০১:৪২ অপরাহ্ন, বৃহস্পতিবার, ০৩ জুলাই ২০২৫, ১৯ আষাঢ় ১৪৩২ বঙ্গাব্দ

বাগেরহাট মাধ্যমিক শিক্ষা অফিসের ‘কোটিপতি দারোয়ান’ মনিরুল: প্রশ্ন উঠেছে সম্পদের উৎস নিয়ে

  • আজীজুল গাজী
  • পোস্ট হয়েছেঃ ০৭:৪৯:৫৫ পূর্বাহ্ন, বুধবার, ২ জুলাই ২০২৫
  • 101
বেতন মাত্র ১৮ হাজার টাকা, পদবিতে অফিস সহায়ক (প্রাক্তন দারোয়ান)। অথচ ১৯ বছরের চাকরিজীবনে কোটি কোটি টাকার মালিক হয়ে উঠেছেন বাগেরহাট জেলা মাধ্যমিক শিক্ষা অফিসের কর্মচারী মো. মনিরুল ইসলাম। তার এই সম্পদের উৎস ও বিত্তবৈভব ঘিরে স্থানীয়দের মধ্যে ব্যাপক আলোচনা এবং প্রশ্নের জন্ম নিয়েছে।
 মনিরুলের অবিশ্বাস্য সম্পদের চিত্র
তথ্য অনুযায়ী, বাগেরহাট শহরের পিসি কলেজ রোডে ১০ শতক জমির উপর চারতলা একটি বিলাসবহুল ভবন নির্মাণ করেছেন তিনি। এছাড়া শহরের মুনিগঞ্জ ও গোটাপাড়া এলাকায় আরও ৮৯ শতক জমির মালিক তিনি। রয়েছে উল্লেখযোগ্য অঙ্কের ব্যাংক ব্যালান্স এবং অন্যান্য আর্থিক সম্পদ।
চাকরি জীবনের শুরু ২০০৪ সালে, বেতন ছিল মাত্র ১৫০০ টাকা। সেই পদে থেকেই এখনকার সম্পদের এমন রূপ প্রশ্নবিদ্ধ হয়ে উঠেছে।“অঘোষিত নিয়ন্ত্রক” হিসেবে পরিচিত
স্থানীয় শিক্ষক ও শিক্ষা প্রতিষ্ঠানের সংশ্লিষ্টদের দাবি, মনিরুল ইসলাম হচ্ছেন শিক্ষা অফিসের অঘোষিত কর্তাব্যক্তি। কোনো প্রতিষ্ঠান বা শিক্ষক ফাইল পাশ করাতে চাইলে অফিসারদের নয়, আগে যেতে হয় মনিরুলের কাছে।
একজন সিনিয়র শিক্ষক বলেন,
“টাকা না দিলে শিক্ষা অফিসে কোনো ফাইলই নড়ে না। অফিসাররাও নিরুপায়। মনিরুলের ‘সন্তুষ্টি’ ছাড়া কিছু হয় না।”
 মনিরুলের নিজের বক্তব্য
অভিযোগের বিষয়ে মনিরুল ইসলাম বলেন,
“চাকরির পাশাপাশি পৈত্রিক জমিতে চাষাবাদ করি। পরিশ্রম করেই সব কিছু করেছি। কিছুই অবৈধ নয়।”
প্রশাসনের প্রতিক্রিয়া
জেলা শিক্ষা কর্মকর্তা এস. এম. সাইদুর ইসলাম বলেন,
“কারো সম্পদের বিষয়ে জানার সুযোগ নেই। লিখিত অভিযোগ পেলে তদন্ত করে ব্যবস্থা নেওয়া হবে। মৌখিক অভিযোগে কিছু করা সম্ভব নয়।”জনমনে ক্ষোভ, দাবি তদন্তের
স্থানীয়রা বলছেন, একজন অফিস সহায়কের পদে থেকে কোটি টাকার মালিক হওয়া সরকারি দুর্নীতির জ্বলন্ত উদাহরণ। তারা দুর্নীতি দমন কমিশন (দুদক)-এর হস্তক্ষেপ কামনা করেছেন। পাশাপাশি অবৈধ সম্পদ অনুসন্ধানে প্রশাসনের পক্ষ থেকেও দ্রুত ব্যবস্থা গ্রহণের দাবি জানান। এই প্রতিবেদনে উঠে এসেছে শিক্ষা অফিসে লুকিয়ে থাকা দুর্নীতির শিকড়। প্রয়োজন দায়িত্বশীল কর্তৃপক্ষের দ্রুত তদন্ত ও স্বচ্ছতা নিশ্চিত করা। জনগণের টাকায় চলা অফিসে, জনগণের স্বার্থই সর্বোচ্চ অগ্রাধিকার পেতে হবে—এটাই সকলের প্রত্যাশা।
ট্যাগঃ
প্রতিনিধির তথ্য

