০১:২০ অপরাহ্ন, বুধবার, ২৫ জুন ২০২৫, ১১ আষাঢ় ১৪৩২ বঙ্গাব্দ

বন বিভাগে (চট্টগ্রাম অঞ্চল) কর্মরত পদোন্নতি বঞ্চিত ফরেস্টার ও ফরেস্ট গার্ডদের মনব-বন্ধন

দীর্ঘ ২০ থেকে ৩৫ বছর ধরে পদোন্নতির সকল যোগ্যতা থাকা সত্ত্বেও তা না দেওয়ার প্রতিবাদে চট্টগ্রাম অঞ্চলের ফরেস্টার ও ফরেস্ট গার্ডরা আন্দোলনে নেমেছেন।

গত (৮ এপ্রিল) বিকেল ৩টায় চট্টগ্রাম নগরের নন্দন-কানন এলাকায় ফরেস্ট অফিসের সামনে ‘‘বাংলাদেশ ফরেস্টার ও ফরেস্ট গার্ড পদোন্নতি বাস্তবায়ন সংগ্রাম পরিষদ’’- এর ব্যানারে তারা মানববন্ধন কর্মসূচি পালন করেন।

মানববন্ধনে অংশ নেন চট্টগ্রাম অঞ্চলে কর্মরত প্রায় তিন শতাধিক বনকর্মী । এদিকে, মানববন্ধন থেকে ঘোষণা দেওয়া হয়- দাবি আদায় না হলে আগামী ২৮ থেকে ৩০ এপ্রিল পর্যন্ত দেশের সব বনাঞ্চলে ব্যবহৃত আগ্নেয়াস্ত্র ও গোলাবারুদ বিভাগীয় কার্যালয়ে জমা দেওয়া হবে এবং ৪মে থেকে ৮মে পর্যন্ত টানা অবস্থান ধর্মঘট পালন করা হবে বিভাগীয় দপ্তর ও অঞ্চল/সার্কেল পর্যায়ের দপ্তরগুলোতে। চূড়ান্ত কর্মসূচি হিসেবে জানানো হয়, আগামী ১৫ মে ঢাকার আগারগাঁওয়ে বন অধিদপ্তরের প্রধান কার্যালয় ঘেরাও করে আমরণ অনশন ও অবস্থান কর্মসূচি পালন করবেন তারা। দাবি পূরণ না হওয়া পর্যন্ত আন্দোলন চলবে বলেও ঘোষণা দেন পরিষদের নেত্রীবৃন্দ।

পরিষদের নেত্রীবৃন্দ জানান, গত ৬ মার্চ কর্তৃপক্ষকে এক মাস সময় দিয়ে সমস্যার সমাধান চাওয়া হয়েছিল। কিন্তু সেই সময়সীমা পার হলেও কোনো কার্যকর পদক্ষেপ গ্রহন করেনি কর্তৃপক্ষ। তাই তারা আন্দোলনে যেতে বাধ্য হয়েছেন।

পরিষদের নেত্রীবৃন্দ আরও বলেন, দেশের বনভূমি, বন্যপ্রাণী ও বনজ সম্পদ রক্ষার পরিবার পরিজন থেকে বিচ্ছিন্ন হয়ে অত্যন্ত ঝুঁকিপূর্ণ দায়িত্ব পালন করে থাকে ফরেস্টার ও ফরেস্ট গার্ডগণ। দায়িত্ব পালন করতে গিয়ে অনেক বনকর্মী বনদস্যু ও ভুমিদস্যূদ্বারা আক্রান্ত হয়ে মৃত্যু বরণ করেছেন। কিন্তু তারাই অবহেলিত, দীর্ঘদিন ধরে পদোন্নতি থেকে বঞ্চিত রয়েছেন। অনেকে হতাশা নিয়ে অবসরে গেছেন, কেউ কেউ রাগে, ক্ষোভে, অভিমানে স্বেচ্ছায় অবসরে চলে গেছেন। বন বিভাগ এমনই একটা জায়গা যেখানে সমতলে চাকুরী করার সুযোগ অতি:নগন্য। এখানে দুর্গম ও ঝুঁকিপূর্ণ এলাকায় থেকে পরিবার-পরিজন তথা জন-বিচ্ছিন্ন থেকে দায়িত্ব পালন করতে হয় অধিকাংশ ফরেস্টার ও ফরেস্ট গার্ডকে।

এখন বন বিভাগ একটি হতাশার নাম। অথচ এ বন বিভাগ একটি শতাব্দী প্রাচীন সরকারি সংস্থা যা ১৮৬২খ্রিষ্টাব্দে প্রতিষ্ঠিত হয়ে অধ্যাবধি চলমান। এক সময় সংরক্ষিত বনে বিনা অনুমুতিতে প্রবেশ করার অপরাধে যে কাউকে গ্রেফতারসহ গুলি করার ক্ষমতা ছিল বন কর্মীদের! সে বন বিভাগ কালের পরিক্রমায়, রাষ্ট্রীয় হঠকারিতায় আজ ভুমিদস্যু, বনদস্যুদের লালসার শিকার হয়ে প্রায় নিস্তেজ, খুড়িয়ে খুড়িয়ে চলছে।

এসময় আরও বক্তব্য রাখেন সংগঠনের আহ্বায়ক, সরোয়ার জাহান, সদস্য সচিব, জসিম উদ্দিন, মোস্তফা কামাল, মোস্তাফা জামাল, আরিফুল আলম, নাসিরুল আলম, সুলতান মাহমুদ টিটু, নাজমুল হাসান প্রমুখ।

