মোহাম্মদ জামশেদ আলম, 
চট্টগ্রামের সীতাকুণ্ড উপজেলার সোনাইছড়ি ইউনিয়নের ৫ নম্বর ওয়ার্ডের ফুলতলা গ্রামে পানি নিষ্কাশনের পথ বন্ধ হয়ে যাওয়ায় সৃষ্টি হয়েছে ভয়াবহ জলাবদ্ধতা। পুরো গ্রাম এখন হাঁটুসমান পানিতে নিমজ্জিত। এতে করে চরম ভোগান্তিতে পড়েছেন প্রায় ৫-৬ হাজার বাসিন্দা।
গ্রামবাসীর অভিযোগ, দেশের শীর্ষস্থানীয় শিল্প প্রতিষ্ঠান আকিজ গ্রুপ ফুলতলা গ্রামে একটি বৃহৎ গোডাউন নির্মাণের সময় স্থানীয় পানি নিষ্কাশনের প্রাকৃতিক পথ বন্ধ করে দেয়। এর পর থেকে অল্প বৃষ্টিতেই পুরো গ্রাম জলাবদ্ধ হয়ে পড়ে। একদিন বৃষ্টি হলে অন্তত ১৫-২০ দিন পানিতে বন্দী থাকতে হচ্ছে গ্রামের মানুষকে।
জানা গেছে, গোডাউন নির্মাণের ফলে পানি চলাচলের কোনো ব্যবস্থা না থাকায় প্রতিটি বাড়িতে হাঁটুসমান পানি জমে আছে। গ্রামের রাস্তা-ঘাট, বাজার, স্কুল-কলেজ, মসজিদসহ সব স্থানে পানি জমে থাকায় জনজীবন সম্পূর্ণভাবে বিপর্যস্ত হয়ে পড়েছে। ঘরের আসবাবপত্র পানিতে নষ্ট হয়ে যাচ্ছে, রান্নাবান্না বন্ধ হয়ে গেছে, এবং সাপের উপদ্রব বেড়ে গেছে।
ভুক্তভোগী মো. খোরশেদ আলম বলেন,
“আমাদের গ্রামে কখনো জলাবদ্ধতা ছিল না। আকিজ গ্রুপ গোডাউন নির্মাণ করে পানি চলাচলের পথ বন্ধ করেছে। এখন পুরো গ্রাম পানির নিচে।”
সাবেক ইউপি সদস্য মনজুরুল ইসলাম জানান,
“এ গ্রামে হাজারো মানুষের বসবাস। রয়েছে স্কুল, মসজিদ, মাদ্রাসা। জলাবদ্ধতার কারণে পুরো গ্রামবাসী পানিবন্দী। বারবার আকিজ গ্রুপকে বলেও কোনো সাড়া পাইনি।”
গৃহবধূ আসমা খাতুন বলেন,
“ঘরের ভিতরে হাঁটুসমান পানি। রান্নাবান্না বন্ধ, আসবাবপত্র নষ্ট। পরিবার নিয়ে অমানবিক কষ্টে আছি।”
এদিকে সরেজমিনে দেখা গেছে, মাদ্রাসা ছুটির পর কোমলমতি শিশুরা হাঁটু পানি পেরিয়ে ঘরে ফিরছে। বাজার থেকে গ্রামের প্রবেশপথটিও পানিতে নিমজ্জিত। স্কুলগামী শিক্ষার্থী ও মুসল্লিরা চরম দুর্ভোগের মধ্যে রয়েছেন।
বিষয়টি নিয়ে আকিজ গ্রুপের প্রশাসনিক কর্মকর্তার সঙ্গে একাধিকবার যোগাযোগের চেষ্টা করলেও তিনি ফোন রিসিভ করেননি।
গ্রামবাসীর দাবি, দ্রুত পানি নিষ্কাশনের জন্য বিকল্প ব্যবস্থা গ্রহণ এবং আকিজ গ্রুপকে তাদের অবকাঠামো এমনভাবে পুনর্বিন্যাস করতে হবে, যাতে সাধারণ মানুষের জীবন-জীবিকা হুমকির মুখে না পড়ে।
