০২:০৯ অপরাহ্ন, শুক্রবার, ২৭ জুন ২০২৫, ১৩ আষাঢ় ১৪৩২ বঙ্গাব্দ

নোবিপ্রবিতে গুচ্ছভুক্ত ‘সি’ ইউনিটের ভর্তি পরীক্ষা: উৎসবমুখর পরিবেশে অভিভাবক-পরীক্ষার্থীদের পদচারণা

  • MD Tariqur Rahman Rezuan
  • পোস্ট হয়েছেঃ ০৪:৩৫:৩৯ অপরাহ্ন, শনিবার, ২৬ এপ্রিল ২০২৫
  • 378

নোয়াখালী বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয় (নোবিপ্রবি) শুক্রবার, ২৫ এপ্রিল ২০২৫—পরিণত হয় এক ব্যতিক্রমী দৃশ্যে। ২০২৪-২৫ শিক্ষাবর্ষের গুচ্ছভুক্ত ‘সি’ ইউনিটের ভর্তি পরীক্ষা উপলক্ষে দেশের নানা প্রান্ত থেকে আগত হাজারো ভর্তিচ্ছু শিক্ষার্থী ও অভিভাবকের পদচারণায় মুখর হয়ে ওঠে পুরো ক্যাম্পাস।
বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসনের সুপরিকল্পিত ব্যবস্থা ছিল চোখে পড়ার মতো। পরীক্ষার্থীদের নির্বিঘ্ন যাতায়াত নিশ্চিত করতে চালু করা হয় বিশেষ শাটল বাস সার্ভিস। প্রতি ১০ মিনিট অন্তর শহর থেকে বিশ্ববিদ্যালয়গামী বাস চলাচল করে, যা শিক্ষার্থী ও অভিভাবকদের যাত্রাকে করে তোলে আরামদায়ক ও নির্ঝঞ্ঝাট। “লোকাল বাসে যেখানে একাধিক জায়গায় থামতে হয়, নোবিপ্রবির বাস সরাসরি ক্যাম্পাসে চলে এসেছে।
অভিভাবকদের জন্য উন্মুক্ত রাখা হয় বিশ্ববিদ্যালয়ের অডিটোরিয়াম, যেখানে তাঁরা পরীক্ষার পুরোটা সময় অপেক্ষা করতে পারেন শান্ত পরিবেশে। ছোটখাটো সহায়তায় পাশে ছিলেন বিশ্ববিদ্যালয়ের বিএনসিসি ও রোভার স্কাউট সদস্যরা—যাঁদের উপস্থিতি পরীক্ষার্থীদের মাঝে আস্থা ও স্বস্তির বার্তা বয়ে আনে।
পরীক্ষা চলাকালে ঘটে একটি মানবিক ঘটনা—পরীক্ষা শুরু হওয়ার ৪৫ মিনিট পর এক পরীক্ষার্থী কেন্দ্রে প্রবেশ করে। দেরিতে এলেও হাল না ছেড়ে দৌড়ে পরীক্ষা কক্ষে পৌঁছানোর চেষ্টা করে সে।
