১১:০২ অপরাহ্ন, বৃহস্পতিবার, ১৯ জুন ২০২৫, ৫ আষাঢ় ১৪৩২ বঙ্গাব্দ

বৈষম্য বিরোধী ছাত্র আন্দোলনে হামলার অভিযোগে, জেল খেটেও স্ব-পদে প্রধান শিক্ষক

????????????

ভূরুঙ্গামারীতে বৈষম্য বিরোধী ছাত্র আন্দোলনে হামলা ও নাশকতার মামলায় জেল খেটেও স্ব-পদে  বহাল তবিয়তে রয়েছেন এক প্রধান শিক্ষক। এছাড়াও আওয়ামীলীগের দলীয় প্রভাব খাটিয়ে  রেজুলেশন জালিয়াতি, স্বজনপ্রীতি  এবং ব্যাপক অনিয়ম ও দূর্নীতির অভিযোগ উঠেছে।
জানাগেছে, চর-ভূরুঙ্গামারী উচ্চ বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক সদরুল আলম বাবু ঐ ইউনিয়ন আওয়ামীলীগের সাবেক সভাপতি ও বর্তমান সহসভাপতি।  বৈষম্য বিরোধী ছাত্র আন্দোলনে হামলা ও নাশকতার অভিযোগে গত ১৮ মে ভূরুঙ্গামারী থানা পুলিশ আটক করে জেল হাজতে প্রেরণ করে। ম্যানেজিং কমিটি রহস্যজনক কারণে বিধি মোতাবেক সাময়িক বরখাস্ত না করায় ওই প্রধান শিক্ষক গত ২৮ মে জামিনে মুক্ত হয়ে স্ব-পদে বহাল থেকে অফিসিয়ালসহ সকল ধরনের কার্যক্রম পরিচালনা করে আসছেন।
শুধু তাই নয়, এ প্রধান শিক্ষকের বিরুদ্ধে ব্যাপক অনিয়মের অভিযোগ উঠেছে। এর আগে বিদ্যালয়ের ল্যাব থেকে ২টি ল্যাপটপ ও একটি মনিটর চুরি হয়। এব্যাপারে রহস্যজনক কারণে কোন আইনগত ব্যবস্থা গ্রহণ করা হয়নি। জানাগেছে, বিদ্যালয়ের নৈশ প্রহরী রাজু মিয়া প্রধান শিক্ষকের শ্যালক। তাকে মামলা থেকে বঁাচাতে থানায় চুরির মামলা করা হয়নি।
অপরদিকে এনটিআরসিএ বিদ্যালয় পরিচালনা কমিটি রেজুলেশনের মাধ্যমে কুলসুম খাতুনকে সহকারী শিক্ষক বাংলা শূন্যপদে এবং জাহিদুল ইসলামকে সহকারী শিক্ষক বাংলা শাখা পদে নিয়োগের সুপারিশ করে। কিন্তু প্রধান শিক্ষক জালিয়াতির মাধ্যমে রেজুলেশন ঘষামাজা করে কমিটির সিদ্ধান্ত পরিবর্তন করে কুলসুমকে শাখা পদে এবং জাহিদকে শূন্যপদে নিয়োগ দেখিয়ে এমপিও ভুক্তির আবেদন পাঠায়। উল্লেখ্য, সরকারী নির্দেশ উপেক্ষা করে ১৭ ও ২৪ মে বিদ্যালয় বন্ধ রাখা হয়।
এছাড়া মজিনুর রহমান নামের একজন সহকারী শিক্ষক ঐ বিদ্যালয়ের অষ্টম শ্রেণীর এক ছাত্রীর সাথে প্রেমে জড়িয়ে পড়ে। ঘটনা প্রকাশ্যে এলে ছাত্রীকে বিয়ে করেন ঐ শিক্ষক। এব্যাপারে প্রধান শিক্ষক ঐ শিক্ষকের বিরুদ্ধে কোন ব্যবস্থা না নেয়ায় অভিভাবকদের মধ্যে ক্ষোভ বিরাজ করছে। নাম প্রকাশ্যে অনিচ্ছুক এক অভিভাবক জানান, প্রধান শিক্ষক এলাকায় প্রভাবশালী হওয়ায় এবং আত্মীয় স্বজন দ্বারা কমিটি গঠন করায় কেউই তার বিরুদ্ধে মুখ খুলতে চাচ্ছেনা।
উপজেলা একাডেমিক সুপারভাইজার সাইফুর রহমান জানান, তিনি (প্রধান শিক্ষক) যেহেতু জামিনে রয়েছেন। তাই এখন তাকে সাময়িক বরখাস্ত করা সম্ভব নয়। ঐসময় কমিটির সদস্যদেরকে সাময়িক বরখাস্ত করার জন্য বলা হয়েছিলো কিন্তু অজ্ঞাত কারনে তারা করেন নাই।
চর-ভূরুঙ্গামারী উচ্চ বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক সদরুল আলম বাবু জানান,নৈশ প্রহরী রাজু আমার শ্যালক। সে হারানো জিনিস কিনে দিতে চাওয়ায় মামলা করা হয়নি। মানবিক কারণে রেজুলেশন ঘষামাজা করা হয়েছে। শিক্ষকের সাথে ছাত্রীর প্রেম ঘটিত বিষয়টি মীমাংসা হওয়ায় কোন ব্যবস্থা নেয়া হয়নি।
উপজেলা নির্বাহী অফিসার গোলাম ফেরদৌস জানান, মাধ্যমিক শিক্ষা বিভাগে অফিসার না থাকায় কোন কাজ সময় মতো করা যাচ্ছেনা। তিনি বলেন আমি নিজেই কমিটিকে দুদফা ডেকে মিটিং করার কথা জানিয়েছি কিন্তু তারা আর আসনেনি। তবে ঐ ব্যাপারে আজ ১৯ জুন (বৃহস্পতিবার) বিদ্যালয় পরিচালনা কমিটির মিটিং আহ্বান করা হয়েছে। মিটিংএ সকল বিষয়ে সিদ্ধান্ত নেয়া হবে।
ট্যাগঃ
প্রতিনিধির তথ্য

