আজ সকাল সাড়ে ছয়টার দিকে গাজীপুর সিটি কর্পোরেশনের গুরুত্বপূর্ণ ও ব্যস্ততম এলাকা সিটি মেডিকেল কলেজের সামনে ঘটে যায় এক মর্মান্তিক সড়ক দুর্ঘটনা। দুর্ঘটনার মূল হোতা ছিল বহুল আলোচিত ও সমালোচিত “তাকওয়া পরিবহন” এর একটি বাস।

প্রত্যক্ষদর্শীরা জানিয়েছেন, সকাল বেলায় বৃষ্টি থাকায় রাস্তাঘাট ছিল পিচ্ছিল ও জনশূন্যের মতো। ঠিক এমন সময়, তাকওয়া পরিবহনের একটি নীল-লাল রঙের বাস হঠাৎ করে নিয়ন্ত্রণ হারিয়ে রাস্তার পাশ দিয়ে হেঁটে যাওয়া সাধারণ পথচারীদের দিকে ধেয়ে আসে। কেউ প্রাণপণে দৌড়ে নিরাপদ স্থানে আশ্রয় নিলেও কয়েকজন রক্ষা পায়নি বলে আশঙ্কা করা হচ্ছে।

ঘটনার ভিডিও ফুটেজ ইতিমধ্যেই সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে ভাইরাল হয়েছে। সেখানে দেখা যায়, বাসটি চরম বেপরোয়া গতিতে চলে আসছে এবং চালকের কোনো ধরনের নিয়ন্ত্রণ নেই। রাস্তায় চলাচলরত রিকশা, হেঁটে যাওয়া মানুষ এবং পাশে থাকা দোকানগুলো মুহূর্তের মধ্যে আতঙ্কের কেন্দ্রে পরিণত হয়।

স্থানীয় দোকানদার রফিকুল ইসলাম বলেন,
“আমার দোকানের সামনে দাঁড়িয়ে ছিলাম। হঠাৎ দেখি বাসটা যেন উড়েই আসছে! আমি সামান্য দেরি করলে হয়তো এখন আমি থাকতাম না।”

অপর এক পথচারী জানান,
“তাকওয়া পরিবহনের বাসগুলো প্রতিদিনই ভয় দেখিয়ে চালায়। ওদের কোনো নিয়ন্ত্রণ নেই। পুলিশও দেখেও দেখছে না। এখনই ব্যবস্থা না নিলে আরও বড় দুর্ঘটনা ঘটবে।”

স্থানীয়দের অভিযোগ:

গাজীপুরের বিভিন্ন রুটে চলাচলকারী ‘তাকওয়া পরিবহন’ দীর্ঘদিন ধরেই বেপরোয়া চালনার জন্য কুখ্যাত। যাত্রী ও পথচারীদের অভিযোগ, এই পরিবহনের চালকরা অধিকাংশ সময় ট্রাফিক আইন অমান্য করে এবং প্রতিযোগিতামূলকভাবে অন্য বাসকে ওভারটেক করতে গিয়ে বহু দুর্ঘটনা ঘটিয়ে থাকে।

প্রশাসনের নীরবতা:

স্থানীয় জনগণ দাবি করছেন, বারবার অভিযোগ দেওয়ার পরেও প্রশাসনের পক্ষ থেকে কোনো কার্যকর ব্যবস্থা নেওয়া হয়নি। আজকের দুর্ঘটনা প্রশাসনের অবহেলারই ফল বলে মনে করছেন তারা।

দাবি ও প্রতিকার:

দুর্ঘটনার পর স্থানীয় এলাকাবাসী সড়কে অবস্থান নিয়ে প্রতিবাদ শুরু করেছেন। তারা ‘তাকওয়া পরিবহন’-এর সকল বাসকে গাজীপুর রুট থেকে নিষিদ্ধ করার দাবি জানিয়েছেন। এছাড়া ক্ষতিগ্রস্তদের উপযুক্ত ক্ষতিপূরণ, চালকের গ্রেফতার ও দ্রুত বিচার দাবিও তুলেছেন তারা।

গাজীপুর মেট্রোপলিটন পুলিশের এক কর্মকর্তা জানান,
“আমরা ঘটনাটি তদন্ত করে দেখছি। যারা দায়ী তাদের বিরুদ্ধে কঠোর ব্যবস্থা নেওয়া হবে।”