ট্যাগঃ
প্রতিনিধির তথ্য

জনপ্রিয় পোস্ট

নড়াইলে জমি নিয়ে সংঘর্ষে নারী-শিশুসহ আহত ৭, হাসপাতালে ভর্তি ৪

বন বিভাগে (চট্টগ্রাম অঞ্চল) কর্মরত পদোন্নতি বঞ্চিত ফরেস্টার ও ফরেস্ট গার্ডদের মনব-বন্ধন

পোস্ট হয়েছেঃ ০২:২০:২৪ পূর্বাহ্ন, বৃহস্পতিবার, ১৭ এপ্রিল ২০২৫

দীর্ঘ ২০ থেকে ৩৫ বছর ধরে পদোন্নতির সকল যোগ্যতা থাকা সত্ত্বেও তা না দেওয়ার প্রতিবাদে চট্টগ্রাম অঞ্চলের ফরেস্টার ও ফরেস্ট গার্ডরা আন্দোলনে নেমেছেন।

গত (৮ এপ্রিল) বিকেল ৩টায় চট্টগ্রাম নগরের নন্দন-কানন এলাকায় ফরেস্ট অফিসের সামনে ‘‘বাংলাদেশ ফরেস্টার ও ফরেস্ট গার্ড পদোন্নতি বাস্তবায়ন সংগ্রাম পরিষদ’’- এর ব্যানারে তারা মানববন্ধন কর্মসূচি পালন করেন।

মানববন্ধনে অংশ নেন চট্টগ্রাম অঞ্চলে কর্মরত প্রায় তিন শতাধিক বনকর্মী । এদিকে, মানববন্ধন থেকে ঘোষণা দেওয়া হয়- দাবি আদায় না হলে আগামী ২৮ থেকে ৩০ এপ্রিল পর্যন্ত দেশের সব বনাঞ্চলে ব্যবহৃত আগ্নেয়াস্ত্র ও গোলাবারুদ বিভাগীয় কার্যালয়ে জমা দেওয়া হবে এবং ৪মে থেকে ৮মে পর্যন্ত টানা অবস্থান ধর্মঘট পালন করা হবে বিভাগীয় দপ্তর ও অঞ্চল/সার্কেল পর্যায়ের দপ্তরগুলোতে। চূড়ান্ত কর্মসূচি হিসেবে জানানো হয়, আগামী ১৫ মে ঢাকার আগারগাঁওয়ে বন অধিদপ্তরের প্রধান কার্যালয় ঘেরাও করে আমরণ অনশন ও অবস্থান কর্মসূচি পালন করবেন তারা। দাবি পূরণ না হওয়া পর্যন্ত আন্দোলন চলবে বলেও ঘোষণা দেন পরিষদের নেত্রীবৃন্দ।

পরিষদের নেত্রীবৃন্দ জানান, গত ৬ মার্চ কর্তৃপক্ষকে এক মাস সময় দিয়ে সমস্যার সমাধান চাওয়া হয়েছিল। কিন্তু সেই সময়সীমা পার হলেও কোনো কার্যকর পদক্ষেপ গ্রহন করেনি কর্তৃপক্ষ। তাই তারা আন্দোলনে যেতে বাধ্য হয়েছেন।

পরিষদের নেত্রীবৃন্দ আরও বলেন, দেশের বনভূমি, বন্যপ্রাণী ও বনজ সম্পদ রক্ষার পরিবার পরিজন থেকে বিচ্ছিন্ন হয়ে অত্যন্ত ঝুঁকিপূর্ণ দায়িত্ব পালন করে থাকে ফরেস্টার ও ফরেস্ট গার্ডগণ। দায়িত্ব পালন করতে গিয়ে অনেক বনকর্মী বনদস্যু ও ভুমিদস্যূদ্বারা আক্রান্ত হয়ে মৃত্যু বরণ করেছেন। কিন্তু তারাই অবহেলিত, দীর্ঘদিন ধরে পদোন্নতি থেকে বঞ্চিত রয়েছেন। অনেকে হতাশা নিয়ে অবসরে গেছেন, কেউ কেউ রাগে, ক্ষোভে, অভিমানে স্বেচ্ছায় অবসরে চলে গেছেন। বন বিভাগ এমনই একটা জায়গা যেখানে সমতলে চাকুরী করার সুযোগ অতি:নগন্য। এখানে দুর্গম ও ঝুঁকিপূর্ণ এলাকায় থেকে পরিবার-পরিজন তথা জন-বিচ্ছিন্ন থেকে দায়িত্ব পালন করতে হয় অধিকাংশ ফরেস্টার ও ফরেস্ট গার্ডকে।

এখন বন বিভাগ একটি হতাশার নাম। অথচ এ বন বিভাগ একটি শতাব্দী প্রাচীন সরকারি সংস্থা যা ১৮৬২খ্রিষ্টাব্দে প্রতিষ্ঠিত হয়ে অধ্যাবধি চলমান। এক সময় সংরক্ষিত বনে বিনা অনুমুতিতে প্রবেশ করার অপরাধে যে কাউকে গ্রেফতারসহ গুলি করার ক্ষমতা ছিল বন কর্মীদের! সে বন বিভাগ কালের পরিক্রমায়, রাষ্ট্রীয় হঠকারিতায় আজ ভুমিদস্যু, বনদস্যুদের লালসার শিকার হয়ে প্রায় নিস্তেজ, খুড়িয়ে খুড়িয়ে চলছে।

এসময় আরও বক্তব্য রাখেন সংগঠনের আহ্বায়ক, সরোয়ার জাহান, সদস্য সচিব, জসিম উদ্দিন, মোস্তফা কামাল, মোস্তাফা জামাল, আরিফুল আলম, নাসিরুল আলম, সুলতান মাহমুদ টিটু, নাজমুল হাসান প্রমুখ।