০৯:১৫ অপরাহ্ন, শনিবার, ২৮ জুন ২০২৫, ১৪ আষাঢ় ১৪৩২ বঙ্গাব্দ

মতলব উত্তরে সরকারি বই বিক্রির দায়ে প্রধান শিক্ষক শোকজ, নিন্দার ঝড় ফেসবুকে মতলব উত্তরে প্রধান শিক্ষকের স্বীকারোক্তি, শিক্ষা কর্মকর্তার তদন্ত নির্দেশ

চাঁদপুরের মতলব উত্তর উপজেলার ইন্দুরিয়া উচ্চ বিদ্যালয়ে প্রধান শিক্ষক বশির আহমেদের নেতৃত্বে সরকারি পাঠ্যবই বিক্রির চাঞ্চল্যকর অভিযোগে স্থানীয়দের মাঝে চরম ক্ষোভের সৃষ্টি হয়েছে। গত বুধবার (২৫ জুন) রাত ৮টার দিকে বিদ্যালয়ের পুরাতন সরকারি বই এক হকারের কাছে বিক্রির সময় হাতেনাতে ধরা পড়েন তিনি ও সহকারী শিক্ষক কাশেম মিয়া।
স্থানীয়রা জানান, হকারকে ফোন করে ডেকে আনেন বশির আহমেদ ও সহকারী শিক্ষক কাশেম। হকার এসে প্রথমে ২০০-২৫০ কেজি বই মাপেন। মোট প্রায় ৩ টনের বেশি বই সেখানে বিক্রির জন্য প্রস্তুত ছিল। বিষয়টি টের পেয়ে স্থানীয়রা দ্রুত ঘটনাস্থলে গিয়ে বইসহ দুই শিক্ষককে আটকে ফেলেন।
ঘটনাস্থলে উত্তেজিত জনতার সামনে সহকারী শিক্ষক কাশেম মিয়া স্বীকার করেন, প্রধান শিক্ষক স্যারের নির্দেশেই আমি হকার ডেকেছি। উনি বলেছিলেন বইগুলো বিক্রি করে দিতে। আমি শুধু সহায়তা করেছি।
ঘটনার সত্যতা স্বীকার করে প্রধান শিক্ষক বশির আহমেদ বলেন, এটা আমাদের বড় ভুল হয়েছে। আমি আন্তরিকভাবে দুঃখিত এবং সবার কাছে ক্ষমা চাইছি।
তবে স্থানীয়দের অভিযোগ, ঘটনাটি প্রথমে ধামাচাপা দেওয়ার চেষ্টা করেছিলেন প্রধান শিক্ষক, যা পরে সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে ছড়িয়ে পড়ে এবং নিন্দার ঝড় ওঠে।
বিষয়টি জানাজানি হওয়ার পর বৃহস্পতিবার (২৭ জুন) বিকেলে ইন্দুরিয়া উচ্চ বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক বশির আহমেদ ও সংশ্লিষ্টদের শোকজ করেন উপজেলা মাধ্যমিক শিক্ষা কর্মকর্তা আশরাফুল আলম।
তিনি বলেন, সরকারি বই বিক্রি একটি গুরুতর অপরাধ। আমরা বশির আহমেদ স্যারের বিরুদ্ধে প্রাথমিকভাবে ব্যবস্থা নিয়েছি। তাকে শোকজ নোটিশ দেওয়া হয়েছে এবং আগামী ৩০ জুনের মধ্যে লিখিত ব্যাখ্যা জমা দিতে বলা হয়েছে। এরপর তদন্ত কমিটির মাধ্যমে পরবর্তী ব্যবস্থা নেওয়া হবে।
এ প্রসঙ্গে উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) মাহমুদা কুলসুম মনি বলেন, সরকারি সম্পদ বিক্রির মতো জঘন্য অনিয়ম কোনোভাবেই বরদাস্ত করা হবে না। বিষয়টি আমি নিজে গুরুত্ব দিয়ে দেখছি। দোষীদের বিরুদ্ধে কঠোর প্রশাসনিক ব্যবস্থা নেওয়া হবে।
এ ঘটনায় শিক্ষক সমাজ ও স্থানীয় অভিভাবকদের মাঝে চরম ক্ষোভ বিরাজ করছে। অনেকেই প্রশ্ন তুলেছেন, যাদের হাতে শিক্ষার্থীদের ভবিষ্যৎ গড়া, তারা যদি বই বেচাকেনায় লিপ্ত হন—তবে শিক্ষা ব্যবস্থার ভবিষ্যৎ কোথায়?
ছবির ক্যাপশন:
সরকারি বই বিক্রির সময় ধরা পড়া বইয়ের স্তূপ। ইনসেটে প্রধান শিক্ষক বশির উদ্দিন।
ট্যাগঃ
প্রতিনিধির তথ্য

