০৪:০৭ পূর্বাহ্ন, শুক্রবার, ০৪ জুলাই ২০২৫, ১৯ আষাঢ় ১৪৩২ বঙ্গাব্দ

মেট্রোরেল লিফটে জায়গা পাচ্ছেন না প্রতিবন্ধী ও প্রবীণ ব্যক্তিরা,মানবতা যেন থেমে আছে প্রযুক্তির গতিতে

  • Marufur Rahman
  • পোস্ট হয়েছেঃ ০৮:০৪:২৪ পূর্বাহ্ন, বৃহস্পতিবার, ৩ জুলাই ২০২৫
  • 66
ঢাকার উন্নত গণপরিবহনের প্রতীক হিসেবে পরিচিত মেট্রোরেল, যেখানে আধুনিকতা, প্রযুক্তি আর নাগরিক সুযোগ-সুবিধার সমন্বয় ঘটানোর প্রতিশ্রুতি ছিল। কিন্তু বাস্তব চিত্র অনেকাংশেই সেই প্রতিশ্রুতির বিপরীত। মিরপুর-১০ নম্বর মেট্রোরেল স্টেশনে এমনই এক চিত্র ধরা পড়ে, যেখানে হুইলচেয়ারে থাকা একজন যাত্রী ‘বিশেষ চাহিদাসম্পন্ন ও প্রবীণ ব্যক্তিদের’ জন্য নির্ধারিত লিফটে উঠার সুযোগই পাচ্ছেন না—লিফটটি সাধারণ যাত্রীদের দ্বারা পূর্ণ হয়ে আছে। ছবিতে স্পষ্ট দেখা যাচ্ছে, লিফটের উপর সাইনবোর্ডে বড় অক্ষরে লেখা রয়েছে: “Persons with Special Needs & Elderly People”, অর্থাৎ এটি মূলত প্রতিবন্ধী, প্রবীণ, শিশু ও শারীরিকভাবে অসচ্ছল যাত্রীদের জন্য বরাদ্দ। অথচ বাস্তবে, ওই লিফটে প্রবেশ করেছেন সম্পূর্ণ সক্ষম ও তরুণ-যুবকরা, যাদের জন্য মূলত সিঁড়ি কিংবা এসকেলেটর ব্যবহারের নির্দেশনা রয়েছে। এতে করে প্রকৃত সুবিধাভোগীরা প্রতিনিয়ত ভোগান্তির শিকার হচ্ছেন। এ ব্যাপারে হুইলচেয়ারে থাকা এক যাত্রী ক্ষোভ প্রকাশ করে বলেন, “প্রতিদিনই আমাদের এমন পরিস্থিতির সম্মুখীন হতে হয়। সবাই নিজের সুবিধা বোঝে, কিন্তু আমাদের দুর্ভোগ বোঝে না।” অনেক সময় অপেক্ষা করেও লিফট খালি না পেলে বাধ্য হয়ে তিনি অন্য যাত্রীদের সহায়তা নিয়ে সিঁড়ি ব্যবহার করতে হয়, যা শারীরিক ও মানসিকভাবে চরম কষ্টদায়ক। এ ধরণের চিত্র শুধু মিরপুর-১০ স্টেশনেই নয়, রাজধানীর অন্যান্য স্টেশনেও প্রায়শই দেখা যায়। এর পেছনে বড় কারণ হলো সচেতনতার অভাব, নাগরিক দায়িত্ববোধের অভাব এবং কর্তৃপক্ষের নজরদারির ঘাটতি। বিশেষজ্ঞরা বলছেন, গণপরিবহনে সর্বজনীন অভিগম্যতা নিশ্চিত করা একটি মৌলিক মানবাধিকার। অথচ উন্নত অবকাঠামো থাকা সত্ত্বেও শুধুমাত্র শৃঙ্খলা ও নীতির প্রয়োগ না থাকায়, প্রতিবন্ধীরা সেই সুবিধা থেকে বঞ্চিত হচ্ছেন।
ঢাকা মেট্রোরেল কর্তৃপক্ষ যদি যথাযথ পদক্ষেপ না নেয় যেমন:
 ১.লিফট ব্যবহারে নিরাপত্তারক্ষীদের সরাসরি নিয়ন্ত্রণ
২.ভিডিও নজরদারি
৩.নিয়ম ভঙ্গকারীদের সতর্কতা বা জরিমানা
 সচেতনতা বৃদ্ধির জন্য পোস্টার বা ঘোষণার ব্যবস্থা
তবে ভবিষ্যতে আরও বড় পরিসরে এই অব্যবস্থাপনা নাগরিকদের অসন্তোষ সৃষ্টি করতে পারে। একটি সভ্য সমাজের পরিচয় তার দুর্বল, অসহায় ও প্রবীণ নাগরিকদের প্রতি আচরণেই প্রতিফলিত হয়। তাই প্রযুক্তিগত অগ্রগতি যেমন গুরুত্বপূর্ণ, তেমনি প্রয়োজন মানবিক মূল্যবোধ ও শৃঙ্খলার সমান চর্চা।
ট্যাগঃ
প্রতিনিধির তথ্য

