১২:২১ পূর্বাহ্ন, রবিবার, ২৯ জুন ২০২৫, ১৪ আষাঢ় ১৪৩২ বঙ্গাব্দ

ঠাকুরগাঁওয়ে বিএনপি মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীরের জনসভা

বিএনপি মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর বলেছেন, বাংলাদেশের মানুষ একটি জনগণের প্রতিনিধিত্বশীল সরকার দেখতে চায়। বর্তমানে দেশে সংসদ সদস্য না থাকায় জনগণ সমস্যায় পড়লেও কারও কাছে যেতে পারছে না। এজন্যই আমরা বারবার বলছি, দেশে জরুরি ভিত্তিতে সংস্কার এবং একটি নিরপেক্ষ নির্বাচন প্রয়োজন। নির্বাচন অত্যন্ত জরুরি। এ কাজগুলো যদি না হয়, তাহলে জনগণের সংকট নিরসন হবে না। তিনি আরও বলেন, বর্তমান সরকার বলেছে ডিসেম্বর থেকে জুনের মধ্যে নির্বাচন দেওয়ার চেষ্টা করবে। আমরা বলি, এভাবে অস্পষ্টভাবে বললে হবে না। নির্দিষ্ট করে তারিখ ঘোষণা করতে হবে, একটি স্পষ্ট রোডম্যাপ দিতে হবে। তবেই দেশের জনগণ আশ্বস্ত হবে। সোমবার (২৭ এপ্রিল) বিকেলে ঠাকুরগাঁও সদর উপজেলার জগন্নাথপুর ইউনিয়নের শেখ বাজার এলাকায় আয়োজিত এক জনসভায় এসব কথা বলেন তিনি।বিগত সরকারের সময়কার কথা উল্লেখ করে মির্জা ফখরুল বলেন, গত ১৫ বছরে আমাদের ওপর দমন-পীড়ন চলেছে। ঠাকুরগাঁওয়ের অনেক মানুষের সঙ্গে আমি দেখা করতে পারিনি, কারণ আমাদের শান্তিতে থাকতে দেওয়া হয়নি। ২০১৪ সালের নির্বাচনের সময় এই এলাকায় প্রায় ৯ জনকে হত্যা করা হয়েছিল। বড় খোচাবাড়ীতে আমাদের এক ভাইয়ের হাত কেটে নেওয়া হয়েছিল। ২০১৮ সালের নির্বাচনে আমরা এলাকাতে ঢুকতেও পারিনি, গাড়ি পুড়িয়ে দেওয়া হয়েছিল, রাস্তা কেটে ফেলা হয়েছিল, যাতে আমরা জনগণের কাছে পৌঁছাতে না পারি। এসব নির্বাচনে আপনারাও ভোট দিতে পারেননি। তিনি বলেন, গত ১৫ বছরে জনগণের ভোটাধিকার কেড়ে নেওয়া হয়েছে। নতুন প্রজন্মের ছেলেমেয়েরা ভোটাধিকার প্রয়োগ করতে পারেনি। এই সময়ের মধ্যে দেশের অর্থনীতি ধ্বংস হয়েছে। লক্ষ লক্ষ কোটি টাকা বিদেশে পাচার করা হয়েছে, ব্যাংকগুলো লুট হয়েছে। রাস্তাঘাট নির্মাণের নামে দুর্নীতি করা হয়েছে। মির্জা ফখরুল আরও বলেন, বিএনপির পরিচয় পেলেই চাকরি হয়নি, ব্যবসা-বাণিজ্যে বাধা দেওয়া হয়েছে। চাকরির জন্য লক্ষ লক্ষ টাকা ঘুষ দিতে হয়েছে। এ অবস্থার কারণে দেশের প্রশাসনিক ও সামাজিক কাঠামো ভেঙে পড়েছে। ফলে জনগণ জীবন দিয়ে আন্দোলন করে হাসিনাকে তাড়ানোর চেষ্টা করেছে। তিনি অভিযোগ করে বলেন, আওয়ামী লীগ জোর করে ক্ষমতা দখল করে রেখেছে। ক্ষমতা টিকিয়ে রাখার জন্য সরকার যা করার দরকার সবকিছু করেছে। তিনি বলেন, সারা দেশে আমাদের সংগঠনের কাজে ব্যস্ত থাকতে হয়, তাই এলাকায় আসার সময় কম হয়। তবে ঠাকুরগাঁওয়ের জনগণ দীর্ঘদিন উন্নয়ন থেকে বঞ্চিত হয়েছে — চাকরি, কৃষকের ন্যায্য পাওনা, শ্রমিকদের অধিকার সবক্ষেত্রেই। ভবিষ্যৎ পরিকল্পনা প্রসঙ্গে বিএনপি মহাসচিব বলেন, আগামীতে যদি বিএনপি ক্ষমতায় আসে, তাহলে কর্মসংস্থান সৃষ্টিতে সর্বোচ্চ অগ্রাধিকার দেওয়া হবে। যুবসমাজের জন্য চাকরির ব্যবস্থা করা হবে। তিনি সবাইকে আহ্বান জানিয়ে বলেন, আসুন আমরা সবাই মিলে একটি মানুষের সরকার গড়ি এবং দেশের উন্নয়নে কাজ করি। এসময় জেলা বিএনপির সাধারণ সম্পাদক মির্জা ফয়সল আমীন, সহ-সভাপতি ওবায়দুল্লাহ মাসুদ, অর্থ সম্পাদক শরিফুল ইসলাম, সদর উপজেলা বিএনপির সভাপতি মো: আব্দুল হামিদ, সেচ্ছাসেবক দলের আহ্বায়ক মাসুদুল ইসলাম মুন্না, সদস্য সচিব কামরুজ্জামান কামু, যুবদলের সদস্য সচিব জাহিদ হাসান, জেলা ছাত্রদলের সভাপতি মো: কায়েসসহ বিএনপি ও অঙ্গ-সংগঠনের বিভিন্ন পর্যায়ের নেতাকর্মীরা উপস্থিত ছিলেন। পরে একই ইউনিয়নের বড় খোচাবাড়ী এলাকায় আরও একটি জনসভায় বক্তব্য দেন মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর।

