
নরসিংদীর রায়পুরা উপজেলার মির্জারচর গ্রামে কৃষিজমির ওপর দিয়ে সরকারি রাস্তা নির্মাণের অভিযোগে ক্ষোভ ও আতঙ্কের সৃষ্টি হয়েছে। স্থানীয় কৃষকরা জানান, এই রাস্তা নির্মাণের ফলে তাদের মূল্যবান আবাদি জমি ক্ষতিগ্রস্ত হচ্ছে, যা তাদের জীবিকার জন্য বড় একটি হুমকি। গত ২৯ এপ্রিল, ক্ষতিগ্রস্ত কৃষকরা উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) বরাবর লিখিত অভিযোগ দাখিল করেন। অভিযোগে তারা উল্লেখ করেন, দীর্ঘ বছর ধরে তারা এসব জমি চাষাবাদ করে আসছেন এবং জমির মালিকদের কোনো প্রকার সম্মতি বা পূর্ব নোটিস ছাড়াই হঠাৎ রাস্তা নির্মাণের কাজ শুরু হয়েছে। এই আচরণে তারা আতঙ্কিত হয়ে পড়েছেন এবং তাদের জীবনযাত্রা চরমভাবে বিপন্ন হয়ে পড়েছে। এরপর ৩০ এপ্রিল, বিষয়টি জেলা প্রশাসকের কাছেও উত্থাপিত হয়। কৃষকদের অভিযোগ, “আমরা এই জমি দিয়ে আমাদের পরিবারকে পরিচালনা করি। হঠাৎ এই ধরনের সিদ্ধান্ত আমাদের জন্য একেবারেই অপ্রত্যাশিত এবং অগ্রহণযোগ্য।” তারা অবিলম্বে রাস্তা নির্মাণের কাজ স্থগিত করার দাবি জানিয়েছেন। এছাড়া, জমির মালিকদের সঙ্গে আলোচনা এবং তদন্তের মাধ্যমে সিদ্ধান্ত নেওয়ার পাশাপাশি ক্ষতিগ্রস্তদের জন্য ন্যায্য ক্ষতিপূরণ নিশ্চিত করারও আহ্বান জানিয়েছেন।
এদিকে, স্থানীয় সূত্রে জানা গেছে, রাস্তা নির্মাণের কাজটি একাধিক কৃষিজমির মধ্যে দিয়ে পরিকল্পিত হলেও, জমির মালিকদের কোনো মতামত নেওয়া হয়নি। এ কারণে এলাকায় চরম অসন্তোষ দেখা দিয়েছে। কৃষকরা বলেছেন, “সরকার কৃষি উন্নয়নকে গুরুত্ব দিলেও, মাঠ পর্যায়ে আমাদের জমি ধ্বংস করে রাস্তা বানালে আমাদের কী হবে?”মির্জারচর ইউনিয়ন চেয়ারম্যান, ইউএনওকে আশ্বস্ত করেছেন যে, জমির মালিকরা রাস্তা নির্মাণের জন্য তাদের জমি ছেড়ে দিবেন। তবে, মিজানুর রহমানের ৪টি, মুকবুল হোসাইনের ২টি এবং জাকির হোসেনের ৫টি—মোট ১১টি কৃষিজমির ওপর রাস্তা নির্মাণের বিরোধিতা করেছেন। রায়পুরা উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) মো. মাসুদ রানা জানিয়েছেন, রাস্তা নির্মাণের কাজটি মূলত একটি ছোট মাটির রাস্তা যা সম্প্রসারিত করা হচ্ছে। তবে, এটি যদি হাইওয়ে প্রকল্প হয়, তাহলে জমি অধিগ্রহণের প্রক্রিয়া অনুসরণ করা হবে। তিনি ক্ষতিগ্রস্ত কৃষকদের জন্য অন্য একটি প্রকল্পের মাধ্যমে সহায়তা প্রদান করার আশ্বাস দিয়েছেন।
এই পরিস্থিতিতে, কৃষকরা সরকারের কাছে একটাই আবেদন জানিয়েছেন—তাদের জমির ক্ষতি থেকে রক্ষা করতে যেন দ্রুত ব্যবস্থা নেওয়া হয়, যাতে তাদের জীবিকা বিপন্ন না হয়। এ ঘটনায় স্থানীয় প্রশাসন, কৃষক এবং অন্যান্য সংশ্লিষ্টরা একত্রিত হয়ে একটি সুষ্ঠু সমাধানে পৌঁছানোর জন্য আশাবাদী, যাতে সকল পক্ষের স্বার্থ সংরক্ষিত থাকে।