জনপ্রিয় পোস্ট

পাংশায় পাওনা টাকা না পেয়ে শ্বশুরকে গাছে বেঁধে নির্যাতন, জামাতাসহ আটক ৩

বৈষম্য বিরোধী ছাত্র আন্দোলনে হামলার অভিযোগে, জেল খেটেও স্ব-পদে প্রধান শিক্ষক

পোস্ট হয়েছেঃ ১০:৪৯:৫০ পূর্বাহ্ন, বৃহস্পতিবার, ১৯ জুন ২০২৫
ভূরুঙ্গামারীতে বৈষম্য বিরোধী ছাত্র আন্দোলনে হামলা ও নাশকতার মামলায় জেল খেটেও স্ব-পদে  বহাল তবিয়তে রয়েছেন এক প্রধান শিক্ষক। এছাড়াও আওয়ামীলীগের দলীয় প্রভাব খাটিয়ে  রেজুলেশন জালিয়াতি, স্বজনপ্রীতি  এবং ব্যাপক অনিয়ম ও দূর্নীতির অভিযোগ উঠেছে।
জানাগেছে, চর-ভূরুঙ্গামারী উচ্চ বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক সদরুল আলম বাবু ঐ ইউনিয়ন আওয়ামীলীগের সাবেক সভাপতি ও বর্তমান সহসভাপতি।  বৈষম্য বিরোধী ছাত্র আন্দোলনে হামলা ও নাশকতার অভিযোগে গত ১৮ মে ভূরুঙ্গামারী থানা পুলিশ আটক করে জেল হাজতে প্রেরণ করে। ম্যানেজিং কমিটি রহস্যজনক কারণে বিধি মোতাবেক সাময়িক বরখাস্ত না করায় ওই প্রধান শিক্ষক গত ২৮ মে জামিনে মুক্ত হয়ে স্ব-পদে বহাল থেকে অফিসিয়ালসহ সকল ধরনের কার্যক্রম পরিচালনা করে আসছেন।
শুধু তাই নয়, এ প্রধান শিক্ষকের বিরুদ্ধে ব্যাপক অনিয়মের অভিযোগ উঠেছে। এর আগে বিদ্যালয়ের ল্যাব থেকে ২টি ল্যাপটপ ও একটি মনিটর চুরি হয়। এব্যাপারে রহস্যজনক কারণে কোন আইনগত ব্যবস্থা গ্রহণ করা হয়নি। জানাগেছে, বিদ্যালয়ের নৈশ প্রহরী রাজু মিয়া প্রধান শিক্ষকের শ্যালক। তাকে মামলা থেকে বঁাচাতে থানায় চুরির মামলা করা হয়নি।
অপরদিকে এনটিআরসিএ বিদ্যালয় পরিচালনা কমিটি রেজুলেশনের মাধ্যমে কুলসুম খাতুনকে সহকারী শিক্ষক বাংলা শূন্যপদে এবং জাহিদুল ইসলামকে সহকারী শিক্ষক বাংলা শাখা পদে নিয়োগের সুপারিশ করে। কিন্তু প্রধান শিক্ষক জালিয়াতির মাধ্যমে রেজুলেশন ঘষামাজা করে কমিটির সিদ্ধান্ত পরিবর্তন করে কুলসুমকে শাখা পদে এবং জাহিদকে শূন্যপদে নিয়োগ দেখিয়ে এমপিও ভুক্তির আবেদন পাঠায়। উল্লেখ্য, সরকারী নির্দেশ উপেক্ষা করে ১৭ ও ২৪ মে বিদ্যালয় বন্ধ রাখা হয়।
