১২:২৯ পূর্বাহ্ন, সোমবার, ৩০ জুন ২০২৫, ১৫ আষাঢ় ১৪৩২ বঙ্গাব্দ

নোবিপ্রবিতে মশার উপদ্রব: শিক্ষার্থীদের দুর্ভোগ চরমে, দ্রুত ব্যবস্থা দাবি

  • MD Tariqur Rahman Rezuan
  • পোস্ট হয়েছেঃ ০৫:৪২:০৮ অপরাহ্ন, শুক্রবার, ২ মে ২০২৫
  • 101
নোয়াখালী বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়ের (নোবিপ্রবি) আবাসিক হলগুলোর শিক্ষার্থীরা চরম মশার উপদ্রবে ভোগান্তির শিকার হচ্ছেন। শিক্ষার্থীরা জানান, সন্ধ্যা নামলেই রিডিং রুম, নিচতলার রুম ও অন্যান্য সাধারণ স্থানগুলো কার্যত মশার আস্তানায় পরিণত হয়। এতে শুধু পড়াশোনায় ব্যাঘাত ঘটছে না, বরং বাড়ছে ম্যালেরিয়া, ডেঙ্গুসহ বিভিন্ন মশাবাহিত রোগের ঝুঁকি।
সরেজমিনে ঘুরে দেখা গেছে, হলগুলোর আশপাশে অপরিচ্ছন্ন নর্দমা, ব্লকের মাঝে জমে থাকা পানি, ঝোপঝাড় ও অপরিষ্কৃত ড্রেন মশা বিস্তারের অন্যতম কারণ। দীর্ঘদিন ধরে এসব জায়গা পরিষ্কার না করায় পরিস্থিতি আরও ভয়াবহ হয়ে উঠেছে।
নবাব ফয়জুন্নেসা চৌধুরানী হলের শিক্ষার্থী ফাহিমা ইয়াসমিন বলেন, “মশা ছাড়াও লালশুঁয়োসহ নানা পোকামাকড়ের উপদ্রবে রুমে ঘুমানো বা পড়াশোনা করাও দুঃসাধ্য হয়ে উঠেছে।”
বীর মুক্তিযোদ্ধা আব্দুল মালেক উকিল হলের শিক্ষার্থী মুজতবা ফয়সাল নাঈম জানান, “ড্রেনগুলোতে মশার লার্ভা পরিপূর্ণ। বারবার অভিযোগ দিয়েও কোন কার্যকর ব্যবস্থা নেওয়া হয়নি। বর্ষা মৌসুমে এই সংকট আরও বেড়ে যাওয়ার আশঙ্কা রয়েছে।”
বিবি খাদিজা হলের শিক্ষার্থী সাবেকুন নাহার পুষ্পিতা বলেন, “দিনেও মশার উপদ্রব থাকে। রিডিং রুম, ডাইনিং, টয়লেট, এমনকি বারান্দাতেও বসে থাকা যায় না। বাধ্য হয়ে দিনে মশারির ভেতর বসে পড়তে হয়।”
ভাষা শহিদ আব্দুস সালাম হলের শিক্ষার্থী ফারুক মোহাম্মদ ইসহাক বলেন, “ব্লকের মাঝে দীর্ঘদিন ধরে পানি জমে আছে, আশপাশে ঘন ঝোপঝাড়ও রয়েছে। এতে পড়াশোনা ব্যাহত হচ্ছে, আর স্বাস্থ্যঝুঁকি বাড়ছে। দ্রুত পরিষ্কার-পরিচ্ছন্নতা কার্যক্রম চালু করা জরুরি।”
জুলাই শহিদ স্মৃতি ছাত্রী হলের শিক্ষার্থী সুবাইয়া আহমেদ বলেন, “রিডিং রুম, নামাজ রুম এমনকি নিজ কক্ষেও মশা তাণ্ডব চালায়। এক্সামের সময় রাতে পড়তে পারি না। অনেকে চর্মরোগে আক্রান্ত হচ্ছেন। ঝোপঝাড় দ্রুত কাটা ও ছত্রাকনাশক প্রয়োগ দরকার।”
এই বিষয়ে ভাষা শহিদ আব্দুস সালাম হলের প্রভোস্ট এবং বিশ্ববিদ্যালয়ের কোষাধ্যক্ষ অধ্যাপক ড. মোহাম্মদ হানিফ বলেন, “প্রত্যেকটি হলে ফগার মেশিন সরবরাহের জন্য নির্দেশ দেওয়া হয়েছে। দ্রুতই বাস্তবায়ন করা হবে।”
বিবি খাদিজা হলের প্রভোস্ট অধ্যাপক ড. আব্দুল কাইয়ুম মাসুদ জানান, “আমার হলে নিয়মিত পরিচ্ছন্নতা কার্যক্রম চলছে। ফগার মেশিনের উদ্যোগ নেওয়া হয়েছে এবং পৌরসভার সাথেও সহযোগিতার চেষ্টা করছি।”
শিক্ষার্থীরা বলছেন, পরিস্থিতি আর অবহেলার পর্যায়ে নেই। দ্রুত কার্যকর ব্যবস্থা না নিলে আগামী বর্ষায় পরিস্থিতি ভয়াবহ আকার ধারণ করতে পারে বলে আশঙ্কা করছেন তারা।
ট্যাগঃ
প্রতিনিধির তথ্য

