০২:৫৯ পূর্বাহ্ন, শুক্রবার, ০৪ জুলাই ২০২৫, ১৯ আষাঢ় ১৪৩২ বঙ্গাব্দ

অবশেষে শিক্ষিকা লাকী আক্তারের মৃত্যুর রহস্য উম্মোচন

  • আব্দুল মোমিন
  • পোস্ট হয়েছেঃ ০৭:৪৬:০১ পূর্বাহ্ন, বৃহস্পতিবার, ৩ জুলাই ২০২৫
  • 222

টাঙ্গাইল জেলার মধুপুর উপজেলার কুড়ালিয়া  কেউটাই সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের সহকারী শিক্ষিকা লুৎফুন্নাহার লাকী আক্তারের আত্মহত্যার আসল ঘটনা উন্মোচিত হয়েছে। আত্মহত্যার জন্য দায়ী সহকারী শিক্ষক ইবনে মাসুদ। মিথ্যা প্রেমের জালে ফাঁসিয়ে বিয়ের প্রলোভন দেখিয়ে দিনের পর দিন শারীরিক সম্পর্ক এবং অন্তঃসত্তা লাকীকে বিয়ে করতে অস্বীকার করায় এ আত্মহত্যার ঘটনা ঘটেছে। লুৎফুন্নাহার লাকী উপজেলার আউশনারা ইউনিয়নের হলুদিয়া গ্রামের আব্দুল লতিফের বড় মেয়ে। বাবার জন্মস্থান উপজেলার কুড়ালিয়া গ্রামে হলেও  হলুদিয়া গ্রামে থেকেই বেড়ে ওঠে লাকি আক্তার । গত ২৪ জুন লাকী আক্তার তার নিজ রুমে আত্মহত্যার জন্য কীটনাশক পান করেন।  দ্রুত মধুপুর উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে নেওয়া হলে তার অবস্থার অবনতি দেখে  কর্ত্বব্যরত চিকিৎস্যক উন্নত চিকিৎসার জন্য ময়মনসিংহ হাসপাতালে স্থানান্তর করেন। তিনদিন বেচে থাকার পর গত ২৭ জুন লাকী আক্তার শেষ নিঃস্বাস ত্যাগ করেন। তার এ অস্বাভাবিক মৃত্যুর পর সামনে আসে চাঞ্চল্যকর অনেক তথ্য। লাকীর থাকার কক্ষে পাওয়া যায় একটি ডায়েরি। সেই ডায়েরি খুলতেই চোখ পড়ে তার লেখা পাঁচ পাতায় আত্মহত্যার আসল ঘটনা। ২০২৪ সালে প্রশিক্ষনে গিয়ে পরিচয় হয় গোপিনাথপুর সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের সহকারী শিক্ষক ইবনে মাসুদের সাথে। মাসুদ সুকৌশলে অল্প সময়ের মধ্যে সরল মনা লাকি আক্তারকে তার প্রেমের ফাঁদে ফেলে। বিয়ের প্রলোভন দেখিয়ে বহুবার করে শারীরিক সম্পর্ক। সর্বশেষ দীর্ঘ প্রায় ২বছর প্রেম, শারিরীক সম্মপর্ক এবং হয়ে পড়েন অন্তসত্তা। বিষয়টি মাসুদকে জানায় এবং ছুটে যায় মাসুদের বাড়ীতে তাকে বিয়ে করার জন্য। মাসুদের বউ বাচ্চা আছে বলে লাকী কে সে বিয়ে করতে অস্বীকার করে। হতাশ হয়ে বাড়ি ফিরে এসে লাকি তার ডায়েরির পাতায় মাসুদের প্রতারনার গল্প তুলে ধরেন, পৃথিবীতে মৃত্যু যন্ত্রণা সহ্য করে বেঁচে থাকার চেয়ে মরে যাওয়া অনেক ভালো। আজ শেষ বিকেল পর্যন্তও বেঁচে থাকার ইচ্ছে মনের গভীরে উঁকি দিয়ে ছিলো কিন্তু তোমার অবজ্ঞার আর অবহেলার কারণে আত্মহত্যার সিদ্ধান্ত নিয়েই ফেললাম। আমাকে ছাড়া ভালো থেকো। এভাবেই প্রতারক মাসুদের বিরুদ্ধে ডায়েরির পাঁচ পাতার অভিযোগ লিখে আত্মহত্যার পথ বেছে নিলো স্কুল শিক্ষিকা লুৎফুন্নাহার লাকি। লাকীর সাথে প্রতারনা এবং আত্মহত্যার প্ররোচনার দায়ে লাকীর বাবা আব্দুল লতিফ  মাসুদের নামে গত ২৮ জুন মধুপুর থানায় একটি মামলা করেন।  মধুপুর থানা ইনচার্জ এমরানুল কবীর  ঘটনার সত্যতা নিশ্চিত করেছেন। আজকের খবর পত্রিকার প্রতিনিধিকে তিনি জানান, বিয়ের প্রলোভন দিয়ে মাসুদ শিক্ষিকার সাথে শারীরিক সম্পর্ক গড়ে তোলে এবং এক পর্ষায়ে সে গর্ভবতী হলে মাসুদকে বিয়ে করতে বলে কিন্তু সে বিয়ে করতে অপারগতা প্রকাশ করলে শিক্ষিকা লোকলজ্জার ভয়ে আত্মহত্যার পথ বেছে নেয়। আত্মহত্যার প্ররোচনায় এবং প্রতারনার দায়ে মাসুদের নামে মামলা হয়েছে।  তাকে গ্রেফতারের সর্বাত্বক   চেষ্টা চলছে বলে জানিয়েছেন।