এছাড়া মজিনুর রহমান নামের একজন সহকারী শিক্ষক ঐ বিদ্যালয়ের অষ্টম শ্রেণীর এক ছাত্রীর সাথে প্রেমে জড়িয়ে পড়ে। ঘটনা প্রকাশ্যে এলে ছাত্রীকে বিয়ে করেন ঐ শিক্ষক। এব্যাপারে প্রধান শিক্ষক ঐ শিক্ষকের বিরুদ্ধে কোন ব্যবস্থা না নেয়ায় অভিভাবকদের মধ্যে ক্ষোভ বিরাজ করছে। নাম প্রকাশ্যে অনিচ্ছুক এক অভিভাবক জানান, প্রধান শিক্ষক এলাকায় প্রভাবশালী হওয়ায় এবং আত্মীয় স্বজন দ্বারা কমিটি গঠন করায় কেউই তার বিরুদ্ধে মুখ খুলতে চাচ্ছেনা।
উপজেলা একাডেমিক সুপারভাইজার সাইফুর রহমান জানান, তিনি (প্রধান শিক্ষক) যেহেতু জামিনে রয়েছেন। তাই এখন তাকে সাময়িক বরখাস্ত করা সম্ভব নয়। ঐসময় কমিটির সদস্যদেরকে সাময়িক বরখাস্ত করার জন্য বলা হয়েছিলো কিন্তু অজ্ঞাত কারনে তারা করেন নাই।
চর-ভূরুঙ্গামারী উচ্চ বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক সদরুল আলম বাবু জানান,নৈশ প্রহরী রাজু আমার শ্যালক। সে হারানো জিনিস কিনে দিতে চাওয়ায় মামলা করা হয়নি। মানবিক কারণে রেজুলেশন ঘষামাজা করা হয়েছে। শিক্ষকের সাথে ছাত্রীর প্রেম ঘটিত বিষয়টি মীমাংসা হওয়ায় কোন ব্যবস্থা নেয়া হয়নি।
উপজেলা নির্বাহী অফিসার গোলাম ফেরদৌস জানান, মাধ্যমিক শিক্ষা বিভাগে অফিসার না থাকায় কোন কাজ সময় মতো করা যাচ্ছেনা। তিনি বলেন আমি নিজেই কমিটিকে দুদফা ডেকে মিটিং করার কথা জানিয়েছি কিন্তু তারা আর আসনেনি। তবে ঐ ব্যাপারে আজ ১৯ জুন (বৃহস্পতিবার) বিদ্যালয় পরিচালনা কমিটির মিটিং আহ্বান করা হয়েছে। মিটিংএ সকল বিষয়ে সিদ্ধান্ত নেয়া হবে।