১১:২১ পূর্বাহ্ন, শুক্রবার, ২০ জুন ২০২৫, ৬ আষাঢ় ১৪৩২ বঙ্গাব্দ

কাশিয়ানিরর ওরাকান্দি হচ্ছে দক্ষিণ-পশ্চিমাঞ্চলের সর্ববৃহৎ মহা বারুনীর স্নান উৎসব

গোপালগঞ্জের কাশিয়ানী উপজেলার ওড়াকান্দিতে শ্রীশ্রী হরিচাঁদ ঠাকুরের ২১৪তম জন্ম তিথি উপলক্ষে দক্ষিণ-পশ্চিমাঞ্চলের মতুয়া সম্প্রদায়ের সর্ববৃহৎ মহা বারুনীর স্নান উৎসব অনুষ্ঠিত হচ্ছে। পূর্ণ্য লাভের আশায় দেশ ও বিদেশের লাখ লাখ মতুয়া ভক্তরা এ পূর্ণ স্নাশে অংশ নিচ্ছেন। এ স্লাণ উপলক্ষে ঠাকুর বাড়ীতে বসেছে তিনদিন ব্যাপী গ্রামীন মেলা। এ স্নান উৎসবকে কেন্দ্র করে ঠাকুর বাড়ীসহ পাশপাশ এলাকায় নেয়া হয় কঠোর নিরাপত্তা ব্যবস্থা। গোপালগঞ্জের কাশিয়ানী উপজেলার ওড়াকান্দির ঠাকুর বাড়ীতে গিয়ে জানাগেছে, শ্রীশ্রী হরিচাঁদ ঠাকুর ইংরেজী ১৮১২ খ্রিষ্টাব্দ ১১ই মার্চ কাশিয়ানী উপজেলা সাফলীডাঙ্গা গ্রামে জন্মগ্রহণ করেন। আর লিলা করেন পার্শ্ববর্তি ওড়াকান্দি গ্রামে। শ্রীশ্রী হরিচাঁদ ঠাকুরের জন্মজয়ন্তী উপলক্ষে ফাল্গুন মাসের মধুকৃষ্ণ ত্রয়োদশী তিথিতে প্রতি বছর ওড়াকান্দিতে এ স্নানোৎসব ও বারুণী মেলা অনুষ্ঠিত হয়।
বুধবার (২৬ মার্চ) রাত ১১টা থেকে শুরু হয়ে আজ বৃহস্পতিবার (২৭ মার্চ) রাত ৯টা পযর্ন্ত চলবে বারুরী স্নাণ উৎসব। পাপ থেকে মুক্তি ও পূণ্য লাভের আশায় দেশের বিভিন্ন জেলা ছাড়াও ভারত, নেপালসহ বিভিন্ন দেশ থেকে আগত অন্তত ১০ লাক্ষাধিক পূর্ণার্থী অংশ নিচ্ছেন এ স্নান উৎসবে। ভক্তদের পদচারনার সাথে হরি বল-হরি বল আর ঢাক, ঢোল ও কাসর বাজিয়ে ঠাকুর বাড়িতে প্রবেশ করেন। মুখরিত হয়ে উঠে পুরো ঠাকুরবাড়িসহ আশপাশের অন্তত পাঁচ কিলোমিটার এলাকা। ভক্তরা মন্দিরে পুজা অর্চনা শেষে ঠাকুর বাড়িতে অবস্থিত কামনা সাগর ও বাসনা সাগরে (মুলত পুকুর) স্নান করে ঠাকুরের কাছে পাপ থেকে মুক্তি, পুণ্য লাভ ও দেশবাসীর মঙ্গল প্রার্থনা করেন। এ উৎসব সঠিকভাবে সম্পন্ন করতে ঠাকুর বাড়ি এলাকায় সুউচ্চ পর্যবেক্ষন চৌকি ও সিসি ক্যামেরা বসানো হয়। আইন-শৃংখলা বাহিনীর পক্ষ থেকে নেয়া হয় ব্যাপক