০৪:৩৭ অপরাহ্ন, সোমবার, ০৯ জুন ২০২৫, ২৬ জ্যৈষ্ঠ ১৪৩২ বঙ্গাব্দ

কুড়িগ্রামে শেষ মুহূর্তে জমে উঠেছে গরুর হাট। ক্রেতা বলছে দাম বেশি বিক্রেতা বলছে কম

ঈদুল আযহাকে সামনে রেখে
কুড়িগ্রামে শেষ মুহূর্তে জমে উঠেছে গরুর হাট। গরু কিনতে আসা ক্রেতা বলছে এবারে গরুর দাম গত বছরের তুলনায় কিছুটা বেশি, অপরদিকে বিক্রেতারা জানাচ্ছে গরু লালন পালনে খরচের তুলনায় দাম অনেকটা কম।
কুড়িগ্রামের ঐতিহ্যবাহী গরুরহাট যাত্রাপুর, কাঠালবাড়ী, দুর্গাপুর, মোগলবাসা, চররাজীবপুর, রৌমারী ও চিলমারীর কয়েকটি হাটঘুরে দেখা দেখা গেছে এবারে কোরবানির গরু বিকিকিনিতে ক্রেতা- বিক্রেতার মধ্যে দাম নিয়ে ভিন্নমাত্রার যৌক্তিক বিতর্ক।
কুড়িগ্রাম সদর উপজেলার ঐতিহ্যবাহী যাত্রাপুর হাটে গরু বিক্রি করতে আসা ঝুনকার চরের কৃষক নওশাদ আলি, চর ভগবতীপুরের ফজলুল হক,অষ্টমীরচরের জমসেদ আলী, নারায়নপুরের ঝাউকুটি চরের সমসের আলীসহ চরাঞ্চলের অনেকে কৃষক জানান, কুড়িগ্রামের এই হাটটি মূলতঃ চরের মানুষের উৎপাদিত পন্যের বিকিকিনির একমাত্র ও অদ্বিতীয় কেন্দ্রস্থল। এই হাটে প্রতিটি
পন্য কমদামে ক্রয়ের জন্য দেশের বিভিন্ন জায়গা থেকে পাইকার আসে।
হাটটি সীমান্তবর্তী হওয়ায় আগে
 প্রতিহাটে ভারতীয় গরু আসতো, এখন আসে না বল্লেই চলে। এখন চরাঞ্চলের পালিত গরু দিয়েই হাটটি
পরিপূর্ণ। সেই হিসেবে স্থানীয় কৃষক ও খামারীরা দাম একটু বেশি পাবার কথা ছিলো। গরুর খাদ্য ও আনুষাঙ্গিক ব্যয় নির্বাহ করে গরু লালন পালনে করে যে গরু
গতবার ১ লক্ষ টাকায় বিক্রি হয়েছে এবার সেই একই রকম গরু ক্রেতারা ৮০ হাজার টাকার উপরে দাম বলছে না। স্থানীয় ক্রেতারা বিভিন্ন হাটে বড় গরুর চেয়ে মাঝারি ও ছোট গরু ক্রয়
করছে বেশি। বড় সাইজের গরু ঢাকা, চট্টগ্রাম, ফেনিসহ বাইরের
বড় ব্যবসায়ীরা নিয়ে যাচ্ছে। প্রশাসনের পক্ষ থেকে হাট গুলিতে সার্বিক নিরাপত্তা জোরদার করার পাশাপাশি সেনাবাহিনীও টহল দিচ্ছে।
কুড়িগ্রাম জেলায় এবারে স্থায়ী ও অস্থায়ী মিলে মোট ২৯টি কোরবানির গবাদি পশুর হাট বসেছে।
হাটের ইজারদাররা জানান, হাটে আইন-শৃঙ্খলা পরিস্থিতি খুবই ভালো। এখন পর্যন্ত কোনো অপ্রীতিকর ঘটনা ঘটেনি। পুলিশ প্রশাসন ও সেনাবাহিনী সব সময় তদারকি করছে। বাংলাদেশ ব্যাংকের
নির্দেশে হাটগুলোতে জালনোট সনাক্ত করা হচ্ছে এতে ক্রেতা বিক্রেতা প্রতারণার হওয়ার সম্ভবনা থেকে রেহাই পাচ্ছে।
কুড়িগ্রাম জেলা প্রাণিসম্পদ কর্মকর্তা ডা. মো. হাবিবুর রহমান জানিয়েছেন, এবার জেলায় কোরবানিযোগ্য পশুর সংখ্যা ২ লাখ ৮০ হাজার ৪৮৬টি প্রস্তুত রয়েছে। আর চাহিদা রয়েছে ২ লাখ ২২ হাজার ৪৮০টি। উদ্বৃত্ত পশুর সংখ্যা ৫৭ হাজার ৬৪৬টি। প্রাণিসম্পদ বিভাগ থেকে জেলার ৯ উপজেলায় ভেটেরিনারি টিম গঠন করা হয়েছে।
কুড়িগ্রাম জেলা প্রশাসক নুসরাত সুলতানা জানান, পবিত্র ঈদুল আযহাকে সামনে রেখে জেলার বিভিন্ন উপজেলার স্থায়ী ও অস্থায়ী গরুর হাট বসেছে। অপ্রীতিকর ঘটনা এড়ানোসহ জাল নোট সনাক্ত, চুরি কিংবা অতিরিক্ত হাসিল আদায়ের কোনো ঘটনা যাতে না ঘটে সে ব্যাপারে আইনশৃঙ্খলা বাহিনীকে কঠোর নির্দেশনা দেয়া হয়েছে।
হাটে অতিরিক্ত খাজনা আদায় ও নিয়মবহির্ভূত কাজের সাথে সম্পৃক্ত থাকায় ইতোমধ্যে সেনাবাহিনী কর্তৃক কয়েকজন হাট ইজারাদারকে আটকসহ আইনানুগ ব্যবস্থা গ্রহন করা হয়েছে।
ঈদের আর মাত্র ২ দিন বাকি এরি মধ্যে গরু বিক্রেতারা গরুর একটু বেশি দামে বিক্রির আশায় নিজ নিজ এলাকার হাট ছেড়ে অন্যহাটগুলোতে
গরু নিয়ে যাচ্ছে এতে অনেক গরু বিক্রেতা পথিমধ্যে গরু আনা নেয়ায় বিড়ম্বনার স্বীকার হলেও শেষ মুহুর্তে জমে উঠেছে গরু ক্রয়- বিক্রয়ে মানুষের ঈদ আনন্দ।
ট্যাগঃ
প্রতিনিধির তথ্য

