১১:৩৯ অপরাহ্ন, সোমবার, ৩০ জুন ২০২৫, ১৬ আষাঢ় ১৪৩২ বঙ্গাব্দ

গাজীপুরে জমজমাট ঐতিহ্যবাহী রথমেলা চলছে, উপচে পড়া ভিড়

গাজীপুরে জমজমাট ঐতিহ্যবাহী রথমেলা চলছে, উপচে পড়া ভিড়

জয়দেবপুর, গাজীপুর:
গাজীপুরের জয়দেবপুরের রথখোলা এলাকায় চলছে ঐতিহ্যবাহী রথমেলা—যা গাজীপুরের সবচেয়ে বড় ও দীর্ঘস্থায়ী মেলাগুলোর একটি হিসেবে পরিচিত। প্রতি বছর আষাঢ় মাসের রথযাত্রা উপলক্ষে আয়োজিত এই মেলাটি শুধু হিন্দু ধর্মাবলম্বীদের ধর্মীয় উৎসব নয়, বরং এটি এখন সার্বজনীন এক মিলনমেলায় পরিণত হয়েছে।

🎉 হাজারো মানুষের পদচারণায় মুখর রথখোলা এলাকা

রথযাত্রার দিন থেকে শুরু হয়ে এই মেলা চলে প্রায় ৭ থেকে ১০ দিন পর্যন্ত। প্রতিদিন সকাল থেকে রাত অবধি নানা বয়সী, নানা ধর্ম-বর্ণের মানুষ ভিড় করছে এই ঐতিহাসিক মেলায়। রথখোলা মাঠজুড়ে বসেছে শত শত দোকানপাট—খেলনা, পিঠা-পুলি, হস্তশিল্প, কাচের গয়না, মাটির তৈজসপত্রসহ আরও নানা ঐতিহ্যবাহী সামগ্রী নিয়ে।

🛕 ধর্মীয় আচার-অনুষ্ঠান আর উৎসবের আবহ

মেলার মূল আকর্ষণ বিশাল কাঠের তৈরি ঐতিহ্যবাহী রথ, যা বিশেষভাবে শোভাযাত্রায় টানা হয়। রথযাত্রা উপলক্ষে স্থানীয় মন্দির থেকে শুরু হয় পূজা-অর্চনা ও নানা ধর্মীয় আচার। এরপর ভক্তদের অংশগ্রহণে রথ টানার দৃশ্য দেখতে জড়ো হয় হাজারো মানুষ।

🎪 বিনোদন আর সাংস্কৃতিক আয়োজন

রথমেলাকে ঘিরে আয়োজন করা হয় যাত্রাপালা, সার্কাস, পুতুলনাচ, বাউলগান ও পালাগান—যা এই অঞ্চলের লোকসংস্কৃতিকে তুলে ধরে। ছোটদের জন্য আছে নাগরদোলা, বেলুন, ঘুড়ি, মার্বেল গেমসহ নানা খেলাধুলা।

🔒 প্রশাসনের কড়া নজরদারি

মেলায় প্রতিদিন লাখো মানুষের সমাগম হওয়ায় নিরাপত্তা ব্যবস্থা জোরদার করা হয়েছে। জেলা প্রশাসন ও গাজীপুর মেট্রোপলিটন পুলিশের পক্ষ থেকে মোতায়েন করা হয়েছে অতিরিক্ত পুলিশ ও স্বেচ্ছাসেবক দল। পাশাপাশি রয়েছে অস্থায়ী চিকিৎসা ক্যাম্প, বিশুদ্ধ পানীয় জল ও শৌচাগারের ব্যবস্থা।

🗣️ স্থানীয়দের প্রতিক্রিয়া

স্থানীয় বাসিন্দা শ্যামল দাস জানান, “এই রথমেলা আমাদের পূর্বপুরুষদের সময় থেকে চলে আসছে। এটি শুধু ধর্মীয় অনুষ্ঠান না, বরং আমাদের সংস্কৃতি, ঐতিহ্য আর উৎসবের কেন্দ্রবিন্দু।”

অপরদিকে একজন মুসলিম দর্শনার্থী বলেন, “আমরা প্রতিবছর পরিবার নিয়ে এই মেলায় আসি। এখানে ধর্ম-বর্ণ নির্বিশেষে সবাই মিলে আনন্দ করি, এটাই আমাদের সম্প্রীতির পরিচয়।”


📌 উল্লেখ্য:
এই রথমেলা শুধু গাজীপুরবাসীর জন্য নয়, বরং আশেপাশের এলাকা থেকেও বিপুল সংখ্যক মানুষ এতে অংশগ্রহণ করেন। এটি গাজীপুরের সাংস্কৃতিক ঐতিহ্যের জীবন্ত প্রমাণ এবং বাংলাদেশের সাম্প্রদায়িক সম্প্রীতির অনন্য নিদর্শন।