নিরাপত্তা ব্যবস্থা। আইন শৃংখলা বাহিনীর সদস্যের পাশাপাশি মতুয়া সংঘের প্রায় সাত শতাধিক স্বেচ্ছাসবক সার্বিক নিরাপত্তার দায়িত্ব পালন করছেন। স্নানোৎসবকে ঘিরে ঠাকুর বাড়ির পাশ ঘেঁষে ৬০ একর জায়গাজুড়ে বসেছে ৩ দিনব্যাপী লোকজ মেলা। মেলায় কাঠ, বাঁশ, বেত, মাটির তৈরী জিনিসপত্র ও খেলনা সামগ্রী, তালপাখা, চানাচুর, মিষ্টি দোকান, হোটেল-রেস্তোরার দোকান বসেছে। ওড়াকান্দির স্নানোৎসবে খুলনা থেকে আসা অশোক বিশ্বাস বলেন, পূর্ণ্য লাভের আশায় আমি ঠাকুর বাড়ীতে এসেছি। বিশ্বাস করি এখানে স্নাণ করে পূর্ণ লাভ করেছি। সেই সাথে দেশ ও জাতির মঙ্গল কামনা করে প্রার্থনা করেছি। মাদারীপুর থেকে আসা কলেজ ছাত্র পলাশ বিশ্বাস বলেন, আমি এবারই প্রথম ওড়াকান্দির ঠাকুর বাড়ীতে এসেছি বন্ধুদের সাথে। স্নাণ করলাম, পরিবারের সবার জন্য মঙ্গল কামনা করে প্রার্থনা করেছি। যশোর থেকে আসা প্যর্ণ্যার্থী শিউলী বিশ্বাস বলেন, বিগত ৫ বছর ধরে পরিবার পরিজন নিয়ে ওড়াকান্দির ঠাকুর বাড়ীর বারুনী স্নাণে অংশ নিতে আসি। এখানে স্নাণ করলে মনোবাসনা পূর্ণসহ সকল পাপ-কষ্ট দূর হয়। শ্রী শ্রী হরিচাঁদ ঠাকুর পরিবারের সদস্য ও স্নানোৎস কমিটির সভাপতি  সুব্রত ঠাকুর বলেন, এখানে পূর্ণ লাভের আশায় সারা দেশ থেকে পূর্ণার্থীরা আসেন, স্নাণ করেন। শুধু বাংলাদেশই নয় ভারতের পশ্চিমবঙ্গ, আসাম, চীন, নেপাল, ইন্দোনেশিয়া, ভুটানসহ বিভিন্ন দেশ থেকে মতুয়া ভক্তের আগমন ঘটে। ভক্তরা এখানে এসে স্নান করলে তাদের মানোবাসনা পূরণ হয়। এ উৎসবকে ঘিরে ভক্তদের থাকার জন্য করা হয়েছে আবাসন ও প্রসাদের ব্যবস্থা। সেনা বাহিনী ও আইন শৃংখলা বাহিনীর সদস্যদের পাশাপাশি মতুয়া সংঘের প্রায় সাত শতাধিক স্বেচ্ছাসবক সার্বিক নিরাপত্তার দায়িত্ব পালন করছেন। গোপালগঞ্জের জেলা প্রশাসক মুহম্মদ কামরুজ্জামান বলেন, এ স্নান উৎসব সুষ্ঠুভাবে সম্পন্ন করতে ঠাকুর বাড়ি এলাকায় সুউচ্চ পর্যবেক্ষন চৌকি ও সিসি ক্যামেরা বসানো হয়।আইন-শৃংখলা বাহিনীর পক্ষ থেকে নেয়া হয় ব্যাপক নিরাপত্তা ব্যবস্থা নেয়া হেয়েছে।

