
সীতাকুণ্ড উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে স্বাস্থ্য সেবার চরম অবনতিতে বেড়েছে জনদূর্ভোগ। উপজেলা স্বাস্থ্য ও পরিবার পরিকল্পনা কর্মকর্তার বদলি ও তদস্থলে নবাগত স্বাস্থ্য কর্মকর্তার পদায়নে জটিলতা তৈরী হওয়ায় স্বাস্থ্য সেবায় বিশৃংখলা দেখা দেয়। পরবর্তী পর্যায়ে কর্তৃপক্ষের আদেশে নবগত কর্মকর্তার পদায়ন হলেও সেবা মানে ফিরেনি গতিশীলতা। এ পরিস্থিতিতে সেবা পেতে পদে পদে ভোগান্তিতে পড়তে হচ্ছে চিকিৎসা সেবা নিতে আসা রোগীদের। এ নিয়ে চরম ক্ষোভ প্রকাশ করছে সেবা গ্রহিতারা। ইতিমধ্যে ভোগান্তিতে পড়া সেবা গ্রহিতার অনেকেই স্যোশাল মিডিয়ায় ক্ষোভ প্রকাশ করেছেন।
উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে আউট-ডোর ও ইন-ডোরে প্রায় ৩৫ জন ডাক্তার পদায়ন রয়েছে। প্রতিটি ডিপার্টমেন্টে মেডিকেল অফিসারসহ জুনিয়ার সার্জন ও সার্জন মানের ডাক্তার পদায়িত। কিন্তু পদ অনুপাতে লোকবল থাকলেও সেবায় নেমে এসেছে দুরাবস্থা। প্রতিটি ক্ষেত্রে অনিয়ম ও দুর্ণীতিতে স্বাস্থ্যসেবা ঢেকে পড়েছে। চেইন অব কমান্ড না থাকায় নিজ নিজ কর্মে সবাই চরম অবহেলাসহ যে যার ইচ্ছেমাফিক চলছেন। সময়ানুসারে ডাক্তারের অন-পুস্থিতিতে রোগীরা চিকিৎসা সেবা পাচ্ছেন না। এছাড়া ঔষুধ সরবরাহে দুরাবস্থা বিরাজমান থাকায় সেবা নিতে আসা রোগীদের ঔষুধ বাহির থেকে কিনে নিতে হচ্ছে। এদিকে আবাসিক মেডিকেল অফিসারের দায়ীত্ব অবহেলায় নোংরা-আবর্জনাপূর্ন পরিবেশে টয়লেট ও ওয়ার্সরুম ব্যবহারের অনুপযোগীসহ মশা-মাছির নিরাপদ আবাসস্থলে পরিনত হয়েছে স্বাস্থ্য কমপ্লেক্স আঙ্গিনা।
সেবা নিতে আসা রোগীরা বলেন, চিকিৎসা সেবা পেতে অসুস্থ্য/রোগা শরীরে দীর্ঘ সময় লাইনে দাঁড়িয়ে থাকতে হয়। অথচ রোগী দেখা বাদ দিয়ে ডাক্তার মোবাইলে বা খোস গল্পে মত্ত্ব থাকেন। কিছু সময়ের জন্য চেম্বারে আসলেও অধিক সময় ব্যয় করেন চেম্বারের বাইরে। অধিকাংশ ডাক্তার রোগীর সমস্যার কথা না শুনে প্রেসকিপশন লিখে দেয়। আবার প্রেসকিপশন দিলেও হাসপাতালে ঔষুধ পাওয়া যায না। জটিল রোগ নিয়ে ভর্তি হতেই হাতে ধরিয়ে দেয় ঔষুধের লম্বা একটি লিষ্ট। ঔষধসহ চিকিৎসার সকল সরঞ্জাম বাহির থেকে কিনে চিকিৎসা সেবা নিতে হবে। ভর্তিকৃত রোগীদের সরবরাহকৃত নাস্তা ও ভাত মুখে দেয়ার উপযোগী নয়। রাতে প্রয়োজনে ডাক্তার-নার্স কাউকে পাওয়া যায় না। রাত হলে পুরো হাসপাতাল যেন এক ভূতের বাড়ি। প্রয়োজনে হাসপাতালের সেবক-সেবিকাদের সাথে কোনো বিষয়ে কথা বলতে গেলে তারা খারাপ আচরনের কারনে বলেও জানান রোগীরা।
দীর্ঘ সময় ধরে একই কর্মস্থলে কর্মরত থাকার সুবাদে ও স্থানীয়তার প্রভাব খাটিয়ে বিভিন্ন ঠিকাদারী হাসিল করছে একাধিক কর্মরত কর্মচারী। এ সকল অনিয়ম ও দূর্ণীতির কারনে সেবার দুয়ার বন্ধ হওয়ার উপক্রম হয়েছে। পাশাপশি বেসরকারী ক্লিনিক/হাসপাতাল ও ডায়াগনস্টিক ল্যাবের সাথে অনৈতিক সক্ষতা গড়েছেন অনেক নার্স, টেকনেশিয়ান, হিসাব রক্ষকসহ বেশ কয়েকজন। এ অবস্থায় কর্তৃপক্ষ কঠোর পদক্ষেপ না নিলে হাসপাতাল জুড়ে অনিয়ম-দূর্ণীতি স্থায়ী রুপ ধারন করবে।
এ বিষয়ে উপজেলা স্বাস্থ্য ও পরিবার পরিকল্পনা কর্মকর্তা ডা: আলতাফ হোসেন বলেন, খুব শিঘ্রই সব অনিয়ম দুর করে স্বাস্থ্য সেবায় গতি ফিরিয়ে আনা হবে। দূর্ণীতিতে লিপ্ত কর্মকর্তা-কর্মচারীদের চিহ্নিত করে প্রশাসনিক ব্যবস্থা নিতে উর্ধতন কর্তৃপক্ষকে লিখিতভাবে জানানো হবে বলে জানান তিনি।