
নোয়াখালী হাতিয়া চর ঈশ্বর কাজির বাজার এলাকায় অবৈধভাবে সরকারি জায়গা দখল করে মাছঘাট নির্মাণ করেছে আওয়ামী লীগের সন্ত্রাসীরা। স্থানীয় সূত্রে জানা গেছে, ২০২৩ সালে জেলে এবং মাছ ব্যবসায়ীদের দুর্ভোগ লাঘবে সাবেক সংসদ সদস্য মোহাম্মদ আলী চর ঈশ্বর ইউনিয়নের ৭ নং ওয়ার্ডে এম.আলী পাইতান ঘাট নামে একটি মাছ ঘাট নির্মাণ করেন। ২০২৪ সালের বর্ষায় ওই ঘাটটি তীব্র জোয়ারের ¯ ভেঙে যায়। ওই বছরই ঘাটটি পুনরায় সংস্কার করেন জেলে এবং মাছ ব্যবসায়ীরা। চলতি বর্ষার শুরুতে ঘূর্ণীঝড় শক্তির আঘাতে এম.আলী পাইতান ঘাটটি পুরোপুরি ভেঙে নদী গর্ভে বিলীন হয়ে যায়। এতে স্থানীয় জেলে এবং মাছ ব্যবসায়ীরা চর ইশ্বর ইউনিয়ন বিএনপির নেতাদের সমন্বয়ে স্থানীয় কাজির বাজার এলাকায় স্থায়ী একটি মাছ ঘাট নির্মাণের উদ্যোগ গ্রহণ করেন। ঘাট নির্মাণের উদ্যোগের খবর প্রকাশ হলে গত মঙ্গলবার সকালে চর ঈশ্বর ইউনিয়ন পরিষদের সাবেক চেয়ারম্যান ও যুবলীগ নেতা শীর্ষ সন্ত্রাসী আব্দুল হালিম আজাদ, স্থানীয় ইউপি সদস্য আকবর ও ইসমাইলের নেতৃত্বে একদল দখলদার প্রশাসনের অনুমতির দোহায় দিয়ে জোরপূর্বক কাজির বাজার এলাকায় সরকারি জায়গা দখল করে মাছ ঘাট নির্মাণের কাজ শুরু করে। বিষয়টি স্থানীয় জেলে ও মাছ ব্যবসায়ীরা প্রশাসনকে অবগত করেন। পরে উপজেলা নির্বাহী অফিসার ও উপজেলা সহকারী কমিশনার ভূমি ঘটনাস্থল পরিদর্শন করে মাছ ঘাট নির্মাণের কাজ বন্ধ করে দেন।স্থানীয় মাছ ব্যবসায়ী খবির ব্যাপারী, আলা উদ্দিন মাঝি ও কালাম ব্যাপারী বলেন, পূর্বের এম.আলী পাইতান ঘাটটি ঘূর্ণীঝড় শক্তির প্রভাবে ভেঙে নদী গর্ভে বিলীন হয়ে যাওয়ার পর তারা চর ঈশ্বর ইউনিয়ন বিএনপির নেতাদের সঙ্গে যোগাযোগ করে প্রশাসনের অনুমতি নেওয়ার পর কাজির বাজার এলাকায় একটি মাছ ঘাট নির্মাণের উদ্যোগ গ্রহণ করেন। কিন্তু খবরটি প্রকাশ হওয়ার পরই আওয়ামী লীগের দোসর পিচ্ছি আজাদ, আকবর মেম্বার ও ইসমাইল মেম্বারের নেতৃত্বে প্রশাসনের অনুমতি ছাড়াই সরকারি জমি দখল করে অবৈধভাবে মাছ ঘাট নির্মাণের কাজ শুরু করা হয়। পরে উপজেলা নির্বাহী অফিসার ও উপজেলা সহকারী কমিশনার ভূমি ঘটনাস্থল পরিদর্শন করে মাছ ঘাট নির্মাণের কাজ বন্ধ করে দেন। কিন্তু প্রশাসনের লোকজন কাজ বন্ধ করে ঘটনাস্থল ত্যাগ করার পরই পুনরায় ঘাট নির্মাণের কাজ শুরু করেন ওই দখলদাররা।স্থানীয় সূত্রে জানা যায় আব্দুল হালিম আজাদ একজন শীর্ষ সন্ত্রাসী। ২০০৬ সালে আওয়ামী লীগের লগি বইটা আন্দোলনের সময় তৎকালীন চর ঈশ্বর ইউনিয়ন বিএনপির সিনিয়র সহ-সভাপতি ওবায়দুল হক কে প্রকাশ্য দিবালোকে রাস্তায় জবাই করে হত্যা এবং ওই মামলার প্রধান সাক্ষী কামাল উদ্দিন কে গুলি করে হত্যা করা সহ আরো ৭টি হত্যা মামলার আসামী। তার বিরুদ্ধে থানায় মোট ২৬ টি মামলা রয়েছে। এলাকাবাসী জানান ৯টি হত্যা মামলা সহ মোট ২৬ মামলার আসামি হওয়ার পরও সে প্রকাশ্য দিবালোকে চাঁদাবাজি দখল বাজি করে যাচ্ছে। প্রশাসন তার বিরুদ্ধে কোন ব্যবস্থা নিচ্ছে না। যার ফলে এলাকাবাসী সব সময় আতঙ্কের মধ্যে থাকে।হাতিয়া উপজেলা নির্বাহী অফিসার (ইউএনও) মো. আলাউদ্দিন বলেন, সরকারি জায়গায় অবৈধভাবে মাছ ঘাট নির্মাণের খবর পেয়ে আমি নিজেই ঘটনাস্থলে গিয়ে কাজ বন্ধ করে দিয়েছি। পুনরায় যদি কেউ ওই জায়গায় এমন কাজ করেন, তাহলে তাদের বিরুদ্ধে আইনগত ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে।