
পটুয়াখালীর বাউফল উপজেলার মদনপুরা ইউনিয়নের ঐতিহ্যবাহী পালপাড়ায় বাংলা নববর্ষকে ঘিরে জমে উঠেছে মৃৎশিল্পের কার্যক্রম। বৈশাখী মেলাকে কেন্দ্র করে পণ্যের চাহিদা বেড়ে যাওয়ায় ব্যস্ত সময় পার করছেন এখানকার কারিগররা। শতাব্দী পেরোনো এই শিল্প আজ কেবল স্থানীয় পর্যায়ে সীমাবদ্ধ নয়—রাজধানীসহ দেশের বিভিন্ন প্রান্তে এমনকি দেশের বাইরেও ছড়িয়ে পড়েছে পালপাড়ার মাটির তৈরি খেলনা ও শৌখিন সামগ্রীর কদর। পালপাড়ার মৃৎশিল্পের পথিকৃৎ ছিলেন রাজেশ্বর পাল। একসময় নিজেই ঘুরে ঘুরে মেলার মাঠে বিক্রি করতেন তার হাতে গড়া শিল্পপণ্য। এখন তার প্রতিষ্ঠানের পণ্য দেশের নামী-দামি শোরুম, এমনকি ‘আড়ং’-এর মতো প্রতিষ্ঠানেও সরবরাহ করা হচ্ছে। স্থানীয় মৃৎশিল্পী নারায়ণ চন্দ্র দাস জানান, “বর্ষবরণ উপলক্ষে আমরা পান্তার থালা, বাসন, মগ, মিষ্টির পাতিলসহ বিভিন্ন শৌখিন পণ্য তৈরি করছি। আগে কেবল খেলনাই বানাতাম, এখন আধুনিক ডিজাইনে তৈরি করছি ফুলদানি, কাপ-পিরিচ, ডিনার সেট ও শোপিসও।” ঢাকা থেকে আগত ক্রেতা মাজারুল ইসলাম রুপম বলেন, “আমার গ্রামের বাড়ি এখানেই। ঢাকায় ফেরার পথে কিছু মাটির জিনিস কিনে নিচ্ছি। এখন অনেকেই এসব পণ্য ব্যবহার করে, আমিও বাসার জন্য নিচ্ছি।” পালপাড়া মৃৎশিল্প সমবায়ের সভাপতি বিশ্বেশ্বর পাল জানান, “পহেলা বৈশাখ উপলক্ষে ক্রেতা ও উদ্যোক্তাদের ব্যাপক ভিড় দেখা যাচ্ছে। সরকারি সহযোগিতা পেলে দেশের বাজার ছাড়িয়ে আন্তর্জাতিক বাজারেও আমাদের পণ্যের রপ্তানি বাড়ানো সম্ভব। তবে আর্থিক সহায়তা ও কাঁচামাটির সংকট এখন বড় প্রতিবন্ধক হয়ে দাঁড়িয়েছে।” পটুয়াখালী বিসিক শিল্পনগরীর কর্মকর্তা মোহাম্মদ আল আমিন বলেন, “বাউফলের পালপাড়ার মৃৎশিল্প নিয়ে আমাদের বিশেষ পরিকল্পনা রয়েছে। আমরা লোন কার্যক্রম চালু করেছি এবং ঢাকায় ডিজাইন সহায়তাও দিচ্ছি। শিল্প সহায়তা কেন্দ্রের মাধ্যমে এই ঐতিহ্যবাহী শিল্পকে আরও এগিয়ে নেওয়ার চেষ্টা চলছে।”