জনপ্রিয় পোস্ট

জুড়ীতে নিসচা’র সড়ক সচেতনতামূলক ক্যাম্পেইন অনুষ্ঠিত

কুড়িগ্রামে শেষ মুহূর্তে জমে উঠেছে গরুর হাট। ক্রেতা বলছে দাম বেশি বিক্রেতা বলছে কম

পোস্ট হয়েছেঃ ০৭:৪৯:৩৯ পূর্বাহ্ন, বুধবার, ৪ জুন ২০২৫
ঈদুল আযহাকে সামনে রেখে
কুড়িগ্রামে শেষ মুহূর্তে জমে উঠেছে গরুর হাট। গরু কিনতে আসা ক্রেতা বলছে এবারে গরুর দাম গত বছরের তুলনায় কিছুটা বেশি, অপরদিকে বিক্রেতারা জানাচ্ছে গরু লালন পালনে খরচের তুলনায় দাম অনেকটা কম।
কুড়িগ্রামের ঐতিহ্যবাহী গরুরহাট যাত্রাপুর, কাঠালবাড়ী, দুর্গাপুর, মোগলবাসা, চররাজীবপুর, রৌমারী ও চিলমারীর কয়েকটি হাটঘুরে দেখা দেখা গেছে এবারে কোরবানির গরু বিকিকিনিতে ক্রেতা- বিক্রেতার মধ্যে দাম নিয়ে ভিন্নমাত্রার যৌক্তিক বিতর্ক।
কুড়িগ্রাম সদর উপজেলার ঐতিহ্যবাহী যাত্রাপুর হাটে গরু বিক্রি করতে আসা ঝুনকার চরের কৃষক নওশাদ আলি, চর ভগবতীপুরের ফজলুল হক,অষ্টমীরচরের জমসেদ আলী, নারায়নপুরের ঝাউকুটি চরের সমসের আলীসহ চরাঞ্চলের অনেকে কৃষক জানান, কুড়িগ্রামের এই হাটটি মূলতঃ চরের মানুষের উৎপাদিত পন্যের বিকিকিনির একমাত্র ও অদ্বিতীয় কেন্দ্রস্থল। এই হাটে প্রতিটি
পন্য কমদামে ক্রয়ের জন্য দেশের বিভিন্ন জায়গা থেকে পাইকার আসে।
হাটটি সীমান্তবর্তী হওয়ায় আগে
 প্রতিহাটে ভারতীয় গরু আসতো, এখন আসে না বল্লেই চলে। এখন চরাঞ্চলের পালিত গরু দিয়েই হাটটি
পরিপূর্ণ। সেই হিসেবে স্থানীয় কৃষক ও খামারীরা দাম একটু বেশি পাবার কথা ছিলো। গরুর খাদ্য ও আনুষাঙ্গিক ব্যয় নির্বাহ করে গরু লালন পালনে করে যে গরু
গতবার ১ লক্ষ টাকায় বিক্রি হয়েছে এবার সেই একই রকম গরু ক্রেতারা ৮০ হাজার টাকার উপরে দাম বলছে না। স্থানীয় ক্রেতারা বিভিন্ন হাটে বড় গরুর চেয়ে মাঝারি ও ছোট গরু ক্রয়
করছে বেশি। বড় সাইজের গরু ঢাকা, চট্টগ্রাম, ফেনিসহ বাইরের