ট্যাগঃ
প্রতিনিধির তথ্য

জনপ্রিয় পোস্ট

লাম্পিতে বিপর্যস্ত খামারিরা

ঠাকুরগাঁওয়ে বিএনপি মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীরের জনসভা

পোস্ট হয়েছেঃ ০৭:৫৬:২৪ পূর্বাহ্ন, মঙ্গলবার, ২৯ এপ্রিল ২০২৫

বিএনপি মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর বলেছেন, বাংলাদেশের মানুষ একটি জনগণের প্রতিনিধিত্বশীল সরকার দেখতে চায়। বর্তমানে দেশে সংসদ সদস্য না থাকায় জনগণ সমস্যায় পড়লেও কারও কাছে যেতে পারছে না। এজন্যই আমরা বারবার বলছি, দেশে জরুরি ভিত্তিতে সংস্কার এবং একটি নিরপেক্ষ নির্বাচন প্রয়োজন। নির্বাচন অত্যন্ত জরুরি। এ কাজগুলো যদি না হয়, তাহলে জনগণের সংকট নিরসন হবে না। তিনি আরও বলেন, বর্তমান সরকার বলেছে ডিসেম্বর থেকে জুনের মধ্যে নির্বাচন দেওয়ার চেষ্টা করবে। আমরা বলি, এভাবে অস্পষ্টভাবে বললে হবে না। নির্দিষ্ট করে তারিখ ঘোষণা করতে হবে, একটি স্পষ্ট রোডম্যাপ দিতে হবে। তবেই দেশের জনগণ আশ্বস্ত হবে। সোমবার (২৭ এপ্রিল) বিকেলে ঠাকুরগাঁও সদর উপজেলার জগন্নাথপুর ইউনিয়নের শেখ বাজার এলাকায় আয়োজিত এক জনসভায় এসব কথা বলেন তিনি।বিগত সরকারের সময়কার কথা উল্লেখ করে মির্জা ফখরুল বলেন, গত ১৫ বছরে আমাদের ওপর দমন-পীড়ন চলেছে। ঠাকুরগাঁওয়ের অনেক মানুষের সঙ্গে আমি দেখা করতে পারিনি, কারণ আমাদের শান্তিতে থাকতে দেওয়া হয়নি। ২০১৪ সালের নির্বাচনের সময় এই এলাকায় প্রায় ৯ জনকে হত্যা করা হয়েছিল। বড় খোচাবাড়ীতে আমাদের এক ভাইয়ের হাত কেটে নেওয়া হয়েছিল। ২০১৮ সালের নির্বাচনে আমরা এলাকাতে ঢুকতেও পারিনি, গাড়ি পুড়িয়ে দেওয়া হয়েছিল, রাস্তা কেটে ফেলা হয়েছিল, যাতে আমরা জনগণের কাছে পৌঁছাতে না পারি। এসব নির্বাচনে আপনারাও ভোট দিতে পারেননি। তিনি বলেন, গত ১৫ বছরে জনগণের ভোটাধিকার কেড়ে নেওয়া হয়েছে। নতুন প্রজন্মের ছেলেমেয়েরা ভোটাধিকার