০৮:৫৬ অপরাহ্ন, বৃহস্পতিবার, ১২ জুন ২০২৫, ২৯ জ্যৈষ্ঠ ১৪৩২ বঙ্গাব্দ

মুরাদপুর বাংলাবাজারে জমজমাট গরুর হাট, ক্রেতা-বিক্রেতার উপস্থিতি লক্ষনীয়

চট্টগ্রামের সীতাকুণ্ড উপজেলার মুরাদপুর বাংলাবাজারে স্বাধীনতার পর দ্বিতীয়বারের মতো গরুর হাট বসেছে। এবার এই হাটের ডাক নিয়েছে স্থানীয় সরোয়ারগং। সোমবার (২ জুন) সরেজমিনে বাজার পরিদর্শনে গিয়ে দেখা যায়, হাটজুড়ে গরু-ছাগলের সমাগম এবং ক্রেতা-বিক্রেতাদের ব্যাপক উপস্থিতি।

সরেজমিনে গিয়ে দেখা গেছে, বাজারজুড়ে বিভিন্ন প্রান্ত থেকে আগত গরু ও ছাগলের বেপারিরা দর-দামে ব্যস্ত সময় পার করছেন। বিশেষভাবে উল্লেখ্য যে, বাজারে নিয়ে আসা সকল গরুই দেশিয় প্রজাতির ব্যীক্ত পর্যায়ে লালন-পালন করা গরু। গরুর পাশাপাশি মাঝারি ও ছোট আকারের ছাগলও রয়েছে উল্লেখযোগ্য হারে। ব্যক্তি পর্যায়ের বড় একটি গরু বাজারে উঠেছে, যার মূল্য চাওয়া হয়েছে ২ লক্ষ ২০ হাজার টাকা; এক ক্রেতা দর দিয়েছেন ১ লক্ষ ৮০ হাজার টাকা।

স্থানীয় এক বাসিন্দা বলেন,
“ছোটবেলায় বাবার হাত ধরে একবার এই বাজারে গরুর হাট দেখেছিলাম। এরপর এত বছর পর আবার এখানে হাট বসেছে দেখে খুবই ভালো লাগছে। গরু-ছাগলের সংখ্যাও অনেক বেশি, দামও মোটামুটি সহনীয় বলে মনে হচ্ছে।”

হাটে আসা এক গরুর বেপারী বলেন,
“আমি ৫টি গরু নিয়ে এ হাটে এসেছি, এর মধ্যে ১টি গরু বিক্রি করেছি। এই বাজারে আশপাশের ইউনিয়নের অনেকেই গরু নিয়ে এসেছেন বিক্রির উদ্দেশ্যে। বিক্রিও মোটামুটি ভালো হচ্ছে। জায়গাটা খোলামেলা হওয়ায় অন্যান্য ব্যাপারিরাও এখানে আসতে আগ্রহ প্রকাশ করছেন।”

আজকের হাটে সর্বোচ্চ দামে গরু কেনা এক ক্রেতা বলেন,
“আমি গরুটি কিনেছি ১ লক্ষ ৫৩ হাজার টাকায়, কিন্তু হাসিল পরিশোধ করেছি মাত্র ১ হাজার টাকা। আমি খুবই খুশি। অন্য হাটে এই গরু কিনতে গেলে ইজারাদারকে হাসিল দিতে হতো প্রায় ৮ হাজার টাকা, কিন্তু এখানে দিতে হয়েছে মাত্র ১ হাজার। এতে আমি অন্তত ৭ হাজার টাকা লাভবান হয়েছি।”

হাটের নিরাপত্তা ব্যবস্থাও ছিল চোখে পড়ার মতো। স্থানীয় রাজনৈতিক নেতৃবৃন্দ স্বেচ্ছাসেবক নিয়োগ করেছেন। গরুর হাটের শৃঙ্খলা রক্ষায় ইজারাদার প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নিয়েছেন বলে জানিয়েছেন বাজার কর্তৃপক্ষ। ক্রেতাদের কেউ এসেছেন পশু কেনার উদ্দেশ্যে, কেউবা এসেছেন দাম যাচাই করতে। আবার অনেকেই পরিবারের সদস্যদের নিয়ে শুধুই হাটের চিত্র দেখতে এসেছেন।

গরুর হাটের ইজারাদার সরোয়ার জানান,
“স্বাধীনতার পর এই দ্বিতীয়বার আমরা এই বাজারে গরুর হাটের ইজারা নিয়েছি। আজকের হাটে প্রায় ৩০০ ছোট-বড় গরু ও ১০০ ছাগল-ভেড়া বিক্রির জন্য নিয়ে এসেছেন। আমরা ক্রেতাদের স্বার্থের কথা চিন্তা করে গরু প্রতি হাসিল নির্ধারণ করেছি ১হাজার টাকা এবং ছাগল ও ভেড়া প্রতি ২০০ টাকা নির্ধািরণ করেছি। আমাদের চেষ্টা থাকবে ক্রেতা ও বিক্রেতা যেন স্বাচ্ছন্দে বাজারে এসে বেচা-কেনা করতে পারেন। বাজার সু-শৃঙ্খল ও সবার জন্য সুবিধাজনক রাখতে।”

স্থানীয়রা মনে করছেন, বাজারটি যদি নিয়মিত হয়, তাহলে তা মুরাদপুর এবং আশপাশের এলাকার মানুষের জন্য অর্থনৈতিকভাবে লাভজনক হয়ে উঠবে।