ট্যাগঃ
প্রতিনিধির তথ্য

জনপ্রিয় পোস্ট

শৈলকুপায় জমি দখল নিয়ে দাদাগিরি! পরিবারের রাস্তা বন্ধ করে অবরুদ্ধ

অবশেষে শিক্ষিকা লাকী আক্তারের মৃত্যুর রহস্য উম্মোচন

পোস্ট হয়েছেঃ ০৭:৪৬:০১ পূর্বাহ্ন, বৃহস্পতিবার, ৩ জুলাই ২০২৫

টাঙ্গাইল জেলার মধুপুর উপজেলার কুড়ালিয়া  কেউটাই সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের সহকারী শিক্ষিকা লুৎফুন্নাহার লাকী আক্তারের আত্মহত্যার আসল ঘটনা উন্মোচিত হয়েছে। আত্মহত্যার জন্য দায়ী সহকারী শিক্ষক ইবনে মাসুদ। মিথ্যা প্রেমের জালে ফাঁসিয়ে বিয়ের প্রলোভন দেখিয়ে দিনের পর দিন শারীরিক সম্পর্ক এবং অন্তঃসত্তা লাকীকে বিয়ে করতে অস্বীকার করায় এ আত্মহত্যার ঘটনা ঘটেছে। লুৎফুন্নাহার লাকী উপজেলার আউশনারা ইউনিয়নের হলুদিয়া গ্রামের আব্দুল লতিফের বড় মেয়ে। বাবার জন্মস্থান উপজেলার কুড়ালিয়া গ্রামে হলেও  হলুদিয়া গ্রামে থেকেই বেড়ে ওঠে লাকি আক্তার । গত ২৪ জুন লাকী আক্তার তার নিজ রুমে আত্মহত্যার জন্য কীটনাশক পান করেন।  দ্রুত মধুপুর উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে নেওয়া হলে তার অবস্থার অবনতি দেখে  কর্ত্বব্যরত চিকিৎস্যক উন্নত চিকিৎসার জন্য ময়মনসিংহ হাসপাতালে স্থানান্তর করেন। তিনদিন বেচে থাকার পর গত ২৭ জুন লাকী আক্তার শেষ নিঃস্বাস ত্যাগ করেন। তার এ অস্বাভাবিক মৃত্যুর পর সামনে আসে চাঞ্চল্যকর অনেক তথ্য। লাকীর থাকার কক্ষে পাওয়া যায় একটি ডায়েরি। সেই ডায়েরি খুলতেই চোখ পড়ে তার লেখা পাঁচ পাতায় আত্মহত্যার আসল ঘটনা। ২০২৪ সালে প্রশিক্ষনে গিয়ে পরিচয় হয় গোপিনাথপুর সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের সহকারী শিক্ষক ইবনে মাসুদের সাথে। মাসুদ সুকৌশলে অল্প সময়ের মধ্যে সরল মনা লাকি আক্তারকে তার প্রেমের ফাঁদে ফেলে। বিয়ের প্রলোভন দেখিয়ে বহুবার করে শারীরিক সম্পর্ক। সর্বশেষ দীর্ঘ প্রায় ২বছর প্রেম, শারিরীক সম্মপর্ক এবং হয়ে পড়েন অন্তসত্তা। বিষয়টি মাসুদকে জানায় এবং ছুটে যায় মাসুদের বাড়ীতে তাকে বিয়ে করার জন্য। মাসুদের বউ বাচ্চা আছে বলে লাকী কে সে বিয়ে করতে অস্বীকার করে। হতাশ হয়ে বাড়ি ফিরে এসে লাকি তার ডায়েরির পাতায় মাসুদের প্রতারনার গল্প তুলে ধরেন, পৃথিবীতে মৃত্যু যন্ত্রণা সহ্য করে বেঁচে থাকার চেয়ে মরে যাওয়া অনেক ভালো। আজ শেষ বিকেল পর্যন্তও বেঁচে থাকার ইচ্ছে মনের গভীরে উঁকি দিয়ে ছিলো কিন্তু তোমার অবজ্ঞার আর অবহেলার কারণে আত্মহত্যার সিদ্ধান্ত নিয়েই ফেললাম। আমাকে ছাড়া ভালো থেকো। এভাবেই প্রতারক মাসুদের বিরুদ্ধে ডায়েরির পাঁচ পাতার অভিযোগ লিখে আত্মহত্যার পথ বেছে নিলো স্কুল শিক্ষিকা লুৎফুন্নাহার লাকি। লাকীর সাথে প্রতারনা এবং আত্মহত্যার প্ররোচনার দায়ে লাকীর বাবা আব্দুল লতিফ  মাসুদের নামে গত ২৮ জুন মধুপুর থানায় একটি মামলা করেন।  মধুপুর থানা ইনচার্জ এমরানুল কবীর  ঘটনার সত্যতা নিশ্চিত করেছেন। আজকের খবর পত্রিকার প্রতিনিধিকে তিনি জানান, বিয়ের প্রলোভন দিয়ে মাসুদ শিক্ষিকার সাথে শারীরিক সম্পর্ক গড়ে তোলে এবং এক পর্ষায়ে সে গর্ভবতী হলে মাসুদকে বিয়ে করতে বলে কিন্তু সে বিয়ে করতে অপারগতা প্রকাশ করলে শিক্ষিকা লোকলজ্জার ভয়ে আত্মহত্যার পথ বেছে নেয়। আত্মহত্যার প্ররোচনায় এবং প্রতারনার দায়ে মাসুদের নামে মামলা হয়েছে।  তাকে গ্রেফতারের সর্বাত্বক   চেষ্টা চলছে বলে জানিয়েছেন।