প্রয়োগ করতে পারেনি। এই সময়ের মধ্যে দেশের অর্থনীতি ধ্বংস হয়েছে। লক্ষ লক্ষ কোটি টাকা বিদেশে পাচার করা হয়েছে, ব্যাংকগুলো লুট হয়েছে। রাস্তাঘাট নির্মাণের নামে দুর্নীতি করা হয়েছে। মির্জা ফখরুল আরও বলেন, বিএনপির পরিচয় পেলেই চাকরি হয়নি, ব্যবসা-বাণিজ্যে বাধা দেওয়া হয়েছে। চাকরির জন্য লক্ষ লক্ষ টাকা ঘুষ দিতে হয়েছে। এ অবস্থার কারণে দেশের প্রশাসনিক ও সামাজিক কাঠামো ভেঙে পড়েছে। ফলে জনগণ জীবন দিয়ে আন্দোলন করে হাসিনাকে তাড়ানোর চেষ্টা করেছে। তিনি অভিযোগ করে বলেন, আওয়ামী লীগ জোর করে ক্ষমতা দখল করে রেখেছে। ক্ষমতা টিকিয়ে রাখার জন্য সরকার যা করার দরকার সবকিছু করেছে। তিনি বলেন, সারা দেশে আমাদের সংগঠনের কাজে ব্যস্ত থাকতে হয়, তাই এলাকায় আসার সময় কম হয়। তবে ঠাকুরগাঁওয়ের জনগণ দীর্ঘদিন উন্নয়ন থেকে বঞ্চিত হয়েছে — চাকরি, কৃষকের ন্যায্য পাওনা, শ্রমিকদের অধিকার সবক্ষেত্রেই। ভবিষ্যৎ পরিকল্পনা প্রসঙ্গে বিএনপি মহাসচিব বলেন, আগামীতে যদি বিএনপি ক্ষমতায় আসে, তাহলে কর্মসংস্থান সৃষ্টিতে সর্বোচ্চ অগ্রাধিকার দেওয়া হবে। যুবসমাজের জন্য চাকরির ব্যবস্থা করা হবে। তিনি সবাইকে আহ্বান জানিয়ে বলেন, আসুন আমরা সবাই মিলে একটি মানুষের সরকার গড়ি এবং দেশের উন্নয়নে কাজ করি। এসময় জেলা বিএনপির সাধারণ সম্পাদক মির্জা ফয়সল আমীন, সহ-সভাপতি ওবায়দুল্লাহ মাসুদ, অর্থ সম্পাদক শরিফুল ইসলাম, সদর উপজেলা বিএনপির সভাপতি মো: আব্দুল হামিদ, সেচ্ছাসেবক দলের আহ্বায়ক মাসুদুল ইসলাম মুন্না, সদস্য সচিব কামরুজ্জামান কামু, যুবদলের সদস্য সচিব জাহিদ হাসান, জেলা ছাত্রদলের সভাপতি মো: কায়েসসহ বিএনপি ও অঙ্গ-সংগঠনের বিভিন্ন পর্যায়ের নেতাকর্মীরা উপস্থিত ছিলেন। পরে একই ইউনিয়নের বড় খোচাবাড়ী এলাকায় আরও একটি জনসভায় বক্তব্য দেন মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর।