০৯:৫২ পূর্বাহ্ন, মঙ্গলবার, ১০ জুন ২০২৫, ২৭ জ্যৈষ্ঠ ১৪৩২ বঙ্গাব্দ

না ফেরার দেশে চলে গেলেন, বি এ আর আই আর এর সাবেক মহাপরিচালক ডঃ ক্ষীরোদ রায়

  • Atul Sarkar
  • পোস্ট হয়েছেঃ ১২:০৫:২২ অপরাহ্ন, মঙ্গলবার, ৩ জুন ২০২৫
  • 291
নিষ্ঠুর নিয়োতির নির্মম নির্দেশে না ফেরার দেশে চলে গেলেন বি এ আর আই আর এর, সাবেক মহাপরিচালক, ডঃ ক্ষীরোদ চন্দ্র রায়। গত মঙ্গলবার (২ জুন) ঢাকার  বারডেম হাসপাতালে শেষ নিঃশ্বাস ত্যাগ করেন তিনি।  ১৯৫২ সালে রাজবাড়ীর পাংশা উপজেলার পাট্টা ইউনিয়নের জোনা গ্রামে জন্মগ্রহণকারী একটি  সাধারণ পরিবেশে বেড়ে উঠে কৃষি প্রকৌশল, যোগব্যায়াম ও পুষ্টি বিজ্ঞানের খ্যাতিমান বিশেষজ্ঞ ও রবীন্দ্র সাহিত্যের গভীর পণ্ডিত হিসেবে প্রতিষ্ঠা লাভ করেন। তিনি দীর্ঘদিন ধরে ডায়াবেটিসে ভুগলেও নিয়মিত যোগব্যায়াম, কঠোর শারীরিক নিয়ম-কানুন মেনে চলা এবং খাদ্যাভ্যাসের মাধ্যমে তা নিয়ন্ত্রণে রেখেছিলেন। তিনি স্ত্রী শ্রীমতি স্মৃতি কনা রায়, বিদেশে অবস্থানরত দুই কন্যা, দুই ভাই, ভাইপো-ভাইঝি এবং অসংখ্য শুভাকাঙ্ক্ষী রেখে গেছেন। তাঁর শেষকৃত্য গ্রামের বাড়িতে তাঁর পিতার সমাধি মন্দিরের পাশে সম্পন্ন হয়েছে ।
ডঃ ক্ষীরোদ চন্দ্র রায় (১৯৫২–২০২৫) একজন বিশিষ্ট কৃষি বিজ্ঞানী ছিলেন, যিনি বারির মহাপরিচালক (২০০৯) হিসেবে দায়িত্ব পালন করেন। এছাড়াও তিনি দিনাজপুর গম গবেষণা কেন্দ্রের পরিচালক, কৃষি যন্ত্রপাতি ও ফসলোত্তর প্রযুক্তি বিভাগের প্রধান, এবং সেচ ও পানি ব্যবস্থাপনা বিভাগের প্রধান বিজ্ঞানী হিসেবেও কাজ করেছেন।
বাংলাদেশ কৃষি বিশ্ববিদ্যালয় (১৯৭৬) থেকে প্রথম শ্রেণীতে প্রথম স্থান অর্জন করেন।
