুলো হলো, বাংলাদেশ ন্যাশনাল ক্যাডেট কোর (বিএনসিসি), কবি নজরুল সরকারি কলেজ সাংবাদিক সমিতি (কনকসাস), রোভার স্কাউট গ্রুপ, বিতর্ক ক্লাব, বাঁধন ইউনিট কবি নজরুল সরকারি কলেজ শাখা,  কবিয়াল সাহিত্য পরিষদসহ বিভিন্ন ক্লাব ও সংগঠন।
এই কলেজ থেকে বের হয়েছে অনেক কৃতিত্ববান শিক্ষার্থী এবং বাংলাদেশের অন্যতম প্রখ্যাত ব্যক্তিবর্গ, তাদের মধ্যে রয়েছেন, সাবেক উপরাষ্ট্রপতি ও বিচারপতি নুরুল ইসলাম,  কবি ও সাহিত্যিক কায়কোবাদ,  প্রখ্যাত সাংবাদিক, সাহিত্যিক এবং গেরিলা মুক্তিযোদ্ধা হারুন হাবীব,  বাংলাদেশ চলচিত্র অভিনেতা ইলিয়াস কাঞ্চন,  ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের সাবেক উপাচার্য ড.সৈয়দ মোয়াজ্জেম হোসেন প্রমুখ।
কলেজের শিক্ষার্থী মির্জা কাদের বলেন, কবি নজরুল সরকারি কলেজ পুরাণ ঢাকার প্রাচীনতম শিক্ষা প্রতিষ্ঠান।  ইতিহাস আর ঐতিহ্য কোনো কিছুরই কমতি নেই এই কলেজটির।  কলেজের ভিতরে প্রবেশ করলে মনটা এক অদ্ভুত আনন্দে মেতে ওঠে। এই ঐতিহ্যবাহী কলেজটিতে মিশে আছে অনেক ইতিহাস। শ্রাবণী আক্তার বলেন, কবি নজরুল সরকারি কলেজ বাংলাদেশের প্রাচীনতম শিক্ষা প্রতিষ্ঠানগুলোর মধ্যে একটি। যুগের সাথে তাল মিলিয়ে কলেজটি আজ দাঁড়িয়ে আছে এক অন্যরকম সাজে। এই কলেজের সাথে জড়িয়ে আছে অনেক স্মৃতি।  হাজার হাজার শিক্ষার্থীদের এক আবেগের যায়গা কবি নজরুল সরকারি কলেজ।
ট্যাগঃ
প্রতিনিধির তথ্য

