
২০২৪ সালের ছাত্র-জনতার অভ্যুত্থানের সময় আগ্নেয়াস্ত্র নিয়ে হামলাকারী সাভারের বিরুলিয়া ইউনিয়ন পরিষদের সাবেক চেয়ারম্যান সাইদুর রহমান সুজন (৪৫) ঢাকা কেন্দ্রীয় কারাগারে (কেরানীগঞ্জ) গলায় ফাঁস দিয়েছেন। আহত অবস্থায় তাকে ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে নেওয়া হলে কর্তব্যরত চিকিৎসক তাকে মৃত ঘোষনা করেন। ১৫ জুন বেলা ১১টার দিকে ঢাকা কেন্দ্রীয় কারাগারের একটি কক্ষে নিজের গলায় গামছা পেঁচিয়ে ফাঁস দেন সুজন। ঘটনার পরপরই তাকে কারা হাসপাতালে নেওয়া হয়। এরপর তাকে ঢামেক হাসপাতালে নেওয়া হলে চিকিৎসক বেলা সাড়ে ১২টায় মৃত ঘোষণা করেন।সুজনের হাসপাতালে মৃত্যুর বিষয়টি নিশ্চিত করেন ঢামেক পুলিশ ক্যাম্পের ইনচার্জ ইন্সপেক্টর মো. ফারুক।কারাগার সূত্র জানায়, বন্দি হিসেবে সুজন সূর্যমুখী ভবনের একটি সাধারণ কক্ষেই ছিলেন। তার ব্যবহৃত গামছা দিয়ে তিনি আত্মহত্যার চেষ্টা করেন। তাৎক্ষণিকভাবে তাকে উদ্ধার করে প্রথমে কারা হাসপাতালে এবং পরবর্তীতে উন্নত চিকিৎসার জন্য ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে পাঠানো হয়। সেখানে তিনি মারা যান।কারা মহাপরিদর্শক (আইজি প্রিজন্স) ব্রিগেডিয়ার জেনারেল সৈয়দ মো. মোতাহের হোসেন বলেন, বন্দি সাইদুর রহমান সুজন ডিটেনশনে সূর্যমুখী ভবনের একটি কক্ষে ছিলেন। সকালে বন্দি সুজন নাস্তাও করেছেন। ওই কক্ষে তিনজন বন্দি, একজন সম্ভবত আদালতে গিয়েছেন, অপরজন ঘুমিয়ে ছিলেন, এই সুযোগে সুজন নিজের গামছা পেঁচিয়ে জানালার সঙ্গে গলায় ফাঁস দেন। পরে তাকে কারা হাসপাতাল থেকে ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে নেওয়া হলে মারা যান।আইজি প্রিজন্স জানান, তার বিরুদ্ধে অনেক মামলা আছে, বৈষম্যবিরোধী ছাত্র-জনতার আন্দোলনেরও মামলা আছে। তবু কারা অভ্যন্তরে আত্মহত্যার ঘটনা কীভাবে হলো, এই বিষয়ে একটি কমিটি করে তদন্ত করে দেখা হবে।সুজনের বিরুদ্ধে আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনালের মামলাসহ মোট ১৫টি মামলা রয়েছে।ছাত্র-জনতার অভ্যুত্থান চলাকালে আওয়ামী লীগ নেতা ও সাবেক ইউপি চেয়ারম্যান সাইদুর রহমান সুজনকে প্রকাশ্যে আন্দোলনকারীদের ওপর গুলি ছুড়তে দেখা যায়।৫ আগস্ট আওয়ামী লীগের ফ্যাসিবাদী শাসনের পতন ও স্বৈরাচার শেখ হাসিনা ভারতে পালিয়ে গেলে সুজনও আত্মগোপনে চলে যান। তবে জানুয়ারির তৃতীয় সপ্তাহে রাজধানীর উত্তরার একটি ফ্ল্যাটে অভিযান চালিয়ে পুলিশের গোয়েন্দা বিভাগের একটি দল তাকে গ্রেপ্তার করে। এরপর থেকে তিনি কারাবন্দি ছিলেন।