এশিয়ান ইনস্টিটিউট অব টেকনোলজি, ব্যাংকক থেকে স্নাতকোত্তর এবং ইউটাহ স্টেট ইউনিভার্সিটি, যুক্তরাষ্ট্র থেকে পিএইচডি ডিগ্রি অর্জন করেন। পরবর্তীতে ইউনিভার্সিটি অব ক্যালিফোর্নিয়া, ডেভিস থেকে পোস্ট-ডক্টরাল গবেষণা সম্পন্ন করেন।
কৃষি যন্ত্রপাতি, সেচ প্রযুক্তি ও ফসলোত্তর ব্যবস্থাপনা বিষয়ে যুগান্তকারী গবেষণা চালিয়ে কৃষকদের উৎপাদন খরচ কমানো ও ফলন বৃদ্ধিতে সহায়তা করেন।
লো-টিলেজ/নো-টিলেজ চাষ পদ্ধতি এবং ড্রিপ সেচ প্রযুক্তি উদ্ভাবন করে গম, ভুট্টা ও আলু চাষে বিপ্লব ঘটান।
বিশ্ব ব্যাংক, এফ এ ও, এডিবি, ইউ এস এ আইডি-সহ বিভিন্ন আন্তর্জাতিক সংস্থার সাথে প্রকাশক ও প্রকাশনা কাজে বিশেষ  অবদান রেখেছেন তিনি ।
১২টি আন্তর্জাতিক ও ২৬টি জাতীয় জার্নালে গবেষণাপত্র প্রকাশ করেন তিনি। এছাড়াও ১১টি প্রযুক্তিগত রিপোর্ট ও ৪টি উপদেশমূলক রিপোর্ট প্রণয়ন করেন।
কৃষি, বিজ্ঞান ও রবীন্দ্রনাথ বিষয়ে ১৪৫টি প্রবন্ধ রচনা করেন এবং যোগব্যায়াম, স্বাস্থ্য ও কৃষি বিষয়ে ৩টি বই প্রকাশ করেন তিনি।
ইঞ্জিনিয়ার্স ইনস্টিটিউশন, বাংলাদেশ, বাংলা একাডেমি, উদীচী শিল্পী গোষ্ঠী-সহ বিভিন্ন সংগঠনের সঙ্গে যুক্ত ছিলেন  ডঃ ক্ষীরোদ চন্দ্র রায়।
আন্তর্জাতিক ধান গবেষণা ইনস্টিটিউট (IRRI), এফ এ ও (আফগানিস্তান, ২০১৩), IFPRI (ঘানা, ২০১৫)-সহ বিভিন্ন সংস্থায় পরামর্শক হিসেবে কাজ করেন, এই গুনি ব‍্যাক্তি।
বাংলাদেশ পরিকল্পনা মন্ত্রণালয় ও অন্যান্য জাতীয় প্রতিষ্ঠানের পরামর্শক হিসেবেও দায়িত্ব পালন করেন তিনি।
কৃষিক্ষেত্রে তাঁর অনবদ্য অবদান এবং মর্যাদাপূর্ণ জীবন বাংলাদেশের কৃষি সম্প্রদায়, পরিবার ও বন্ধুবান্ধবদের মাঝে স্মরণীয় হয়ে থাকবে।
ট্যাগঃ
প্রতিনিধির তথ্য