জনপ্রিয় পোস্ট

কয়রায় জাতীয় প্রাথমিক শিক্ষা সপ্তাহ উদযাপন উপলক্ষে আলোচনা সভা

ইতিহাস আর ঐতিহ্যের সমারোহে ঘেরা কবি নজরুল সরকারি কলেজ

পোস্ট হয়েছেঃ ০৬:৫৫:২২ পূর্বাহ্ন, শনিবার, ১০ মে ২০২৫
কবি নজরুল সরকারি কলেজ, ১৮৭৪ সালে প্রতিষ্ঠিত বাংলাদেশের অন্যতম প্রাচীন ও ঐতিহ্যবাহী কলেজ। লাল ইটের এই ঐতিহ্যবাহী কলেজটি ১.২ হেক্টর (৩ একর) যায়গা নিয়ে পুরান ঢাকার লক্ষ্মিবাজারে অবস্থিত। কারো কারো কাছে এটা দ্বিতীয় কার্জন হল নামেও পরিচিত।  ১৮৭৪ সাল থেকে এই প্রতিষ্ঠানটির যাত্রা শুরু করেন হাজী মুহাম্মদ মহসিন।  প্রথমে ঢাকা মোহসীনিয়া মাদ্রাসা নামে পরিচালিত হয়। কালের বিবর্তনে অনেক কিছুরই পরিবর্তন ঘটে, পর্যায়ক্রমে ১৯৭২ সালে কবি নজরুল সরকারি কলেজ নামে অধিক পরিচিতি লাভ করে।  কলেজটিতে ১৯৯২ সাল থেকে বিশ্ববিদ্যালয়ের কার্যক্রম জাতীয় বিশ্ববিদ্যালয় এর অধীনে হলেও ১৬ই ফেব্রুয়ারী ২০১৭ সাল থেকে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের অধিভুক্ত হয় ঐতিহ্যবাহী এই কলেজটি। ১৯৭৯ সালে প্রথমে কলেজটিতে বিজ্ঞান, মানবিক ও ব্যাবসায় শিক্ষা শাখার স্নাতক পর্যায়ের শিক্ষা চালু হয়।  ১৯৮৫ সালে ইসলামিক স্টাডিজ বিষয়ে প্রথম স্নাতক (সম্মান) কোর্স চালু হয়। ১৯৯৩ সালে জাতীয় বিশ্ববিদ্যালয়ের অধীনে আরবি, ইসলামিক স্টাডিজ ও ব্যবস্থাপনা বিষয়ে প্রথম পর্ব মাস্টার্স কোর্স চালু হয়।  এরপর ২০০৪ সালে বাংলা,  অর্থনীতি, রসায়ন, গণিত, প্রাণিবিদ্যা, দর্শন, রাষ্ট্রবিজ্ঞান,  ইতিহাস, ইসলামের ইতিহাস ও সংস্কৃতি, উদ্ভিদবিদ্যা, ভূগল ও পদার্থবিজ্ঞানসহ মোট ১২ টি বিষয়ে অনার্স কোর্স চালু হয়। এরপরে ২০০৬ সালে বাংলায়  প্রথম পর্ব স্নাতকোত্তর কোর্স চালু হয়। বর্তমানে এখানে মোট ২৪ টি বিষয়ে অনার্স, ৫ টি বিষয়ে প্রথম পর্ব মাস্টার্স এবং ৪ টি বিষয়ে শেষপর্ব মাস্টার্স কোর্স চালু আছে।
 ঐতিহ্যবাহী এই কলেজটিতে বর্তমানে বেশ কয়েকটি ক্লাব রয়েছে,  এই ক্লাবগুলো বিভিন্ন অনুষ্ঠান আয়োজন ও কার্যক্রম গ্রহণের মাধ্যমে কলেজের শিক্ষার্থীদের উৎসাহ প্রদানে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রেখে যাচ্ছে। আর এই ক্লাবগুলোর মধ্যে উল্লেখযোগ্য ক্লাবগুলো হলো, বাংলাদেশ ন্যাশনাল ক্যাডেট কোর (বিএনসিসি), কবি নজরুল সরকারি কলেজ সাংবাদিক সমিতি (কনকসাস), রোভার স্কাউট গ্রুপ, বিতর্ক ক্লাব, বাঁধন ইউনিট কবি নজরুল সরকারি কলেজ শাখা,  কবিয়াল সাহিত্য পরিষদসহ বিভিন্ন ক্লাব ও সংগঠন।
এই কলেজ থেকে বের হয়েছে অনেক কৃতিত্ববান শিক্ষার্থী এবং বাংলাদেশের অন্যতম প্রখ্যাত ব্যক্তিবর্গ, তাদের মধ্যে রয়েছেন, সাবেক উপরাষ্ট্রপতি ও বিচারপতি নুরুল ইসলাম,  কবি ও সাহিত্যিক কায়কোবাদ,  প্রখ্যাত সাংবাদিক, সাহিত্যিক এবং গেরিলা মুক্তিযোদ্ধা হারুন হাবীব,  বাংলাদেশ চলচিত্র অভিনেতা ইলিয়াস কাঞ্চন,  ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের সাবেক উপাচার্য ড.সৈয়দ মোয়াজ্জেম হোসেন প্রমুখ।
কলেজের শিক্ষার্থী মির্জা কাদের বলেন, কবি নজরুল সরকারি কলেজ পুরাণ ঢাকার প্রাচীনতম শিক্ষা প্রতিষ্ঠান।  ইতিহাস আর ঐতিহ্য কোনো কিছুরই কমতি নেই এই কলেজটির।  কলেজের ভিতরে প্রবেশ করলে মনটা এক অদ্ভুত আনন্দে মেতে ওঠে। এই ঐতিহ্যবাহী কলেজটিতে মিশে আছে অনেক ইতিহাস। শ্রাবণী আক্তার বলেন, কবি নজরুল সরকারি কলেজ বাংলাদেশের প্রাচীনতম শিক্ষা প্রতিষ্ঠানগুলোর মধ্যে একটি। যুগের সাথে তাল মিলিয়ে কলেজটি আজ দাঁড়িয়ে আছে এক অন্যরকম সাজে। এই কলেজের সাথে জড়িয়ে আছে অনেক স্মৃতি।  হাজার হাজার শিক্ষার্থীদের এক আবেগের যায়গা কবি নজরুল সরকারি কলেজ।