ট্যাগঃ
প্রতিনিধির তথ্য

জনপ্রিয় পোস্ট

পাংশায় পাওনা টাকা না পেয়ে শ্বশুরকে গাছে বেঁধে নির্যাতন, জামাতাসহ আটক ৩

কাশিয়ানিরর ওরাকান্দি হচ্ছে দক্ষিণ-পশ্চিমাঞ্চলের সর্ববৃহৎ মহা বারুনীর স্নান উৎসব

পোস্ট হয়েছেঃ ১০:৪০:৫২ পূর্বাহ্ন, বৃহস্পতিবার, ২৭ মার্চ ২০২৫

গোপালগঞ্জের কাশিয়ানী উপজেলার ওড়াকান্দিতে শ্রীশ্রী হরিচাঁদ ঠাকুরের ২১৪তম জন্ম তিথি উপলক্ষে দক্ষিণ-পশ্চিমাঞ্চলের মতুয়া সম্প্রদায়ের সর্ববৃহৎ মহা বারুনীর স্নান উৎসব অনুষ্ঠিত হচ্ছে। পূর্ণ্য লাভের আশায় দেশ ও বিদেশের লাখ লাখ মতুয়া ভক্তরা এ পূর্ণ স্নাশে অংশ নিচ্ছেন। এ স্লাণ উপলক্ষে ঠাকুর বাড়ীতে বসেছে তিনদিন ব্যাপী গ্রামীন মেলা। এ স্নান উৎসবকে কেন্দ্র করে ঠাকুর বাড়ীসহ পাশপাশ এলাকায় নেয়া হয় কঠোর নিরাপত্তা ব্যবস্থা। গোপালগঞ্জের কাশিয়ানী উপজেলার ওড়াকান্দির ঠাকুর বাড়ীতে গিয়ে জানাগেছে, শ্রীশ্রী হরিচাঁদ ঠাকুর ইংরেজী ১৮১২ খ্রিষ্টাব্দ ১১ই মার্চ কাশিয়ানী উপজেলা সাফলীডাঙ্গা গ্রামে জন্মগ্রহণ করেন। আর লিলা করেন পার্শ্ববর্তি ওড়াকান্দি গ্রামে। শ্রীশ্রী হরিচাঁদ ঠাকুরের জন্মজয়ন্তী উপলক্ষে ফাল্গুন মাসের মধুকৃষ্ণ ত্রয়োদশী তিথিতে প্রতি বছর ওড়াকান্দিতে এ স্নানোৎসব ও বারুণী মেলা অনুষ্ঠিত হয়।
বুধবার (২৬ মার্চ) রাত ১১টা থেকে শুরু হয়ে আজ বৃহস্পতিবার (২৭ মার্চ) রাত ৯টা পযর্ন্ত চলবে বারুরী স্নাণ উৎসব। পাপ থেকে মুক্তি ও পূণ্য লাভের আশায় দেশের বিভিন্ন জেলা ছাড়াও ভারত, নেপালসহ বিভিন্ন দেশ থেকে আগত অন্তত ১০ লাক্ষাধিক পূর্ণার্থী অংশ নিচ্ছেন এ স্নান উৎসবে। ভক্তদের পদচারনার সাথে হরি বল-হরি বল আর ঢাক, ঢোল ও কাসর বাজিয়ে ঠাকুর বাড়িতে প্রবেশ করেন। মুখরিত হয়ে উঠে পুরো ঠাকুরবাড়িসহ আশপাশের অন্তত পাঁচ কিলোমিটার এলাকা। ভক্তরা মন্দিরে পুজা অর্চনা শেষে ঠাকুর বাড়িতে অবস্থিত কামনা সাগর ও বাসনা সাগরে (মুলত পুকুর) স্নান করে ঠাকুরের কাছে পাপ থেকে মুক্তি, পুণ্য লাভ ও দেশবাসীর মঙ্গল প্রার্থনা করেন। এ উৎসব সঠিকভাবে সম্পন্ন করতে ঠাকুর বাড়ি এলাকায় সুউচ্চ পর্যবেক্ষন চৌকি ও সিসি ক্যামেরা