
গত রবিবার (১৩ এপ্রিল) যশোর সদর উপজেলার রুপদিয়া মধ্যপাড়াতে হতদরিদ্র ১৪টি বাড়ি ঘরে নির্বিচারে হামলা, ভাংচুর ও লুটপাটের ঘটনা ঘটে। এই হামলার ঘটনায় ভুক্তভোগী ইজিবাইক চালক মিলন হোসেন বাদী হয়ে ঘটনার দিন রাতেই যশোর কোতোয়ালী থানায় একটি এজাহার দায়ের করেন। অভিযোগ, হামলাকারীরা বেশির ভাগ স্থানীয় জামায়াতে ইসলামীর নেতা-কর্মী সমর্থক দাবি করেন ভুক্তভোগীরা। তবে বৃহস্পতিবার সংবাদ সম্মেলন করে যশোর জেলা জামায়াত নেতারা বলেন, জায়গা জমি সংক্রান্ত বিরোধের জের ধরে ১৪ টি ঘর ভাংচুরের ঘটনায় জড়িতরা জামায়াতের কোনো নেতা, কর্মী কিংবা দায়িত্বশীল জড়িত নয়। জামায়াত সাংগঠনিকভাবে ওই ঘটনার নিন্দা জানিয়েছে। এবং তাৎক্ষণিকভাবে ক্ষতিগ্রস্তদের ৬০ হাজার টাকা দিয়ে পাশে দাঁড়িয়েছে। বৃহস্পতিবার বেলা ১২ টায় প্রেস ক্লাব যশোরে আয়োজিত জনাকীর্ণ সংবাদ সম্মেলনে এসব কথা বলেন জেলা জামায়াত আমির অধ্যাপক গোলাম রসুল। তিনি বলেন, একান্ত পারিবারিক বিরোধের জের ধরে গত ১৩ এপ্রিল যশোরের রূপদিয়ায় ১৪ টি বাড়িঘর ভাংচুরের ঘটনা ঘটেছে। এরপর পরিকল্পিতভাবে জামায়াতকে দোষারোপ করে বিভিন্ন গণমাধ্যমে ভুল তথ্য সরবরাহ করছে স্থানীয় কিছু স্বার্থান্বেষী মানুষ। অথচ সংশ্লিষ্টরা জামায়াতের কর্মী কিংবা নেতা পর্যায়ের কেউ না। বরং যারা ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে তাদের অনেকেই জামায়াতের সমর্থক। তারা সংগঠনের নানা কর্মসূচিতে নিয়মিতভাবে উপস্থিত থাকেন। জামায়াত বিভিন্ন সময় তাদেরকে নানাভাবে সহযোগিতা করে। গত ৫ আগস্টের পর সারাদেশের মুক্তিকামী মানুষ জামায়াতের নীতি আদর্শে অনুপ্রাণিত হয়ে সমর্থন করছে। জামায়াত লাখ লাখ সমর্থককে ধারণ করলেও তাদেরকে নিয়ন্ত্রণ করতে পারে না। সাংগঠনিকভাবে জামায়াত কেবল তালিকাভুক্ত রুকন এবং কর্মীদের নিয়ন্ত্রণ করে থাকে। তাদের কর্মকাণ্ডের জন্য জবাবদিহিতা করতে পারে। তারাও সংগঠনের কাছে জবাবদিহি করতে বাধ্য থাকে। ফলে, কোনো সমর্থক যদি কিছু করেও থাকে তাহলে তার দায়দায়িত্ব সংগঠন হিসেবে জামায়াত বহন করতে পারে না। অথচ তেমন ঘটনায় ঘটছে। সব দায়ভার জামায়াতের ঘাড়ে চাপানোর অপচেষ্টা করছে কেউ কেউ। ঘটনার সাথে জড়িতদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা গ্রহণের দাবি জানায় জামায়াত। তবে, নিরীহ কেউ যাতে হয়রানির শিকার না হয় জামায়াত সেই দাবিও করে।জামায়াত আমির বলেন, তারা খোঁজখবর নিয়ে জেনেছেন, ওই জমির কাগজপত্রের মালিক খবির খাঁ। এটি নিয়ে স্থানীয় পর্যায়ে একাধিকবার সালিশ হয়েছে। এর বাইরে আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর বিভিন্ন উইং সালিশ-বিচার করেছে। এখন একটি পক্ষ পরিকল্পিতভাবে দায় চাপিয়ে জামায়াতকে মানুষের কাছে হেয়প্রতিপন্ন করার অপচেষ্টা চালাচ্ছে। যদিও যশোরের মানুষের কাছে ইতিমধ্যে বিষয়টি স্পষ্ট হয়েছে।কেউ যাতে ঘটনাটি পুঁজি করে ঘোলা পানিতে মাছ শিকার করতে না পারে সেজন্য প্রশাসন ও গণমাধ্যম কর্মীদের সজাগ দৃষ্টির আহ্বান জানিয়েছেন জেলা আমির অধ্যাপক গোলাম রসুল।সংবাদ সম্মেলনে জেলা জামায়াতের সহকারী সেক্রেটারি অধ্যাপক গোলাম কুদ্দুস, প্রচার সেক্রেটারি অধ্যাপক শাহাবুদ্দিন বিশ্বাস, অফিস সেক্রেটারি নুর ই আলী নুর মামুন, শহর শাখার সেক্রেটারি ইমরান হুসাইন, সাবেক ছাত্রনেতা আলমগীর হোসেন ও আবুল কাশেম উপস্থিত ছিলেন।