বড় ব্যবসায়ীরা নিয়ে যাচ্ছে। প্রশাসনের পক্ষ থেকে হাট গুলিতে সার্বিক নিরাপত্তা জোরদার করার পাশাপাশি সেনাবাহিনীও টহল দিচ্ছে।
কুড়িগ্রাম জেলায় এবারে স্থায়ী ও অস্থায়ী মিলে মোট ২৯টি কোরবানির গবাদি পশুর হাট বসেছে।
হাটের ইজারদাররা জানান, হাটে আইন-শৃঙ্খলা পরিস্থিতি খুবই ভালো। এখন পর্যন্ত কোনো অপ্রীতিকর ঘটনা ঘটেনি। পুলিশ প্রশাসন ও সেনাবাহিনী সব সময় তদারকি করছে। বাংলাদেশ ব্যাংকের
নির্দেশে হাটগুলোতে জালনোট সনাক্ত করা হচ্ছে এতে ক্রেতা বিক্রেতা প্রতারণার হওয়ার সম্ভবনা থেকে রেহাই পাচ্ছে।
কুড়িগ্রাম জেলা প্রাণিসম্পদ কর্মকর্তা ডা. মো. হাবিবুর রহমান জানিয়েছেন, এবার জেলায় কোরবানিযোগ্য পশুর সংখ্যা ২ লাখ ৮০ হাজার ৪৮৬টি প্রস্তুত রয়েছে। আর চাহিদা রয়েছে ২ লাখ ২২ হাজার ৪৮০টি। উদ্বৃত্ত পশুর সংখ্যা ৫৭ হাজার ৬৪৬টি। প্রাণিসম্পদ বিভাগ থেকে জেলার ৯ উপজেলায় ভেটেরিনারি টিম গঠন করা হয়েছে।
কুড়িগ্রাম জেলা প্রশাসক নুসরাত সুলতানা জানান, পবিত্র ঈদুল আযহাকে সামনে রেখে জেলার বিভিন্ন উপজেলার স্থায়ী ও অস্থায়ী গরুর হাট বসেছে। অপ্রীতিকর ঘটনা এড়ানোসহ জাল নোট সনাক্ত, চুরি কিংবা অতিরিক্ত হাসিল আদায়ের কোনো ঘটনা যাতে না ঘটে সে ব্যাপারে আইনশৃঙ্খলা বাহিনীকে কঠোর নির্দেশনা দেয়া হয়েছে।
হাটে অতিরিক্ত খাজনা আদায় ও নিয়মবহির্ভূত কাজের সাথে সম্পৃক্ত থাকায় ইতোমধ্যে সেনাবাহিনী কর্তৃক কয়েকজন হাট ইজারাদারকে আটকসহ আইনানুগ ব্যবস্থা গ্রহন করা হয়েছে।
ঈদের আর মাত্র ২ দিন বাকি এরি মধ্যে গরু বিক্রেতারা গরুর একটু বেশি দামে বিক্রির আশায় নিজ নিজ এলাকার হাট ছেড়ে অন্যহাটগুলোতে
গরু নিয়ে যাচ্ছে এতে অনেক গরু বিক্রেতা পথিমধ্যে গরু আনা নেয়ায় বিড়ম্বনার স্বীকার হলেও শেষ মুহুর্তে জমে উঠেছে গরু ক্রয়- বিক্রয়ে মানুষের ঈদ আনন্দ।