বসানো হয়। আইন-শৃংখলা বাহিনীর পক্ষ থেকে নেয়া হয় ব্যাপক নিরাপত্তা ব্যবস্থা। আইন শৃংখলা বাহিনীর সদস্যের পাশাপাশি মতুয়া সংঘের প্রায় সাত শতাধিক স্বেচ্ছাসবক সার্বিক নিরাপত্তার দায়িত্ব পালন করছেন। স্নানোৎসবকে ঘিরে ঠাকুর বাড়ির পাশ ঘেঁষে ৬০ একর জায়গাজুড়ে বসেছে ৩ দিনব্যাপী লোকজ মেলা। মেলায় কাঠ, বাঁশ, বেত, মাটির তৈরী জিনিসপত্র ও খেলনা সামগ্রী, তালপাখা, চানাচুর, মিষ্টি দোকান, হোটেল-রেস্তোরার দোকান বসেছে। ওড়াকান্দির স্নানোৎসবে খুলনা থেকে আসা অশোক বিশ্বাস বলেন, পূর্ণ্য লাভের আশায় আমি ঠাকুর বাড়ীতে এসেছি। বিশ্বাস করি এখানে স্নাণ করে পূর্ণ লাভ করেছি। সেই সাথে দেশ ও জাতির মঙ্গল কামনা করে প্রার্থনা করেছি। মাদারীপুর থেকে আসা কলেজ ছাত্র পলাশ বিশ্বাস বলেন, আমি এবারই প্রথম ওড়াকান্দির ঠাকুর বাড়ীতে এসেছি বন্ধুদের সাথে। স্নাণ করলাম, পরিবারের সবার জন্য মঙ্গল কামনা করে প্রার্থনা করেছি। যশোর থেকে আসা প্যর্ণ্যার্থী শিউলী বিশ্বাস বলেন, বিগত ৫ বছর ধরে পরিবার পরিজন নিয়ে ওড়াকান্দির ঠাকুর বাড়ীর বারুনী স্নাণে অংশ নিতে আসি। এখানে স্নাণ করলে মনোবাসনা পূর্ণসহ সকল পাপ-কষ্ট দূর হয়। শ্রী শ্রী হরিচাঁদ ঠাকুর পরিবারের সদস্য ও স্নানোৎস কমিটির সভাপতি  সুব্রত ঠাকুর বলেন, এখানে পূর্ণ লাভের আশায় সারা দেশ থেকে পূর্ণার্থীরা আসেন, স্নাণ করেন। শুধু বাংলাদেশই নয় ভারতের পশ্চিমবঙ্গ, আসাম, চীন, নেপাল, ইন্দোনেশিয়া, ভুটানসহ বিভিন্ন দেশ থেকে মতুয়া ভক্তের আগমন ঘটে। ভক্তরা এখানে এসে স্নান করলে তাদের মানোবাসনা পূরণ হয়। এ উৎসবকে ঘিরে ভক্তদের থাকার জন্য করা হয়েছে আবাসন ও প্রসাদের ব্যবস্থা। সেনা বাহিনী ও আইন শৃংখলা বাহিনীর সদস্যদের পাশাপাশি মতুয়া সংঘের প্রায় সাত শতাধিক স্বেচ্ছাসবক সার্বিক নিরাপত্তার দায়িত্ব পালন করছেন। গোপালগঞ্জের জেলা প্রশাসক মুহম্মদ কামরুজ্জামান বলেন, এ স্নান উৎসব সুষ্ঠুভাবে সম্পন্ন করতে ঠাকুর বাড়ি এলাকায় সুউচ্চ পর্যবেক্ষন চৌকি ও সিসি ক্যামেরা বসানো হয়।আইন-শৃংখলা বাহিনীর পক্ষ থেকে নেয়া হয় ব্যাপক নিরাপত্তা ব্যবস্থা নেয়া হেয়েছে।