পরীক্ষা কেন্দ্র পরিদর্শনে আসেন নোবিপ্রবির সম্মানিত উপাচার্য এবং গুচ্ছ ভর্তি পরীক্ষার টেকনিক্যাল কমিটির সভাপতি অধ্যাপক ড. মুহাম্মদ ইসমাইল। তিনি বিভিন্ন কেন্দ্র ঘুরে দেখেন, শিক্ষক-পর্যবেক্ষকদের সঙ্গে মতবিনিময় করেন এবং সার্বিক ব্যবস্থাপনায় সন্তোষ প্রকাশ করেন।
নোবিপ্রবির বিভিন্ন কেন্দ্রে সকাল ১১টা থেকে দুপুর ১২টা পর্যন্ত পরীক্ষা অনুষ্ঠিত হয়। আজ ‘সি’ ইউনিটের ১৭০৫ জন পরীক্ষার্থীর মধ্যে উপস্থিত ছিল ১৬১৭ জন, পরীক্ষায় উপস্থিতির হার ৯৪.৮৪ শতাংশ।
পরীক্ষা শেষে এক ভর্তিচ্ছু শিক্ষার্থীর অভিব্যক্তি ছিল,“আমি কুমিল্লাতেও গুচ্ছ পরীক্ষা দিয়েছি, তবে নোবিপ্রবির পরিবেশ অনেক বেশি মানসম্পন্ন লেগেছে। ভার্সিটির বাসগুলো ভালো ছিল, সিটও আরামদায়ক। আমার এডমিট কার্ডে দুর্ঘটনাবশত পানি পড়ে গেলে,একজন ভাইয়া তা ঠিক করতে সহায়তা করেছেন। এমন সহযোগিতা সত্যিই মনে থাকবে।”
তিনি আরও বলেন, “বাংলায় একটু দুর্বল, তাই পুরোটা উত্তর দিতে পারিনি। ৮০-৮৫ নম্বরের মতো হয়েছে। যেহেতু নেগেটিভ মার্কিং আছে, খুব সতর্কভাবে উত্তর দিয়েছি। একাউন্টিং নিয়ে পড়ার ইচ্ছা, প্রশ্ন খুব বেশি কঠিন মনে হয়নি।”
আরেক পরীক্ষার্থীর কণ্ঠে ছিল আবেগের ছোঁয়া—“হলের পরিবেশ ছিল খুবই ভালো। শিক্ষকরা খুবই সহানুভূতিশীল ছিলেন, আমাদের কোনো ভুল হচ্ছে কিনা সেদিকে খেয়াল রেখেছেন। পরিবেশ ও আবহাওয়া ভালো লেগেছে। আমার এক বোন এখান থেকে পড়েছেন, আমিও এখানে পড়তে চাই।”
নোবিপ্রবির বিভিন্ন কেন্দ্রে সকাল ১১টা থেকে দুপুর ১২টা পর্যন্ত পরীক্ষা অনুষ্ঠিত হয়। আজ ‘সি’ ইউনিটের ১৭০৫ জন পরীক্ষার্থীর মধ্যে উপস্থিত ছিল ১৬১৭ জন, পরীক্ষায় উপস্থিতির হার ৯৪.৮৪ শতাংশ।
পরীক্ষাটি সফলভাবে সম্পন্ন হওয়ায় শিক্ষার্থী, অভিভাবক এবং সংশ্লিষ্ট সকলের মাঝে স্বস্তি ও সন্তুষ্টির অনুভব দেখা গেছে। নোবিপ্রবি আবারও প্রমাণ করেছে—তাদের সংগঠিত ও সহযোগিতাপূর্ণ পরিবেশ উচ্চশিক্ষার দ্বারপ্রান্তে পৌঁছাতে শিক্ষার্থীদের সহায়ক।