জনপ্রিয় পোস্ট

শৈলকুপায় জমি দখল নিয়ে দাদাগিরি! পরিবারের রাস্তা বন্ধ করে অবরুদ্ধ

মেট্রোরেল লিফটে জায়গা পাচ্ছেন না প্রতিবন্ধী ও প্রবীণ ব্যক্তিরা,মানবতা যেন থেমে আছে প্রযুক্তির গতিতে

পোস্ট হয়েছেঃ ০৮:০৪:২৪ পূর্বাহ্ন, বৃহস্পতিবার, ৩ জুলাই ২০২৫
ঢাকার উন্নত গণপরিবহনের প্রতীক হিসেবে পরিচিত মেট্রোরেল, যেখানে আধুনিকতা, প্রযুক্তি আর নাগরিক সুযোগ-সুবিধার সমন্বয় ঘটানোর প্রতিশ্রুতি ছিল। কিন্তু বাস্তব চিত্র অনেকাংশেই সেই প্রতিশ্রুতির বিপরীত। মিরপুর-১০ নম্বর মেট্রোরেল স্টেশনে এমনই এক চিত্র ধরা পড়ে, যেখানে হুইলচেয়ারে থাকা একজন যাত্রী ‘বিশেষ চাহিদাসম্পন্ন ও প্রবীণ ব্যক্তিদের’ জন্য নির্ধারিত লিফটে উঠার সুযোগই পাচ্ছেন না—লিফটটি সাধারণ যাত্রীদের দ্বারা পূর্ণ হয়ে আছে। ছবিতে স্পষ্ট দেখা যাচ্ছে, লিফটের উপর সাইনবোর্ডে বড় অক্ষরে লেখা রয়েছে: “Persons with Special Needs & Elderly People”, অর্থাৎ এটি মূলত প্রতিবন্ধী, প্রবীণ, শিশু ও শারীরিকভাবে অসচ্ছল যাত্রীদের জন্য বরাদ্দ। অথচ বাস্তবে, ওই লিফটে প্রবেশ করেছেন সম্পূর্ণ সক্ষম ও তরুণ-যুবকরা, যাদের জন্য মূলত সিঁড়ি কিংবা এসকেলেটর ব্যবহারের নির্দেশনা রয়েছে। এতে করে প্রকৃত সুবিধাভোগীরা প্রতিনিয়ত ভোগান্তির শিকার হচ্ছেন। এ ব্যাপারে হুইলচেয়ারে থাকা এক যাত্রী ক্ষোভ প্রকাশ করে বলেন, “প্রতিদিনই আমাদের এমন পরিস্থিতির সম্মুখীন হতে হয়। সবাই নিজের সুবিধা বোঝে, কিন্তু আমাদের দুর্ভোগ বোঝে না।” অনেক সময় অপেক্ষা করেও লিফট খালি না পেলে বাধ্য হয়ে তিনি অন্য যাত্রীদের সহায়তা নিয়ে সিঁড়ি ব্যবহার করতে হয়, যা শারীরিক ও মানসিকভাবে চরম কষ্টদায়ক। এ ধরণের চিত্র শুধু মিরপুর-১০ স্টেশনেই নয়, রাজধানীর অন্যান্য স্টেশনেও প্রায়শই দেখা যায়। এর পেছনে বড় কারণ হলো সচেতনতার অভাব, নাগরিক দায়িত্ববোধের অভাব এবং কর্তৃপক্ষের নজরদারির ঘাটতি। বিশেষজ্ঞরা বলছেন, গণপরিবহনে সর্বজনীন অভিগম্যতা নিশ্চিত করা একটি মৌলিক মানবাধিকার। অথচ উন্নত অবকাঠামো থাকা সত্ত্বেও শুধুমাত্র শৃঙ্খলা ও নীতির প্রয়োগ না থাকায়, প্রতিবন্ধীরা সেই সুবিধা থেকে বঞ্চিত হচ্ছেন।
ঢাকা মেট্রোরেল কর্তৃপক্ষ যদি যথাযথ পদক্ষেপ না নেয় যেমন:
 ১.লিফট ব্যবহারে নিরাপত্তারক্ষীদের সরাসরি নিয়ন্ত্রণ
২.ভিডিও নজরদারি
৩.নিয়ম ভঙ্গকারীদের সতর্কতা বা জরিমানা
 সচেতনতা বৃদ্ধির জন্য পোস্টার বা ঘোষণার ব্যবস্থা
তবে ভবিষ্যতে আরও বড় পরিসরে এই অব্যবস্থাপনা নাগরিকদের অসন্তোষ সৃষ্টি করতে পারে। একটি সভ্য সমাজের পরিচয় তার দুর্বল, অসহায় ও প্রবীণ নাগরিকদের প্রতি আচরণেই প্রতিফলিত হয়। তাই প্রযুক্তিগত অগ্রগতি যেমন গুরুত্বপূর্ণ, তেমনি প্রয়োজন মানবিক মূল্যবোধ ও শৃঙ্খলার সমান চর্চা।