০২:৩৩ পূর্বাহ্ন, রবিবার, ২৯ জুন ২০২৫, ১৪ আষাঢ় ১৪৩২ বঙ্গাব্দ

সীতাকুণ্ডের সাত ইউনিয়নে প্রশাসনিক কা‌জে স্থবিরতা: পরিষেবা অনিশ্চিত

চট্টগ্রামের সীতাকুণ্ড উপজেলার সাতটি ইউনিয়ন পরিষদের প্রশাসনিক ক্ষমতা কে পালন করবেন—তা নিয়ে নতুন জটিলতা দেখা দিয়েছে। উচ্চ আদালতের আদেশে এসব ইউনিয়নে ইউএনও ও সহকারী কমিশনারের (ভূমি) প্রশাসনিক দায়িত্ব পালন সাময়িকভাবে স্থগিত হলেও কে তাঁদের স্থলাভিষিক্ত হবেন, সে বিষয়ে স্পষ্টতা না থাকায় পরিষেবা কার্যক্রম কার্যত স্থবির হয়ে পড়েছে।এই সাতটি ইউনিয়ন হলো: সৈয়দপুর, মুরাদপুর, বাড়বকুণ্ড, বাঁশবাড়িয়া, কুমিরা, সোনাইছড়ি ও সলিমপুর। আদালতের আদেশে এই ইউনিয়নগুলোতে উপজেলা প্রশাসনের ক্ষমতা ছয় মাসের জন্য স্থগিত করা হয়েছে। তবে বারৈয়ারঢালা ও ভাটিয়ারী ইউনিয়ন আদেশের বাইরে থাকায় সেখানকার প্রশাসনিক কার্যক্রম আগের নিয়মেই চলবে।
গত মঙ্গলবার চট্টগ্রামের জেলা প্রশাসক ফরিদা খানম স্বাক্ষরিত এক অফিস আদেশ ইউএনওর দপ্তরে পৌঁছে। ইউএনও মো. ফখরুল ইসলাম জানান, তিনি ওই দিন থেকেই ইউনিয়নের কোনো ফাইলে স্বাক্ষর করছেন না।
সেবা কার্যক্রমে স্থ‌বিরতা –
ইউনিয়ন সচিবরা জানিয়েছেন, চেয়ারম্যানদের অনুপস্থিতি ও অস্পষ্ট দায়িত্ব বণ্টনের কারণে পরিষেবা কার্যক্রম স্থ‌বির হ‌য়ে প‌ড়ে‌ছে। সৈয়দপুর ও সলিমপুরের সচিবগন জানান, ইউএনও অফিসে কোনো ফাইল স্বাক্ষর হ‌চ্ছেনা। চেয়ারম্যানের পুরোনো মোবাইল নম্বর বন্ধ পাওয়া যাচ্ছে, ফলে জনগণের সেবার অনুমোদন দেওয়া কঠিন হয়ে পড়েছে।
কুমিরা ইউনিয়নের সচিব শোভন চন্দ্র ভৌমিক ও বাড়বকুণ্ডের সচিব আজিজুর রহমান বলেন, তাঁদের চেয়ারম্যানরা ফোনে যোগাযোগ করলেও পরিষদে কবে থেকে নিয়মিত অফিস করবেন, সে বিষয়ে কিছু জানাননি।
বাড়বকুণ্ড ইউপির চেয়ারম্যান ছাদাকাত উল্ল্যাহ মিয়াজি সচিবের সঙ্গে ফোনে প্রাথমিক কথা বললেও উপস্থিত হননি। সচিবদের আশঙ্কা, পরিষেবা নিতে আসা জনগণের সঙ্গে সেবাপ্রদান নিয়ে নতুন করে ভুল–বোঝাবুঝি হতে পারে।
প্রেক্ষাপট-
গত বছরের ৫ আগস্ট সরকার পতনের পর সীতাকুণ্ড উপজেলার বেশিরভাগ ইউপি চেয়ারম্যান কার্যালয়ে অনুপস্থিত থাকায় পরিষেবা কার্যক্রম ব্যাহত হয়। ১৯ আগস্ট স্থানীয় সরকার বিভাগ একটি পরিপত্র জারি করে, যাতে ইউপির আর্থিক ও প্রশাসনিক দায়িত্ব জেলা প্রশাসকের মাধ্যমে ইউএনও ও সহকারী কমিশনারদের ওপর অর্পণ করা হয়। এর পর থেকেই এই বিকল্প ব্যবস্থায় পরিষেবা চলছিল।
তবে আদালতের সাম্প্রতিক রায়ে এই বিকল্প ব্যবস্থার ওপর স্থগিতাদেশ আসায় পরিষেবা কার্যক্রম আবার অনিশ্চয়তায় পড়েছে।
স্থানীয় প্রশাসনের একাধিক কর্মকর্তা জানিয়েছেন, পরিষেবা নিশ্চিত করতে জরুরি ভিত্তিতে দায়িত্ব বণ্টন ও চেয়ারম্যানদের সক্রিয় অংশগ্রহণ প্রয়োজন। অন্যথায় সাধারণ জনগণ দুর্ভোগে পড়বেন।