ট্যাগঃ
প্রতিনিধির তথ্য

জনপ্রিয় পোস্ট

বেইহাং বিশ্ববিদ্যালয়ের সেরা গ্রাজুয়েট অ্যাওয়ার্ড পেলেন রাণীনগরের তরিকুল ইসলাম

গাজীপুরে জমজমাট ঐতিহ্যবাহী রথমেলা চলছে, উপচে পড়া ভিড়

পোস্ট হয়েছেঃ ০৬:২৩:০২ পূর্বাহ্ন, সোমবার, ৩০ জুন ২০২৫

গাজীপুরে জমজমাট ঐতিহ্যবাহী রথমেলা চলছে, উপচে পড়া ভিড়

জয়দেবপুর, গাজীপুর:
গাজীপুরের জয়দেবপুরের রথখোলা এলাকায় চলছে ঐতিহ্যবাহী রথমেলা—যা গাজীপুরের সবচেয়ে বড় ও দীর্ঘস্থায়ী মেলাগুলোর একটি হিসেবে পরিচিত। প্রতি বছর আষাঢ় মাসের রথযাত্রা উপলক্ষে আয়োজিত এই মেলাটি শুধু হিন্দু ধর্মাবলম্বীদের ধর্মীয় উৎসব নয়, বরং এটি এখন সার্বজনীন এক মিলনমেলায় পরিণত হয়েছে।

🎉 হাজারো মানুষের পদচারণায় মুখর রথখোলা এলাকা

রথযাত্রার দিন থেকে শুরু হয়ে এই মেলা চলে প্রায় ৭ থেকে ১০ দিন পর্যন্ত। প্রতিদিন সকাল থেকে রাত অবধি নানা বয়সী, নানা ধর্ম-বর্ণের মানুষ ভিড় করছে এই ঐতিহাসিক মেলায়। রথখোলা মাঠজুড়ে বসেছে শত শত দোকানপাট—খেলনা, পিঠা-পুলি, হস্তশিল্প, কাচের গয়না, মাটির তৈজসপত্রসহ আরও নানা ঐতিহ্যবাহী সামগ্রী নিয়ে।

🛕 ধর্মীয় আচার-অনুষ্ঠান আর উৎসবের আবহ

মেলার মূল আকর্ষণ বিশাল কাঠের তৈরি ঐতিহ্যবাহী রথ, যা বিশেষভাবে শোভাযাত্রায় টানা হয়। রথযাত্রা উপলক্ষে স্থানীয় মন্দির থেকে শুরু হয় পূজা-অর্চনা ও নানা ধর্মীয় আচার। এরপর ভক্তদের অংশগ্রহণে রথ টানার দৃশ্য দেখতে জড়ো হয় হাজারো মানুষ।

🎪 বিনোদন আর সাংস্কৃতিক আয়োজন

রথমেলাকে ঘিরে আয়োজন করা হয় যাত্রাপালা, সার্কাস, পুতুলনাচ, বাউলগান ও পালাগান—যা এই অঞ্চলের লোকসংস্কৃতিকে তুলে ধরে। ছোটদের জন্য আছে নাগরদোলা, বেলুন, ঘুড়ি, মার্বেল গেমসহ নানা খেলাধুলা।

🔒 প্রশাসনের কড়া নজরদারি

মেলায় প্রতিদিন লাখো মানুষের সমাগম হওয়ায় নিরাপত্তা ব্যবস্থা জোরদার করা হয়েছে। জেলা প্রশাসন ও গাজীপুর মেট্রোপলিটন পুলিশের পক্ষ থেকে মোতায়েন করা হয়েছে অতিরিক্ত পুলিশ ও স্বেচ্ছাসেবক দল। পাশাপাশি রয়েছে অস্থায়ী চিকিৎসা ক্যাম্প, বিশুদ্ধ পানীয় জল ও শৌচাগারের ব্যবস্থা।

🗣️ স্থানীয়দের প্রতিক্রিয়া

স্থানীয় বাসিন্দা শ্যামল দাস জানান, “এই রথমেলা আমাদের পূর্বপুরুষদের সময় থেকে চলে আসছে। এটি শুধু ধর্মীয় অনুষ্ঠান না, বরং আমাদের সংস্কৃতি, ঐতিহ্য আর উৎসবের কেন্দ্রবিন্দু।”

অপরদিকে একজন মুসলিম দর্শনার্থী বলেন, “আমরা প্রতিবছর পরিবার নিয়ে এই মেলায় আসি। এখানে ধর্ম-বর্ণ নির্বিশেষে সবাই মিলে আনন্দ করি, এটাই আমাদের সম্প্রীতির পরিচয়।”


📌 উল্লেখ্য:
এই রথমেলা শুধু গাজীপুরবাসীর জন্য নয়, বরং আশেপাশের এলাকা থেকেও বিপুল সংখ্যক মানুষ এতে অংশগ্রহণ করেন। এটি গাজীপুরের সাংস্কৃতিক ঐতিহ্যের জীবন্ত প্রমাণ এবং বাংলাদেশের সাম্প্রদায়িক সম্প্রীতির অনন্য নিদর্শন।