জনপ্রিয় পোস্ট

জুড়ীতে নিসচা’র সড়ক সচেতনতামূলক ক্যাম্পেইন অনুষ্ঠিত

না ফেরার দেশে চলে গেলেন, বি এ আর আই আর এর সাবেক মহাপরিচালক ডঃ ক্ষীরোদ রায়

পোস্ট হয়েছেঃ ১২:০৫:২২ অপরাহ্ন, মঙ্গলবার, ৩ জুন ২০২৫
নিষ্ঠুর নিয়োতির নির্মম নির্দেশে না ফেরার দেশে চলে গেলেন বি এ আর আই আর এর, সাবেক মহাপরিচালক, ডঃ ক্ষীরোদ চন্দ্র রায়। গত মঙ্গলবার (২ জুন) ঢাকার  বারডেম হাসপাতালে শেষ নিঃশ্বাস ত্যাগ করেন তিনি।  ১৯৫২ সালে রাজবাড়ীর পাংশা উপজেলার পাট্টা ইউনিয়নের জোনা গ্রামে জন্মগ্রহণকারী একটি  সাধারণ পরিবেশে বেড়ে উঠে কৃষি প্রকৌশল, যোগব্যায়াম ও পুষ্টি বিজ্ঞানের খ্যাতিমান বিশেষজ্ঞ ও রবীন্দ্র সাহিত্যের গভীর পণ্ডিত হিসেবে প্রতিষ্ঠা লাভ করেন। তিনি দীর্ঘদিন ধরে ডায়াবেটিসে ভুগলেও নিয়মিত যোগব্যায়াম, কঠোর শারীরিক নিয়ম-কানুন মেনে চলা এবং খাদ্যাভ্যাসের মাধ্যমে তা নিয়ন্ত্রণে রেখেছিলেন। তিনি স্ত্রী শ্রীমতি স্মৃতি কনা রায়, বিদেশে অবস্থানরত দুই কন্যা, দুই ভাই, ভাইপো-ভাইঝি এবং অসংখ্য শুভাকাঙ্ক্ষী রেখে গেছেন। তাঁর শেষকৃত্য গ্রামের বাড়িতে তাঁর পিতার সমাধি মন্দিরের পাশে সম্পন্ন হয়েছে ।
ডঃ ক্ষীরোদ চন্দ্র রায় (১৯৫২–২০২৫) একজন বিশিষ্ট কৃষি বিজ্ঞানী ছিলেন, যিনি বারির মহাপরিচালক (২০০৯) হিসেবে দায়িত্ব পালন করেন। এছাড়াও তিনি দিনাজপুর গম গবেষণা কেন্দ্রের পরিচালক, কৃষি যন্ত্রপাতি ও ফসলোত্তর প্রযুক্তি বিভাগের প্রধান, এবং সেচ ও পানি ব্যবস্থাপনা বিভাগের প্রধান বিজ্ঞানী হিসেবেও কাজ করেছেন।
বাংলাদেশ কৃষি বিশ্ববিদ্যালয় (১৯৭৬) থেকে প্রথম শ্রেণীতে প্রথম স্থান অর্জন করেন।
এশিয়ান ইনস্টিটিউট অব টেকনোলজি, ব্যাংকক থেকে স্নাতকোত্তর এবং ইউটাহ স্টেট ইউনিভার্সিটি, যুক্তরাষ্ট্র থেকে পিএইচডি ডিগ্রি অর্জন করেন। পরবর্তীতে ইউনিভার্সিটি অব ক্যালিফোর্নিয়া, ডেভিস থেকে পোস্ট-ডক্টরাল গবেষণা সম্পন্ন করেন।
কৃষি যন্ত্রপাতি, সেচ প্রযুক্তি ও ফসলোত্তর ব্যবস্থাপনা বিষয়ে যুগান্তকারী গবেষণা চালিয়ে কৃষকদের উৎপাদন খরচ কমানো ও ফলন বৃদ্ধিতে সহায়তা করেন।
লো-টিলেজ/নো-টিলেজ চাষ পদ্ধতি এবং ড্রিপ সেচ প্রযুক্তি উদ্ভাবন করে গম, ভুট্টা ও আলু চাষে বিপ্লব ঘটান।
বিশ্ব ব্যাংক, এফ এ ও, এডিবি, ইউ এস এ আইডি-সহ বিভিন্ন আন্তর্জাতিক সংস্থার সাথে প্রকাশক ও প্রকাশনা কাজে বিশেষ  অবদান রেখেছেন তিনি ।
১২টি আন্তর্জাতিক ও ২৬টি জাতীয় জার্নালে গবেষণাপত্র প্রকাশ করেন তিনি। এছাড়াও ১১টি প্রযুক্তিগত রিপোর্ট ও ৪টি উপদেশমূলক রিপোর্ট প্রণয়ন করেন।
কৃষি, বিজ্ঞান ও রবীন্দ্রনাথ বিষয়ে ১৪৫টি প্রবন্ধ রচনা করেন এবং যোগব্যায়াম, স্বাস্থ্য ও কৃষি বিষয়ে ৩টি বই প্রকাশ করেন তিনি।
ইঞ্জিনিয়ার্স ইনস্টিটিউশন, বাংলাদেশ, বাংলা একাডেমি, উদীচী শিল্পী গোষ্ঠী-সহ বিভিন্ন সংগঠনের সঙ্গে যুক্ত ছিলেন  ডঃ ক্ষীরোদ চন্দ্র রায়।
আন্তর্জাতিক ধান গবেষণা ইনস্টিটিউট (IRRI), এফ এ ও (আফগানিস্তান, ২০১৩), IFPRI (ঘানা, ২০১৫)-সহ বিভিন্ন সংস্থায় পরামর্শক হিসেবে কাজ করেন, এই গুনি ব‍্যাক্তি।
বাংলাদেশ পরিকল্পনা মন্ত্রণালয় ও অন্যান্য জাতীয় প্রতিষ্ঠানের পরামর্শক হিসেবেও দায়িত্ব পালন করেন তিনি।
কৃষিক্ষেত্রে তাঁর অনবদ্য অবদান এবং মর্যাদাপূর্ণ জীবন বাংলাদেশের কৃষি সম্প্রদায়, পরিবার ও বন্ধুবান্ধবদের মাঝে স্মরণীয় হয়ে থাকবে।