জনপ্রিয় পোস্ট

লাম্পিতে বিপর্যস্ত খামারিরা

মতলব উত্তরে সরকারি বই বিক্রির দায়ে প্রধান শিক্ষক শোকজ, নিন্দার ঝড় ফেসবুকে মতলব উত্তরে প্রধান শিক্ষকের স্বীকারোক্তি, শিক্ষা কর্মকর্তার তদন্ত নির্দেশ

পোস্ট হয়েছেঃ ০৫:৫১:৩৫ পূর্বাহ্ন, শনিবার, ২৮ জুন ২০২৫
চাঁদপুরের মতলব উত্তর উপজেলার ইন্দুরিয়া উচ্চ বিদ্যালয়ে প্রধান শিক্ষক বশির আহমেদের নেতৃত্বে সরকারি পাঠ্যবই বিক্রির চাঞ্চল্যকর অভিযোগে স্থানীয়দের মাঝে চরম ক্ষোভের সৃষ্টি হয়েছে। গত বুধবার (২৫ জুন) রাত ৮টার দিকে বিদ্যালয়ের পুরাতন সরকারি বই এক হকারের কাছে বিক্রির সময় হাতেনাতে ধরা পড়েন তিনি ও সহকারী শিক্ষক কাশেম মিয়া।
স্থানীয়রা জানান, হকারকে ফোন করে ডেকে আনেন বশির আহমেদ ও সহকারী শিক্ষক কাশেম। হকার এসে প্রথমে ২০০-২৫০ কেজি বই মাপেন। মোট প্রায় ৩ টনের বেশি বই সেখানে বিক্রির জন্য প্রস্তুত ছিল। বিষয়টি টের পেয়ে স্থানীয়রা দ্রুত ঘটনাস্থলে গিয়ে বইসহ দুই শিক্ষককে আটকে ফেলেন।
ঘটনাস্থলে উত্তেজিত জনতার সামনে সহকারী শিক্ষক কাশেম মিয়া স্বীকার করেন, প্রধান শিক্ষক স্যারের নির্দেশেই আমি হকার ডেকেছি। উনি বলেছিলেন বইগুলো বিক্রি করে দিতে। আমি শুধু সহায়তা করেছি।
ঘটনার সত্যতা স্বীকার করে প্রধান শিক্ষক বশির আহমেদ বলেন, এটা আমাদের বড় ভুল হয়েছে। আমি আন্তরিকভাবে দুঃখিত এবং সবার কাছে ক্ষমা চাইছি।
তবে স্থানীয়দের অভিযোগ, ঘটনাটি প্রথমে ধামাচাপা দেওয়ার চেষ্টা করেছিলেন প্রধান শিক্ষক, যা পরে সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে ছড়িয়ে পড়ে এবং নিন্দার ঝড় ওঠে।
বিষয়টি জানাজানি হওয়ার পর বৃহস্পতিবার (২৭ জুন) বিকেলে ইন্দুরিয়া উচ্চ বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক বশির আহমেদ ও সংশ্লিষ্টদের শোকজ করেন উপজেলা মাধ্যমিক শিক্ষা কর্মকর্তা আশরাফুল আলম।
তিনি বলেন, সরকারি বই বিক্রি একটি গুরুতর অপরাধ। আমরা বশির আহমেদ স্যারের বিরুদ্ধে প্রাথমিকভাবে ব্যবস্থা নিয়েছি। তাকে শোকজ নোটিশ দেওয়া হয়েছে এবং আগামী ৩০ জুনের মধ্যে লিখিত ব্যাখ্যা জমা দিতে বলা হয়েছে। এরপর তদন্ত কমিটির মাধ্যমে পরবর্তী ব্যবস্থা নেওয়া হবে।
এ প্রসঙ্গে উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) মাহমুদা কুলসুম মনি বলেন, সরকারি সম্পদ বিক্রির মতো জঘন্য অনিয়ম কোনোভাবেই বরদাস্ত করা হবে না। বিষয়টি আমি নিজে গুরুত্ব দিয়ে দেখছি। দোষীদের বিরুদ্ধে কঠোর প্রশাসনিক ব্যবস্থা নেওয়া হবে।
এ ঘটনায় শিক্ষক সমাজ ও স্থানীয় অভিভাবকদের মাঝে চরম ক্ষোভ বিরাজ করছে। অনেকেই প্রশ্ন তুলেছেন, যাদের হাতে শিক্ষার্থীদের ভবিষ্যৎ গড়া, তারা যদি বই বেচাকেনায় লিপ্ত হন—তবে শিক্ষা ব্যবস্থার ভবিষ্যৎ কোথায়?
ছবির ক্যাপশন:
সরকারি বই বিক্রির সময় ধরা পড়া বইয়ের স্তূপ। ইনসেটে প্রধান শিক্ষক বশির উদ্দিন।