ট্যাগঃ
প্রতিনিধির তথ্য

জনপ্রিয় পোস্ট

নড়াইলে বজ্রপাতে কৃষকের মৃত্যু আহত দুই গৃহবধূ

নোবিপ্রবিতে গুচ্ছভুক্ত ‘সি’ ইউনিটের ভর্তি পরীক্ষা: উৎসবমুখর পরিবেশে অভিভাবক-পরীক্ষার্থীদের পদচারণা

পোস্ট হয়েছেঃ ০৪:৩৫:৩৯ অপরাহ্ন, শনিবার, ২৬ এপ্রিল ২০২৫

নোয়াখালী বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয় (নোবিপ্রবি) শুক্রবার, ২৫ এপ্রিল ২০২৫—পরিণত হয় এক ব্যতিক্রমী দৃশ্যে। ২০২৪-২৫ শিক্ষাবর্ষের গুচ্ছভুক্ত ‘সি’ ইউনিটের ভর্তি পরীক্ষা উপলক্ষে দেশের নানা প্রান্ত থেকে আগত হাজারো ভর্তিচ্ছু শিক্ষার্থী ও অভিভাবকের পদচারণায় মুখর হয়ে ওঠে পুরো ক্যাম্পাস।
বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসনের সুপরিকল্পিত ব্যবস্থা ছিল চোখে পড়ার মতো। পরীক্ষার্থীদের নির্বিঘ্ন যাতায়াত নিশ্চিত করতে চালু করা হয় বিশেষ শাটল বাস সার্ভিস। প্রতি ১০ মিনিট অন্তর শহর থেকে বিশ্ববিদ্যালয়গামী বাস চলাচল করে, যা শিক্ষার্থী ও অভিভাবকদের যাত্রাকে করে তোলে আরামদায়ক ও নির্ঝঞ্ঝাট। “লোকাল বাসে যেখানে একাধিক জায়গায় থামতে হয়, নোবিপ্রবির বাস সরাসরি ক্যাম্পাসে চলে এসেছে।
অভিভাবকদের জন্য উন্মুক্ত রাখা হয় বিশ্ববিদ্যালয়ের অডিটোরিয়াম, যেখানে তাঁরা পরীক্ষার পুরোটা সময় অপেক্ষা করতে পারেন শান্ত পরিবেশে। ছোটখাটো সহায়তায় পাশে ছিলেন বিশ্ববিদ্যালয়ের বিএনসিসি ও রোভার স্কাউট সদস্যরা—যাঁদের উপস্থিতি পরীক্ষার্থীদের মাঝে আস্থা ও স্বস্তির বার্তা বয়ে আনে।
পরীক্ষা চলাকালে ঘটে একটি মানবিক ঘটনা—পরীক্ষা শুরু হওয়ার ৪৫ মিনিট পর এক পরীক্ষার্থী কেন্দ্রে প্রবেশ করে। দেরিতে এলেও হাল না ছেড়ে দৌড়ে পরীক্ষা কক্ষে পৌঁছানোর চেষ্টা করে সে।
পরীক্ষা কেন্দ্র পরিদর্শনে আসেন নোবিপ্রবির সম্মানিত উপাচার্য এবং গুচ্ছ ভর্তি পরীক্ষার টেকনিক্যাল কমিটির সভাপতি অধ্যাপক ড. মুহাম্মদ ইসমাইল। তিনি বিভিন্ন কেন্দ্র ঘুরে দেখেন, শিক্ষক-পর্যবেক্ষকদের সঙ্গে মতবিনিময় করেন এবং সার্বিক ব্যবস্থাপনায় সন্তোষ প্রকাশ করেন।
নোবিপ্রবির বিভিন্ন কেন্দ্রে সকাল ১১টা থেকে দুপুর ১২টা পর্যন্ত পরীক্ষা অনুষ্ঠিত হয়। আজ ‘সি’ ইউনিটের ১৭০৫ জন পরীক্ষার্থীর মধ্যে উপস্থিত ছিল ১৬১৭ জন, পরীক্ষায় উপস্থিতির হার ৯৪.৮৪ শতাংশ।
পরীক্ষা শেষে এক ভর্তিচ্ছু শিক্ষার্থীর অভিব্যক্তি ছিল,“আমি কুমিল্লাতেও গুচ্ছ পরীক্ষা দিয়েছি, তবে নোবিপ্রবির পরিবেশ অনেক বেশি মানসম্পন্ন লেগেছে। ভার্সিটির বাসগুলো ভালো ছিল, সিটও আরামদায়ক। আমার এডমিট কার্ডে দুর্ঘটনাবশত পানি পড়ে গেলে,একজন ভাইয়া তা ঠিক করতে সহায়তা করেছেন। এমন সহযোগিতা সত্যিই মনে থাকবে।”
তিনি আরও বলেন, “বাংলায় একটু দুর্বল, তাই পুরোটা উত্তর দিতে পারিনি। ৮০-৮৫ নম্বরের মতো হয়েছে। যেহেতু নেগেটিভ মার্কিং আছে, খুব সতর্কভাবে উত্তর দিয়েছি। একাউন্টিং নিয়ে পড়ার ইচ্ছা, প্রশ্ন খুব বেশি কঠিন মনে হয়নি।”
আরেক পরীক্ষার্থীর কণ্ঠে ছিল আবেগের ছোঁয়া—“হলের পরিবেশ ছিল খুবই ভালো। শিক্ষকরা খুবই সহানুভূতিশীল ছিলেন, আমাদের কোনো ভুল হচ্ছে কিনা সেদিকে খেয়াল রেখেছেন। পরিবেশ ও আবহাওয়া ভালো লেগেছে। আমার এক বোন এখান থেকে পড়েছেন, আমিও এখানে পড়তে চাই।”
নোবিপ্রবির বিভিন্ন কেন্দ্রে সকাল ১১টা থেকে দুপুর ১২টা পর্যন্ত পরীক্ষা অনুষ্ঠিত হয়। আজ ‘সি’ ইউনিটের ১৭০৫ জন পরীক্ষার্থীর মধ্যে উপস্থিত ছিল ১৬১৭ জন, পরীক্ষায় উপস্থিতির হার ৯৪.৮৪ শতাংশ।
পরীক্ষাটি সফলভাবে সম্পন্ন হওয়ায় শিক্ষার্থী, অভিভাবক এবং সংশ্লিষ্ট সকলের মাঝে স্বস্তি ও সন্তুষ্টির অনুভব দেখা গেছে। নোবিপ্রবি আবারও প্রমাণ করেছে—তাদের সংগঠিত ও সহযোগিতাপূর্ণ পরিবেশ উচ্চশিক্ষার দ্বারপ্রান্তে পৌঁছাতে শিক্ষার্থীদের সহায়ক।