
কুমিল্লার ব্রাহ্মণপাড়া উপজেলার ভূমিদস্যু খ্যাত মৃত আবদুর রহমানের ছেলে আক্তার হোসেনের অত্যাচারে অতিষ্ঠ পুরো এলাকাবাসী। জোরপূর্বক জমি দখল, ভূয়া দলিল সম্পাদন করাসহ নানা রকম অপরাধের মূল হোতা এই ভূমিদস্যু আক্তার। সরেজমিনে খোঁজ নিয়ে জানা যায়, ব্রাহ্মণপাড়া উপজেলার সদর ইউনিয়নের মৃত আবদুর রহমানের ছেলে আক্তার হোসেন। নানা অপরাধের সাথে সে যুক্ত থাকলেও আক্তার হোসেনের ভূমি দস্যুতার অত্যাচারে অতিষ্ঠ সদর ইউনিয়নের বেশ কয়েকটি গ্রামের মানুষ। এলাকাবাসীর অভিযোগ ভূমিদস্যু আক্তার হোসেন জাল দলিল ও জাল খতিয়ান করে অসহায় ও হিন্দু পরিবারের জায়গা জমি জবরদখল করা তার প্রতিনিয়ত কাজ। ভুক্তভোগীরা এসবের প্রতিবাদ করতে গেলে প্রতিনিয়ত শিকার হোন কিশোর গ্যাং কর্তৃক হামলার। খোঁজ নিয়ে জানা যায়, ভূমিদস্যু আক্তার হোসেন এর বিরুদ্ধে ভূমি দস্যুতার অভিযোগে উপজেলা সহকারী কমিশনার (ভূমি), থানা পুলিশ ও স্থানীয় চেয়ারম্যানের কাছে একাধিক অভিযোগ ও মামলা রয়েছে। এসব অভিযোগে দেখা যায় তার অপরাধের নানাচিত্র। জানা যায়, এলাকায় ফ্যাসিষ্ট আওয়ামী লীগের রাজনৈতিক প্রভাব দেখিয়ে ভূয়া দলিলের মাধ্যমে জোরপূর্বক এবং মামলার ভয় দেখিয়ে সাধারণ মানুষকে জিম্মি করে আসছে ভূমি দস্যু আক্তার হোসেন। এলাকার কয়েকটি সিন্ডিকেটের মাধ্যমে জাল দলিল ও জাল খতিয়ান তৈরী করে সুযোগ বুঝে অন্যের জমি দখল করে নেওয়া তার প্রতিনিয়ত কাজ। তার বিরুদ্ধে এসব অপরাধের একাধিক অভিযোগ হলেও স্থানীয় কিছু প্রভাবশালীর আশ্রয়ে সে আরো বেপরোয়া হয়ে উঠে। এমনকি কোন কোন ভুক্তভোগী অসহায় হলে তাদের বাড়ি ছাড়া করার জন্য প্রতিনিয়ত হামলা-মামলা চালিয়ে হয়রানী করে সে। অনেক অসহায় ভুক্তভোগী এই আক্তার হোসেন ও তার সহযোগী লোকদের সাথে পেরে উঠতে পারছেনা বলে জানায় ভুক্তভোগীরা। সরজমিনে খোঁজ নিয়ে জানা যায়, সে এলাকার চিহ্নিত একজন ভূমিদস্যু। বিগত ফ্যাসিস্ট আমলের ১৫ বছর ধরে এসব কাজ করে আসছে। তার সাথে রয়েছে আরো কিছু ভূমিদস্য। ব্রাহ্মণপাড়া সদর বাজারে জেলা পরিষদের উন্নয়নে একটি বহু তলা বিশিষ্ট মার্কেট নির্মাণ করে উপজেলা প্রশাসন। কিন্তু আক্তার হোসেন উক্ত সরকারি জায়গায় একটি মামলা দিয়ে বর্তমানে কাজ বন্ধ রেখেছে। তার হাত থেকে বাদ পড়েনি সরকারি জায়গাও। তার বিরুদ্ধে ভূমি অফিসে ও স্থানীয় চেয়ারম্যানের কাছেও রয়েছে বেশ কয়েকটি অভিযোগ। দীর্ঘভূমি গ্রামের প্রবাসী মতিউর রহমান হেলাল নামের এক ভুক্তভোগী জানান, আমার পূর্ব পুরুষের সম্পত্তি আমাদের নামে সব ঠিক আছে এমনকি আমাদের নামে বিএস খতিয়ানও ঠিক আছে। এখন সে এসে বলে এই জায়গা নাকি তার। সে জোরপূর্বক বিজ্ঞ আদালতে একটি মিথ্যা মামলা দায়ের করে এবং এ মামলায় ৫০ থেকে ৬০ পরিবারের নামে অভিযোগ করে সবাইকে পথে নামিয়েছে এই ভূমিদস্য আক্তার হোসেন। তার হাত থেকে রেহাই পায়নি তার মা ও ভাইয়েরা। তাদের বিরুদ্ধেও একাধিক মামলা করেছে এবং তাদের জায়গা বিক্রি করে দেয়। তিনি আরো বলেন, আক্তারের কারনে সদর ইউনিয়নের দীর্ঘভূমি গ্রামের ৫০/৬০ পরিবারের কাছে সে জায়গা পায় এবং নিয়মিত হয়রানি ও ভয় ভীতি দেখাচ্ছে। নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক আরো কয়েকজন জানান, আক্তার নামে এই ভূমিদস্যু পুরো ব্রাহ্মণপাড়া জায়গা সম্পত্তি পায় সে আমাদেরকে একাধিক মিথ্যা মামলা দিয়ে হয়রানি করছে। এছাড়াও তিনি বিগত আওয়ামী ফ্যাসিস্ট সরকারের আমলে দলীয় প্রভাব খাটিয়ে বহু অপকর্ম ও ভুয়া দলিলের মাধ্যমে সাধারণ মানুষকে জিম্মি করে কোটি কোটি টাকা হাতিয়ে নিয়েছে। ভুক্তভোগী নাইঘর গ্রামের সাবেক চেয়ারম্যান আলী আকবর জানান, আক্তার হোসেন থেকে জমি ক্রয় করে দীর্ঘ ১২/১৩ বছর ঘুরে লাঞ্ছনা শিকার হয়ে বর্তমানে উদ্ধার হয়েছি। আনোয়ার হোসেন আনু সর্দার জানান, তার অন্তত ৪০টি মামলা চলে কুমিল্লা আদালতে। কিছু লোক তাকে সহযোগিতা করে এই কাজ গুলো করিয়ে থাকে। আরেক ভুক্তভোগী জজু মিয়া জানান, তার মা এবং ভাই থেকে আমি ন্যায্য মূল্যে জমি ক্রয় করে আক্তার হোসেনের পিয়নশন মামলার স্বীকার হয়ে হয়রানির মধ্যে আছি। আমরা তার সঠিক বিচার চাই।