ট্যাগঃ
প্রতিনিধির তথ্য

জনপ্রিয় পোস্ট

লাম্পিতে বিপর্যস্ত খামারিরা

সীতাকুণ্ডের সাত ইউনিয়নে প্রশাসনিক কা‌জে স্থবিরতা: পরিষেবা অনিশ্চিত

পোস্ট হয়েছেঃ ১২:০৫:০৩ অপরাহ্ন, শনিবার, ২৮ জুন ২০২৫

চট্টগ্রামের সীতাকুণ্ড উপজেলার সাতটি ইউনিয়ন পরিষদের প্রশাসনিক ক্ষমতা কে পালন করবেন—তা নিয়ে নতুন জটিলতা দেখা দিয়েছে। উচ্চ আদালতের আদেশে এসব ইউনিয়নে ইউএনও ও সহকারী কমিশনারের (ভূমি) প্রশাসনিক দায়িত্ব পালন সাময়িকভাবে স্থগিত হলেও কে তাঁদের স্থলাভিষিক্ত হবেন, সে বিষয়ে স্পষ্টতা না থাকায় পরিষেবা কার্যক্রম কার্যত স্থবির হয়ে পড়েছে।এই সাতটি ইউনিয়ন হলো: সৈয়দপুর, মুরাদপুর, বাড়বকুণ্ড, বাঁশবাড়িয়া, কুমিরা, সোনাইছড়ি ও সলিমপুর। আদালতের আদেশে এই ইউনিয়নগুলোতে উপজেলা প্রশাসনের ক্ষমতা ছয় মাসের জন্য স্থগিত করা হয়েছে। তবে বারৈয়ারঢালা ও ভাটিয়ারী ইউনিয়ন আদেশের বাইরে থাকায় সেখানকার প্রশাসনিক কার্যক্রম আগের নিয়মেই চলবে।
গত মঙ্গলবার চট্টগ্রামের জেলা প্রশাসক ফরিদা খানম স্বাক্ষরিত এক অফিস আদেশ ইউএনওর দপ্তরে পৌঁছে। ইউএনও মো. ফখরুল ইসলাম জানান, তিনি ওই দিন থেকেই ইউনিয়নের কোনো ফাইলে স্বাক্ষর করছেন না।
সেবা কার্যক্রমে স্থ‌বিরতা –
ইউনিয়ন সচিবরা জানিয়েছেন, চেয়ারম্যানদের অনুপস্থিতি ও অস্পষ্ট দায়িত্ব বণ্টনের কারণে পরিষেবা কার্যক্রম স্থ‌বির হ‌য়ে প‌ড়ে‌ছে। সৈয়দপুর ও সলিমপুরের সচিবগন জানান, ইউএনও অফিসে কোনো ফাইল স্বাক্ষর হ‌চ্ছেনা। চেয়ারম্যানের পুরোনো মোবাইল নম্বর বন্ধ পাওয়া যাচ্ছে, ফলে জনগণের সেবার অনুমোদন দেওয়া কঠিন হয়ে পড়েছে।
কুমিরা ইউনিয়নের সচিব শোভন চন্দ্র ভৌমিক ও বাড়বকুণ্ডের সচিব আজিজুর রহমান বলেন, তাঁদের চেয়ারম্যানরা ফোনে যোগাযোগ করলেও পরিষদে কবে থেকে নিয়মিত অফিস করবেন, সে বিষয়ে কিছু জানাননি।
বাড়বকুণ্ড ইউপির চেয়ারম্যান ছাদাকাত উল্ল্যাহ মিয়াজি সচিবের সঙ্গে ফোনে প্রাথমিক কথা বললেও উপস্থিত হননি। সচিবদের আশঙ্কা, পরিষেবা নিতে আসা জনগণের সঙ্গে সেবাপ্রদান নিয়ে নতুন করে ভুল–বোঝাবুঝি হতে পারে।
প্রেক্ষাপট-
গত বছরের ৫ আগস্ট সরকার পতনের পর সীতাকুণ্ড উপজেলার বেশিরভাগ ইউপি চেয়ারম্যান কার্যালয়ে অনুপস্থিত থাকায় পরিষেবা কার্যক্রম ব্যাহত হয়। ১৯ আগস্ট স্থানীয় সরকার বিভাগ একটি পরিপত্র জারি করে, যাতে ইউপির আর্থিক ও প্রশাসনিক দায়িত্ব জেলা প্রশাসকের মাধ্যমে ইউএনও ও সহকারী কমিশনারদের ওপর অর্পণ করা হয়। এর পর থেকেই এই বিকল্প ব্যবস্থায় পরিষেবা চলছিল।
তবে আদালতের সাম্প্রতিক রায়ে এই বিকল্প ব্যবস্থার ওপর স্থগিতাদেশ আসায় পরিষেবা কার্যক্রম আবার অনিশ্চয়তায় পড়েছে।
স্থানীয় প্রশাসনের একাধিক কর্মকর্তা জানিয়েছেন, পরিষেবা নিশ্চিত করতে জরুরি ভিত্তিতে দায়িত্ব বণ্টন ও চেয়ারম্যানদের সক্রিয় অংশগ্রহণ প্রয়োজন। অন্যথায় সাধারণ জনগণ দুর্ভোগে পড়বেন।