জনপ্রিয় পোস্ট

পাটগ্রামে পুলিশ ও বিএনপির নেতা কর্মীদের মধ্যে সংঘর্ষ

বাগেরহাট মাধ্যমিক শিক্ষা অফিসের ‘কোটিপতি দারোয়ান’ মনিরুল: প্রশ্ন উঠেছে সম্পদের উৎস নিয়ে

পোস্ট হয়েছেঃ ০৭:৪৯:৫৫ পূর্বাহ্ন, বুধবার, ২ জুলাই ২০২৫
বেতন মাত্র ১৮ হাজার টাকা, পদবিতে অফিস সহায়ক (প্রাক্তন দারোয়ান)। অথচ ১৯ বছরের চাকরিজীবনে কোটি কোটি টাকার মালিক হয়ে উঠেছেন বাগেরহাট জেলা মাধ্যমিক শিক্ষা অফিসের কর্মচারী মো. মনিরুল ইসলাম। তার এই সম্পদের উৎস ও বিত্তবৈভব ঘিরে স্থানীয়দের মধ্যে ব্যাপক আলোচনা এবং প্রশ্নের জন্ম নিয়েছে।
 মনিরুলের অবিশ্বাস্য সম্পদের চিত্র
তথ্য অনুযায়ী, বাগেরহাট শহরের পিসি কলেজ রোডে ১০ শতক জমির উপর চারতলা একটি বিলাসবহুল ভবন নির্মাণ করেছেন তিনি। এছাড়া শহরের মুনিগঞ্জ ও গোটাপাড়া এলাকায় আরও ৮৯ শতক জমির মালিক তিনি। রয়েছে উল্লেখযোগ্য অঙ্কের ব্যাংক ব্যালান্স এবং অন্যান্য আর্থিক সম্পদ।
চাকরি জীবনের শুরু ২০০৪ সালে, বেতন ছিল মাত্র ১৫০০ টাকা। সেই পদে থেকেই এখনকার সম্পদের এমন রূপ প্রশ্নবিদ্ধ হয়ে উঠেছে।“অঘোষিত নিয়ন্ত্রক” হিসেবে পরিচিত
স্থানীয় শিক্ষক ও শিক্ষা প্রতিষ্ঠানের সংশ্লিষ্টদের দাবি, মনিরুল ইসলাম হচ্ছেন শিক্ষা অফিসের অঘোষিত কর্তাব্যক্তি। কোনো প্রতিষ্ঠান বা শিক্ষক ফাইল পাশ করাতে চাইলে অফিসারদের নয়, আগে যেতে হয় মনিরুলের কাছে।
একজন সিনিয়র শিক্ষক বলেন,
“টাকা না দিলে শিক্ষা অফিসে কোনো ফাইলই নড়ে না। অফিসাররাও নিরুপায়। মনিরুলের ‘সন্তুষ্টি’ ছাড়া কিছু হয় না।”
 মনিরুলের নিজের বক্তব্য
অভিযোগের বিষয়ে মনিরুল ইসলাম বলেন,
“চাকরির পাশাপাশি পৈত্রিক জমিতে চাষাবাদ করি। পরিশ্রম করেই সব কিছু করেছি। কিছুই অবৈধ নয়।”
প্রশাসনের প্রতিক্রিয়া
জেলা শিক্ষা কর্মকর্তা এস. এম. সাইদুর ইসলাম বলেন,
“কারো সম্পদের বিষয়ে জানার সুযোগ নেই। লিখিত অভিযোগ পেলে তদন্ত করে ব্যবস্থা নেওয়া হবে। মৌখিক অভিযোগে কিছু করা সম্ভব নয়।”জনমনে ক্ষোভ, দাবি তদন্তের
স্থানীয়রা বলছেন, একজন অফিস সহায়কের পদে থেকে কোটি টাকার মালিক হওয়া সরকারি দুর্নীতির জ্বলন্ত উদাহরণ। তারা দুর্নীতি দমন কমিশন (দুদক)-এর হস্তক্ষেপ কামনা করেছেন। পাশাপাশি অবৈধ সম্পদ অনুসন্ধানে প্রশাসনের পক্ষ থেকেও দ্রুত ব্যবস্থা গ্রহণের দাবি জানান। এই প্রতিবেদনে উঠে এসেছে শিক্ষা অফিসে লুকিয়ে থাকা দুর্নীতির শিকড়। প্রয়োজন দায়িত্বশীল কর্তৃপক্ষের দ্রুত তদন্ত ও স্বচ্ছতা নিশ্চিত করা। জনগণের টাকায় চলা অফিসে, জনগণের স্বার্থই সর্বোচ্চ অগ্রাধিকার পেতে হবে—এটাই সকলের প্রত্যাশা।