
মুসলমানদের বড় দুটি উৎসবের একটি হলো ঈদুল আজহা। উৎসবের এই দিনটিতে বিত্তবানদের পাশাপাশি নিম্ন আয়ের মানুষও একটু ভালো খেতে চায়। কিন্তু অর্থের অভাবে অনেকেই সবপণ্যও কিনতে পারে না। এ ঈদে কোরবানি হওয়ায় সমাজের বন্টনকৃত কম বেশি মাংস সবাই পান। খাবারে গরুর মাংসের সঙ্গে পোলাও থাকলে আনন্দ পরিপূর্ণ হয়। কিন্তু পোলাও চাল উচ্চমূল্যের কারণে হতদরিদ্রদের জন্য মাংস-পোলাও খাওয়া স্বপ্নই থেকে যায়।
শেরপুরের ঝিনাইগাতী উপজেলায় দুই শতাধিক নিম্ন আয়ের পরিবারের মাঝে একটু হাসি ফোটানোর জন্য এই ঈদ উপহার সামগ্রী বিতরণের উদ্যোগ নিয়েছে ‘ভয়েস অব ঝিনাইগাতী’ নামের একটি সামাজিক অরাজনৈতিক সংগঠন। বৃহস্পতিবার (৫ জুন) সকাল ১১টার দিকে উপজেলা পরিষদের হল রুমে ‘ঈদে হাসি ফুটুক সবার মুখে’ ব্যানারে তাদের হাতে উপহার সামগ্রী তুলে দেন এ সংগঠনের সদস্যরা। অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথি ছিলেন উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) মো. আশরাফুল আলম রাসেল।
প্রবাসী বাংলাদেশি ড. জাফর ইকবালের আর্থিক সহায়তায় ঈদ উপহার হিসেবে পাঁচ সদস্যের একটি পরিবারের জন্যে পোলাও চাল, সেমাই, চিনি, তেল, সাবান, পিঠা, মুড়ি, ডাল ও আলু দেওয়া হয়। ঈদুল আজহা উপলক্ষে এ স্বেচ্ছাসেবী সংগঠনের এই আয়োজনে হাসি ফুটেছে দুই শতাধিক নিম্ন আয়ের পরিবারে।
উপহার সামগ্রী বিতরণ অনুষ্ঠানে সভাপত্বি করেন ঝিনাইগাতী সদর ইউনিয়ন পরিষদের সদস্য ও ভয়েস অব ঝিনাইগাতী’র প্রতিষ্ঠাতা সাংবাদিক মো. জাহিদুল হক মনির। সংগঠনের সাধারণ সম্পাদক মো. সোহেল রানার, সঞ্চালনায় বিশেষ অতিথি হিসাবে বক্তব্য দেন থানার অফিসার ইনচার্জ (ওসি) মো. আল-আমীন, উপজেলা বিএনপি’র আহবায়ক মো. শাহজাাহান আকন্দ, যুগ্ন আহবায়ক মো. আব্দুল মান্নান, সহকারী শিক্ষষক মো. রোস্তম আলী, সাংবাদিক মো. গোলাম রব্বানী টিটু ও মো. নাঈম ইসলাম।
আয়োজক সংগঠনের প্রতিষ্ঠাতা মো. জাহিদুল হক মনির বলেন, ‘আমাদের চারপাশে অনেকেই আছেন, যারা প্রতিদিনের প্রয়োজনীয় খাবার জোগাড় করতেও হিমশিম খান। তাদের মুখে ঈদের আনন্দ ফোটাতে পারা, আমাদের ঈদের আনন্দকে আরও পরিপূর্ণ করে তোলে। আজকের এই আয়োজন শুধু দান নয়, বরং আমাদের মানবিক দায়বদ্ধতার একটি প্রতিফলন। চলুন, আমরা সবাই মিলে এমন একটি সমাজ গড়ি, যেখানে কেউ ক্ষুধার্ত থাকবে না, কেউ ঈদের দিনে একাকী ও উপেক্ষিত থাকবে না। সেই সঙ্গে দোয়া করছি আল্লাহ যেন আমাদের এই প্রচেষ্টা কবুল করেন এবং ভবিষ্যতেও যেন আমরা এ ধরণের মানবিক কাজের সাথে যুক্ত থাকতে পারি।’
উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) মো. আশরাফুল আলম রাসেল বলেন, ‘ঈদে নিম্ন আয়ের কিছু সংখ্যক মানুষের হাসি ফোটাতে ‘ভয়েস অব ঝিনাইগাতী’ এর এই উদ্যোগের জন্য আয়োজকদের ধন্যবাদ জানাই। তরুণদের এই মানবিক উদ্যোগে আমিও পাশে আছি। অনেক বিত্তবান আছেন, যাদের সাহায্য করার মানসিকতা থাকা সত্তে¡ও উদ্যোগের অভাবে সুবিধাবঞ্চিত মানুষকে সহযোগিতা করতে পারেন না। অবহেলিত মানুষের পাশে রাষ্ট্র্রের পাশাপাশি দেশ ও সমাজের সর্বস্তরের ব্যক্তিরা এগিয়ে এলে তাদের মুখে হাসি ফোটানো সম্ভব। ‘ভয়েস অব ঝিনাইগাতী’র এ ধরনের কাজ দৃষ্টান্তমূলক।’