জনপ্রিয় পোস্ট

বাউফলে খেলাফত,মজলিসের২০২৫-এ পটুয়াখালী-২ (বাউফল) আসনে প্রার্থী ঘোষণা

নোবিপ্রবিতে মশার উপদ্রব: শিক্ষার্থীদের দুর্ভোগ চরমে, দ্রুত ব্যবস্থা দাবি

পোস্ট হয়েছেঃ ০৫:৪২:০৮ অপরাহ্ন, শুক্রবার, ২ মে ২০২৫
নোয়াখালী বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়ের (নোবিপ্রবি) আবাসিক হলগুলোর শিক্ষার্থীরা চরম মশার উপদ্রবে ভোগান্তির শিকার হচ্ছেন। শিক্ষার্থীরা জানান, সন্ধ্যা নামলেই রিডিং রুম, নিচতলার রুম ও অন্যান্য সাধারণ স্থানগুলো কার্যত মশার আস্তানায় পরিণত হয়। এতে শুধু পড়াশোনায় ব্যাঘাত ঘটছে না, বরং বাড়ছে ম্যালেরিয়া, ডেঙ্গুসহ বিভিন্ন মশাবাহিত রোগের ঝুঁকি।
সরেজমিনে ঘুরে দেখা গেছে, হলগুলোর আশপাশে অপরিচ্ছন্ন নর্দমা, ব্লকের মাঝে জমে থাকা পানি, ঝোপঝাড় ও অপরিষ্কৃত ড্রেন মশা বিস্তারের অন্যতম কারণ। দীর্ঘদিন ধরে এসব জায়গা পরিষ্কার না করায় পরিস্থিতি আরও ভয়াবহ হয়ে উঠেছে।
নবাব ফয়জুন্নেসা চৌধুরানী হলের শিক্ষার্থী ফাহিমা ইয়াসমিন বলেন, “মশা ছাড়াও লালশুঁয়োসহ নানা পোকামাকড়ের উপদ্রবে রুমে ঘুমানো বা পড়াশোনা করাও দুঃসাধ্য হয়ে উঠেছে।”
বীর মুক্তিযোদ্ধা আব্দুল মালেক উকিল হলের শিক্ষার্থী মুজতবা ফয়সাল নাঈম জানান, “ড্রেনগুলোতে মশার লার্ভা পরিপূর্ণ। বারবার অভিযোগ দিয়েও কোন কার্যকর ব্যবস্থা নেওয়া হয়নি। বর্ষা মৌসুমে এই সংকট আরও বেড়ে যাওয়ার আশঙ্কা রয়েছে।”
বিবি খাদিজা হলের শিক্ষার্থী সাবেকুন নাহার পুষ্পিতা বলেন, “দিনেও মশার উপদ্রব থাকে। রিডিং রুম, ডাইনিং, টয়লেট, এমনকি বারান্দাতেও বসে থাকা যায় না। বাধ্য হয়ে দিনে মশারির ভেতর বসে পড়তে হয়।”
ভাষা শহিদ আব্দুস সালাম হলের শিক্ষার্থী ফারুক মোহাম্মদ ইসহাক বলেন, “ব্লকের মাঝে দীর্ঘদিন ধরে পানি জমে আছে, আশপাশে ঘন ঝোপঝাড়ও রয়েছে। এতে পড়াশোনা ব্যাহত হচ্ছে, আর স্বাস্থ্যঝুঁকি বাড়ছে। দ্রুত পরিষ্কার-পরিচ্ছন্নতা কার্যক্রম চালু করা জরুরি।”
জুলাই শহিদ স্মৃতি ছাত্রী হলের শিক্ষার্থী সুবাইয়া আহমেদ বলেন, “রিডিং রুম, নামাজ রুম এমনকি নিজ কক্ষেও মশা তাণ্ডব চালায়। এক্সামের সময় রাতে পড়তে পারি না। অনেকে চর্মরোগে আক্রান্ত হচ্ছেন। ঝোপঝাড় দ্রুত কাটা ও ছত্রাকনাশক প্রয়োগ দরকার।”
এই বিষয়ে ভাষা শহিদ আব্দুস সালাম হলের প্রভোস্ট এবং বিশ্ববিদ্যালয়ের কোষাধ্যক্ষ অধ্যাপক ড. মোহাম্মদ হানিফ বলেন, “প্রত্যেকটি হলে ফগার মেশিন সরবরাহের জন্য নির্দেশ দেওয়া হয়েছে। দ্রুতই বাস্তবায়ন করা হবে।”
বিবি খাদিজা হলের প্রভোস্ট অধ্যাপক ড. আব্দুল কাইয়ুম মাসুদ জানান, “আমার হলে নিয়মিত পরিচ্ছন্নতা কার্যক্রম চলছে। ফগার মেশিনের উদ্যোগ নেওয়া হয়েছে এবং পৌরসভার সাথেও সহযোগিতার চেষ্টা করছি।”
শিক্ষার্থীরা বলছেন, পরিস্থিতি আর অবহেলার পর্যায়ে নেই। দ্রুত কার্যকর ব্যবস্থা না নিলে আগামী বর্ষায় পরিস্থিতি ভয়াবহ আকার ধারণ করতে পারে বলে আশঙ্কা করছেন তারা।