ট্যাগঃ
প্রতিনিধির তথ্য

জনপ্রিয় পোস্ট

জুড়ীতে নিসচা’র সড়ক সচেতনতামূলক ক্যাম্পেইন অনুষ্ঠিত

মুরাদপুর বাংলাবাজারে জমজমাট গরুর হাট, ক্রেতা-বিক্রেতার উপস্থিতি লক্ষনীয়

পোস্ট হয়েছেঃ ০৬:২৮:৪৬ পূর্বাহ্ন, মঙ্গলবার, ৩ জুন ২০২৫

চট্টগ্রামের সীতাকুণ্ড উপজেলার মুরাদপুর বাংলাবাজারে স্বাধীনতার পর দ্বিতীয়বারের মতো গরুর হাট বসেছে। এবার এই হাটের ডাক নিয়েছে স্থানীয় সরোয়ারগং। সোমবার (২ জুন) সরেজমিনে বাজার পরিদর্শনে গিয়ে দেখা যায়, হাটজুড়ে গরু-ছাগলের সমাগম এবং ক্রেতা-বিক্রেতাদের ব্যাপক উপস্থিতি।

সরেজমিনে গিয়ে দেখা গেছে, বাজারজুড়ে বিভিন্ন প্রান্ত থেকে আগত গরু ও ছাগলের বেপারিরা দর-দামে ব্যস্ত সময় পার করছেন। বিশেষভাবে উল্লেখ্য যে, বাজারে নিয়ে আসা সকল গরুই দেশিয় প্রজাতির ব্যীক্ত পর্যায়ে লালন-পালন করা গরু। গরুর পাশাপাশি মাঝারি ও ছোট আকারের ছাগলও রয়েছে উল্লেখযোগ্য হারে। ব্যক্তি পর্যায়ের বড় একটি গরু বাজারে উঠেছে, যার মূল্য চাওয়া হয়েছে ২ লক্ষ ২০ হাজার টাকা; এক ক্রেতা দর দিয়েছেন ১ লক্ষ ৮০ হাজার টাকা।

স্থানীয় এক বাসিন্দা বলেন,
“ছোটবেলায় বাবার হাত ধরে একবার এই বাজারে গরুর হাট দেখেছিলাম। এরপর এত বছর পর আবার এখানে হাট বসেছে দেখে খুবই ভালো লাগছে। গরু-ছাগলের সংখ্যাও অনেক বেশি, দামও মোটামুটি সহনীয় বলে মনে হচ্ছে।”

হাটে আসা এক গরুর বেপারী বলেন,
“আমি ৫টি গরু নিয়ে এ হাটে এসেছি, এর মধ্যে ১টি গরু বিক্রি করেছি। এই বাজারে আশপাশের ইউনিয়নের অনেকেই গরু নিয়ে এসেছেন বিক্রির উদ্দেশ্যে। বিক্রিও মোটামুটি ভালো হচ্ছে। জায়গাটা খোলামেলা হওয়ায় অন্যান্য ব্যাপারিরাও এখানে আসতে আগ্রহ প্রকাশ করছেন।”

আজকের হাটে সর্বোচ্চ দামে গরু কেনা এক ক্রেতা বলেন,
“আমি গরুটি কিনেছি ১ লক্ষ ৫৩ হাজার টাকায়, কিন্তু হাসিল পরিশোধ করেছি মাত্র ১ হাজার টাকা। আমি খুবই খুশি। অন্য হাটে এই গরু কিনতে গেলে ইজারাদারকে হাসিল দিতে হতো প্রায় ৮ হাজার টাকা, কিন্তু এখানে দিতে হয়েছে মাত্র ১ হাজার। এতে আমি অন্তত ৭ হাজার টাকা লাভবান হয়েছি।”

হাটের নিরাপত্তা ব্যবস্থাও ছিল চোখে পড়ার মতো। স্থানীয় রাজনৈতিক নেতৃবৃন্দ স্বেচ্ছাসেবক নিয়োগ করেছেন। গরুর হাটের শৃঙ্খলা রক্ষায় ইজারাদার প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নিয়েছেন বলে জানিয়েছেন বাজার কর্তৃপক্ষ। ক্রেতাদের কেউ এসেছেন পশু কেনার উদ্দেশ্যে, কেউবা এসেছেন দাম যাচাই করতে। আবার অনেকেই পরিবারের সদস্যদের নিয়ে শুধুই হাটের চিত্র দেখতে এসেছেন।

গরুর হাটের ইজারাদার সরোয়ার জানান,
“স্বাধীনতার পর এই দ্বিতীয়বার আমরা এই বাজারে গরুর হাটের ইজারা নিয়েছি। আজকের হাটে প্রায় ৩০০ ছোট-বড় গরু ও ১০০ ছাগল-ভেড়া বিক্রির জন্য নিয়ে এসেছেন। আমরা ক্রেতাদের স্বার্থের কথা চিন্তা করে গরু প্রতি হাসিল নির্ধারণ করেছি ১হাজার টাকা এবং ছাগল ও ভেড়া প্রতি ২০০ টাকা নির্ধািরণ করেছি। আমাদের চেষ্টা থাকবে ক্রেতা ও বিক্রেতা যেন স্বাচ্ছন্দে বাজারে এসে বেচা-কেনা করতে পারেন। বাজার সু-শৃঙ্খল ও সবার জন্য সুবিধাজনক রাখতে।”

স্থানীয়রা মনে করছেন, বাজারটি যদি নিয়মিত হয়, তাহলে তা মুরাদপুর এবং আশপাশের এলাকার মানুষের জন্য অর্থনৈতিকভাবে লাভজনক হয়ে উঠবে।