
কুষ্টিয়ার মিরপুর উপজেলার আমলা ইউনিয়নের বুরাপাড়া জিকে ক্যানেলের সরকারি গাছ কাটার ঘটনায় অভিযুক্ত জামায়াতে ইসলামীর আমলা ইউনিয়ন আমির নাসিম রেজা মুকুল,অভিযোগের বিষয় মুঠো ফোনে কল দিলে নিজেই ফোনে গাছ কাটার বিষয়টি স্বীকার করেন। সেই কল রেকর্ড ইতোমধ্যে সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে ভাইরাল হয়েছে। ঘটনার দশ দিন পার হলেও এখনো কোনো প্রকার মামলা হয়নি, যা নিয়ে এলাকায় চলছে আলোচনা সমালোচনার ঝোড়,এবং জনমনে চরম হতাশা ও ক্ষোভ বিরাজ করছে।
ভাইরাল হওয়া অডিও রেকর্ডিংয়ে নাসিম রেজা মুকুলকে বলতে শোনা যায়, “আমার কাছে অনুমতির কাগজ আছে।” অথচ তিনি তা এখন পর্যন্ত দেখাতে পারেননি এবং সম্প্রতি তিনি বলছেন, “আমি গাছ কাটিনি।” এ নিয়ে তার বক্তব্যে অসঙ্গতি দেখা দিয়েছে।
একইসঙ্গে ওসি (তদন্ত) আব্দুল আজিজ কে কল দিলে তিনি বলেন বোন কর্মকর্তা কোন কিছু বলতে পারে না। তবে আমাদের নিকট গাছ কাটার অভিযোগ পাওয়ায় একটা সাধারণ জিডি করে পুলিশ গাছ গুলো জব্দ করেন। ওসি তদন্ত আবদুল আজিজ বলেন ঈদের ছুটি শেষে বোন বিভাগ থেকে অভিযোগ দায়ের করলে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে।
বন কর্মকর্তার জুয়েল আহমেদের সঙ্গে কথোপকথনের অডিও রেকর্ডেও স্পষ্টভাবে বলা হয়েছে— “আমরা কাউকে গাছ কাটতে অনুমতি দেই নাই। এবং বর্তমানে গাছ কাটার কোন প্রকার অনুমতি নাই। অনুমতি যদি কখনো দেন তাহলে বিভাগীয় বোন কর্মকর্তা টেন্ডারের মাধ্যমে অনুমতি দিয়ে থাকেন। এবং টেন্ডারের পূর্বে পত্রিকায় বিজ্ঞাপন দিতে হয়। এবং এলাকায় মাইকিং করে তারপর গাছ কাটার প্রক্রিয়া করা হয়ে থাকে। তিনি বলেন অবৈধভাবে গাছ কাটছিল, তাই সেগুলো জব্দ করা হয়েছে।”ঘটনার দিনই বন বিভাগের অনুরোধে পুলিশ ঘটনাস্থলে গিয়ে গাছ গুলো জব্দ করে এবং থানায় সাধারণ ডায়েরি (জিডি) করা হয়। পুলিশ জানিয়েছে, বন বিভাগ যেভাবে নির্দেশ দেবে, তারা সে অনুযায়ী ব্যবস্থা নেবে।
স্থানীয়দের অভিযোগ, এত কিছু ঘটার পরও বন বিভাগ মামলা না করে নিরব ভূমিকা পালন করছে। এক বাসিন্দা ক্ষোভ প্রকাশ করে বলেন, “স্বীকারোক্তি, কল রেকর্ড, জব্দকৃত গাছ—সবকিছু থাকার পরও মামলা না হলে এটা পরিষ্কার যে, প্রভাবশালীদের রক্ষায় বন কর্মকর্তারা ইচ্ছাকৃতভাবে দায়িত্বে গাফিলতি করছেন।”
এ বিষয়ে বন বিভাগের কর্মকর্তা জুয়েল আহমেদ বলেন, “ঘটনাটি তদন্তাধীন, আমরা ঊর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষের নির্দেশনার অপেক্ষায় আছি।” তবে কবে মামলা হবে কিংবা আদৌ হবে কি না—তা নিয়ে তিনি কিছু বলেননি।
অথচ ওই বিষয়টা নিয়ে নাসিম রেজা মুকুল ও তার অনুসারীরা বিষয়টি মিথ্যা বানোয়াট বলে প্রচার চালাচ্ছেন।
এদিকে পরিবেশবাদী সংগঠন, সুশীল সমাজ ও সাধারণ জনগণ দ্রুত এ ঘটনার সুষ্ঠু তদন্ত,করে দোষীদের বিরুদ্ধে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা গ্রহণের জন্য দাবি জানিয়েছেন।
এবং বন বিভাগ কাদের সার্থে নিরব ভূমিকা পালন করছেন এ বিষয় সাধারণ জনগণ তদন্তের দাবি জানিয়েছেন।